শেরপুরের তিনটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ নালিতাবাড়ীতে সংঘর্ষ, আহত-৬

0
362

শেরপুর থেকে আবু হানিফ :
২৪ মার্চ রবিবার তৃতীয় ধাপের পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শেরপুরের তিনটি উপজেলায় নির্বাচনী সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। ২৩ মার্চ শনিবার দুপুরে শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারসহ যাবতীয় মালামাল স্ব-স্ব কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে বিতরণ করা হয়। আইন শৃংখলা বাহিনী ও কেন্দ্রে দায়িত্বরত লোকজন এসব মালামাল নিয়ে কেন্দ্রে যান।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, শ্রীবরদী উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৩শ ৯০ টি। কেন্দ্র সংখ্যা ৬৭টি। এখানে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
ঝিনাইগাতী উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার। ভোট কেন্দ্র ৫৩টি। উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
নালিতাবাড়ী উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬শ। কেন্দ্র সংখ্যা ৭৩টি। উপজেলা চেয়ারম্যানে পদে ৪জন ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
তিনটি উপজেলায় মোট ১শ ৯২টি কেন্দ্রকে ঝুকিপূর্ণ আর ৫০টি কেন্দ্র সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ১৮ জন ম্যাজিষ্ট্রেট, ৭ প্লাটুন বিজিবি, কেন্দ্রে ৭শ ১৮জন পুলিশ, ২হাজার ৩শ ৪ জন আনসার, ৪৮ জন র‌্যাব সদস্য দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়াও পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্স তো থাকবেই।
নালিতবাড়ীরশেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২২ মার্চ শুক্রবার রাতে নৌকার প্রার্থী মোশারফ হোসেনের সমর্থক ও বিদ্রোহী প্রার্থী মোকছেদুর রহমান লেবুর মোটরসাইকেলের সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুইপক্ষের ৬ জন আহত হয়েছে। ভাংচুর করা হয়েছে ১২টি মোটরসাইকেল। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও দুই পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা জানায়, দুপুরে রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের উত্তর কালাকুমায় মোটরসাইকেলের সমর্থক মো. জহুরুল হককে মোটরসাইকেলের কার্যালয় বন্ধ করতে এবং নির্বাচন করতে নিষেধ করেন নৌকা সমর্থকরা। এ সময় জহুরুল ও তার বোন জাহানারা বেগমের সাথে নৌকা সমর্থকদের বাক-বিতন্ডা হয়। বিকেলে ৫০-৬০জন নৌকার সমর্থক জহুরুলদের মোটরসাইকেলের কার্যালয়, দোকান ও বাড়ি-ঘর ভাংচুর করে। এসময় সবুজ মিয়া, জহুরুল ও জাহানারাকে মারধর করে নৌকা সমর্থকরা। খবর পেয়ে মোটরসাইকেলের প্রার্থী মোকছেদুর রহমান লেবু ও তার সমর্থকরা ওই এলাকায় সড়কে মোটরসাইকেল রেখে ঘটনাস্থলে যান। এসময় সড়কে রেখে যাওয়া ৮টি মোটরসাইকেল নৌকার সমর্থকরা ভাংচুর করে। পরে এ নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে নৌকার তিন সমর্থক কালাকুমা গ্রামের ফরহাদ আলী, কুদরত আলী ও হাফিজুর রহমান মারধরের শিকার হন। পরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এদিকে কালাকুমার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় লেবুর সমর্থকরা তারাগঞ্জ উত্তর বাজারস্থ তার কার্যালয়ে সমবেত হয় ও শহীদ মিনার চত্বরে রাখা নৌকার প্রচারণার একটি মাইক্রোবাস ধাওয়া করে। একপর্যায়ে নৌকার প্রার্থী মোশারফ হোসেনের সমর্থকদের ৪টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। এতে শহরে আতংক ছড়িয়ে পড়ে ও দ্রুত শহরের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। পরে ইউএনও আরিফুর রহমান, এএসপি জাহাঙ্গীর আলম ও ওসি আবুল খায়েরসহ পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা উপস্থিত হলে পরিবেশে স্বাভাবিক হয়। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, আমরা মোটরসাইকেলের কার্যালয় ও বাড়ি-ঘর ভাংচুর করিনি, কাউকে মারধরও করিনি। মোটরসাইকেলের কর্মী-সর্মকরাই আমাদের নৌকার সমর্থকদের মারধর ও ৪টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করেছে। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের বলেন, পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাবের উপস্থিতিতে কালাকুমা ও পৌর শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। মারধরের ঘটনায় এখনো কোন মামলা করা হয়নি। ইউএনও ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। এতে কালাকুমায় মোটরসাইকেলের ৮টি ও শহরের নৌকার পক্ষের ৪টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এ ব্যাপারে ২৩ মার্চ বিকেলে জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিয়া সাংবাদিকদের জানান, নিরাপত্তার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নিরাপদে ভোট হবে। তিনি ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানান।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here