স্ত্রীকে তালাক দেওয়া গোপন রেখে মেলামেশা অভিযোগে; শেরপুরে পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

0
447
শেরপুরে পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা

খবর৭১ঃ

শেরপুর থেকে আবু হানিফঃ সরকারি কর্মকর্তা স্ত্রীকে তালাক দিয়েও তা গোপন রেখে প্রতারণামূলকভাবে দীর্ঘদিন মেলামেশার ঘটনায় শেরপুরে এনামুল হক (৩৯) নামে এক পুলিশ পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ওই মামলা দায়ের করেন শহরের পশ্চিম শেরী এলাকার প্রতারিত তরুণী গৃহবধু(৩৬)।

মামলায় এনামুল হকের ছোট ভাই ও প্রথম স্ত্রী সাদিয়া ইসলাম মিমি (৩৩) কে সহযোগী আসামী করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলহাজ্ব মোঃ আখতারুজ্জামান ওই অভিযোগ গ্রহণ করে ঘটনার বিষয়ে তদন্ত পূর্বক ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা(সিনিয়র সহকারি জজ) কে নির্দেশ দেন। এনামুল হক বর্তমানে রাজবাড়িতে সিআইডি পরিদর্শক এবং প্রতারিত গৃহবধু বাক্ষ্রণবাড়িয়ার সড়াইলে এলজিইডিতে প্রশিক্ষণ সম্বয়নকারী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। জানা যায়, শেরপুর শহরের পশ্চিম শেরী মহল্লার অধিবাসী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ কল্যাণ বিভাগে অনার্স মাস্টার্স সম্পন্নকারি ওই গৃহবধুর সাথে ২০১৬ সালের দিকে পরিচয় ও সম্পর্কের সূত্রে মৌলভী দ্বারা গোপনে বিয়ে হয় পুলিশের তৎকালীন উপ-পরিদর্শক জামালপুর সদর উপজেলার গনেশপুর এলাকার অধিবাসী এনামুল হকের। এরপর ওই গৃহবধু অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়লে সামাজিক চাপে গত বছরের ৩১ মে তাদের বিয়েটি রেজিষ্ট্রি করা হয়।

এক পর্যায়ে তরুণী গৃহবধু জানতে পারেন এনামুলের স্ত্রী ও সন্তান থাকার পরও প্রতারণামূলকভাবে তা গোপন রেখে তাকে বিয়ে করা হয়েছে। এরপরই তাদের দাম্পত্য জীবনে টানাপোড়েন শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা নির্যাতনের পর্যায়ে গড়ালে নষ্ট হয়ে পড়ে তরুণী গৃহবধুর পেটের ৪ মাসের সন্তান। এরপরও নিজের ভবিষ্যৎ জীবনের চিন্তায় গৃহবধু এনামুল হকের সাথে সম্পর্ক বহাল রাখতে প্রায় ১২ লক্ষ টাকায় গৃহবধুর পিতার বাড়ির পাশে একখন্ড জায়গা কিনে দিলে এনামুল কৌশলে তা নিজের নামে লিখে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে গৃহবধুর উপর বেড়ে যায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন। ফলে ওই গৃহবধু বাধ্য হয়ে চলতি বছরের ১৬ জুলাই শেরপুরের আমলী আদালতে এনামুল হকের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে একটি নালিশী মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ১৩ অক্টোবর এনামুল হক আমলী আদালতে হাজির হয়ে দাবি করেন যে, ওই গৃহবধুকে চলতি বছরের ১১ মার্চ তালাক প্রদান করা হয়েছে।

কিন্তু গৃহবধুর নামে নোটিশ রেজিস্ট্রি ডাকে পাঠানোর তারিখ দেখা যায় ১১ জুন। ফলে ১১ মার্চ থেকে যৌতুকের দাবিতে নিজ বাড়ি থেকে ৭ জুন তাড়িয়ে দেওয়ার সময়কাল পর্যন্ত তালাকের বিষয়টি এনামুল গোপন রেখে ওই গৃহবধুর সাথে প্রতারণামূলকভাবে মেলামেশা করেছেন। প্রতারণার শিকার গৃহবধু ওই পুলিশ কর্মকর্তার উপযুক্ত শান্তি দাবি করে বলেন, এনামুল হক এতোটাই প্রতারক যে, ১০ লক্ষ টাকা মোহরণায় আমাদের বিয়ে হলেও তার নির্যাতনের পর নকল উঠিয়ে জানতে পেরেছি তাতে ১০ টাকা উঠানো হয়েছে। আমার পিতার বাড়ির পাশে আমাদের টাকায় কেনা জমি প্রতারণামূলকভাবে লিখে নিয়ে এনামুল হক শেরপুরে কোর্ট পরিদর্শক হিসেবে বদলি হয়ে আসে এবং ওই জায়গায় করা বাসাতে আমাকে নিয়ে সংসার করে ভাল মানুষ সাজার অভিনয় করে। অথচ এখন দেখা যাচ্ছে ওইসময়টার পূর্বেই সে তার ছোট ভাই ও প্রথম স্ত্রীর যোগসাজসে আমাকে তালাক দিয়ে সর্বনাশ করেছে। অন্যদিকে, পুলিশ পরিদর্শক এনামুল হকের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেও তা জানা সম্ভব হয়নি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here