শৈলকুপার ভাটবাড়িয়া গ্রাম এখনো পুরুষ শূন্য

0
280

রাব্বুল ইসলাম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় আওয়ামীলীগ নেতা ও ভারপ্রাপ্ত সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজকে হত্যার ব্যর্থ চেষ্টার পর থেকেই ভাটবাড়িয়া গ্রাম এখনো পুরুষ শূন্য রয়েছে। সুনশান নিরবতার পাশাপাশি গ্রামটিতে নেমে এসেছে চুরি ডাকাতির অজানা আতঙ্ক। ইতমধ্যে আসামীরা মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন মাধ্যমে বাদীর আত্মীয় পরিজনদের নানা ভয়ভীতি আর হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কাতলাগাড়ী বিচ্ছু বাহিনীর এ হামলায় ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে আজও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আব্দুল আজিজ। অসহায় এ পরিবার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আসামীরা জামিনে এসেই তাদের উপর চরাও হওয়ার আগাম বার্তা পাঠাচ্ছে, সেই সাথে পাল্টা হয়রানি মূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে নাজেহাল করবে বলে অব্যাহত হুমকি দিচ্ছে। মামলার বাদী জানান, বেপরোয়া বিচ্ছু বাহিনী মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে নইলে তাকেও পঙ্গু করা হতে পারে বলে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
দীর্ঘদিন যাবত সন্ত্রাস অধ্যুষিত সারুটিয়া ইউনিয়নে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় একদল সন্ত্রাসী গুন্ডাবাহিনী যা এলাকায় বিচ্চু বাহিনী হিসেবে দারুনভাবে পরিচিতি পেয়েছে। এসব উঠতি বয়সী যুবকদের মধ্যে কেউ কেউ মদ-মাদকে আসক্ত আবার কেউ কেউ জড়িয়ে পড়েছে চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কার্যকলাপে। দুইগ্রুপের মধ্যে পক্ষপাত সৃষ্টি করে মোটা অংকের টাকায় সালিশ রফাসহ কারণ অকারনে বাজারে সম্মানী মানুষের মর্যাদাহানী, মারপিট ভয়ভীতি দেখানো ছাড়া এদের কোন কাজ নেই। দল বেঁধে মাদক কারবারিতে নিমগ্ন থাকা এ বাহিনীর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বহু মানুষ। এদের ভয়ে প্রকাশ্য কেউ মুখ খোলেনা, শৈলকুপা থানায় একাধিক মামলা ও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও গোপনে খোঁজ নিলে এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য জানা যায়। পুরাতন বাখরবা গ্রামের মাহাবুবুর রহমান মারুফ মাস্টারের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা এ গ্যাং গ্রুপে রয়েছে, বাপ্পী, রবিউল, সোহেল, রনি, তোফাজ্জেল, কাজেম, স্বপন, কামাল, সজিব অন্যতম। এ বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছে ব্রহ্মপুর গ্রামের শামছুল মেম্বার, বড় মৌকুড়ি গ্রামের ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান, কীত্তিনগর গ্রামের হেলাল উদ্দিন, চরবাখরবা গ্রামের মোস্তফা সাবেক মেম্বার  ও ব্যবসায়ী আজিম উদ্দিন, ব্যবসায়ী সনদ কুমার দাস সর্বশেষ হত্যার চেষ্টা চালিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজকে করেছে পঙ্গুপ্রায়। এ ঘটনার পর শৈলকুপা থানায় চেয়ারম্যানসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ভয়ে আসামীদের সাথে সাথে সাধারণ মানুষ, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা এলাকা ছেড়েছে। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ আতঙ্কে ইউনিয়নটির বেশকিছু গ্রামের যুবকরাও রাতে বাড়ি থাকেনা। ভাটবাড়িয়া গ্রামের মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধদের মাঝে বিরাজ করছে অদৃশ্য ভীতি। হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিবাদমান উভয়গ্রুপের মধ্যে অনেকের হাটবাজার, মাঠঘাটও প্রায় বন্ধ রয়েছে। পাল্টাপাল্টি অভিযোগও রয়েছে বাদী-বিবাদীদের মধ্যে।
শৈলকুপা থানার মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এমদাদ হোসেন জানান, সারুটিয়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল আজিজে উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যরা সব পলাতক তবে আসামী ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এলাকায় কিছুটা সুনশান নিরবতা দেখা যাচ্ছে, নতুন করে সাধারণ মানুষ হয়রানির উদ্দেশ্যে হামলা মামলা থেকে সবাইকে বিরত রাখতে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here