শিক্ষিত রোহিঙ্গাদের বেছে বেছে হত্যা করেছে মিয়ানমার

0
230

খবর৭১: মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের মধ্যে থেকে শিক্ষিত লোকদের বেছে বেছে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলমানরা গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের।

রোহিঙ্গাদের নেতৃত্ব দেয়ার মতো যাতে কেউ না থাকে সে লক্ষ্যেই এ কাজ করেছে বলে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সঙ্গে সাক্ষাৎকারে বেশ কয়েকজন রোহিঙ্গা শিক্ষক, ধর্মীয় নেতা ও বয়োজ্যেষ্ঠ জানিয়েছেন।

শরণার্থী হয়ে বাংলাদেশে আসা মোহাম্মদ হাশিম সাংবাদিকদের জানান, তাদের গ্রামে যখন সেনাবাহিনীর সদস্যরা আসে, তখন তিনি ভয়ে পাহাড়ি এলাকায় চলে যান। সেখান থেকে তিনি দেখতে পান, তার শিক্ষক ভাইকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তার হাত পেছন থেকে বাঁধা। জীবিত অবস্থায় তার ভাইকে এটিই ছিল শেষ দেখা। এর পর তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

সেনাসদস্যরা যখন তাকে ধরে নিয়ে যায়, তখন সে বারবার বলছিল- আমি শিক্ষক! আমি শিক্ষক! আমার পরিচয়পত্র রয়েছে। এভাবেই মিয়ানমারের সেনাসদস্যদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলেও তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পর থেকেই ভাইয়ের আর কোনো খবর জানেন না হাশিম।

হাশিম ছাড়াও রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে এমন অন্তত রয়েছে ডজনখানেক শিক্ষক, ধর্মীয় নেতা ও বয়োজ্যেষ্ঠ।

সাংবাদিকদের তারা প্রায় সবাই বলেছেন, শিক্ষিত লোকদের নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। তারা আরও বলেছেন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের কণ্ঠরোধ করে দিতে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এ কাজ করেছে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনেও প্রায় একই চিত্র উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, ‘রোহিঙ্গাদের মধ্যে শিক্ষক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতাসহ প্রভাবশালীদের টার্গেট করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। রোহিঙ্গা ইতিহাস, সংস্কৃতি ও জ্ঞান ধ্বংস করতে তারা এটি করেছে।’

গত বছরের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আরসার কথিত হামলার পর রাখাইনের মং নু গ্রামে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। ঘটনার পর শিক্ষকদের খুঁজতে ওই গ্রামটিতে আসে একদল সেনাসদস্য।

২৬ বছর বয়সী রহিম বলেন, স্থানীয়ভাবে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক ছিলেন তিনি।

এর সুবাদে অনেক সেনাসদস্যের সন্তান তার ছাত্র। সেনাসদস্যরাও তাকে চিনতেন। কিন্তু গ্রামে সেনাবাহিনীকে আসতে দেখেই তিনি পালিয়ে যান।

তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম ধরা পড়লেই ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে খুঁজতেই ওরা গ্রামে এসেছিল। ওরা জানত আমাকে শেষ করে দিতে পারলে গ্রামের অন্য রোহিঙ্গাদের সঙ্গে তারা যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে।’
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here