শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ালেন তারকারা

0
300

খবর৭১ঃ রাস্তায় বেপরোয়া যানবাহন যেন একেকটা মৃত্যুফাঁদ। সম্প্রতি বাসচাপায় পিষ্ট হয়ে মারা গেছে শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম ওরফে রাজীব এবং একই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম ওরফে মিম।

এর পরই শুরু হয়েছে আন্দোলন। এ আন্দোলন থামাতে দেওয়া হচ্ছে নানা প্রতিশ্রুতি। অনেক তারকাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া, একাত্মতা জানিয়েছেন তাদের সাথে।

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী লাগাম টানুন। গরু-ছাগল চেনা ঘোড়াগুলো ক্ষেপে গেছে। তারা মানুষ চিনছে না। রাস্তায় রক্তের দাগ, সেই রক্তের দাগ মাড়িয়ে আপনার সুরক্ষিত গাড়িবহর ছুটে যায়। আপনার অজান্তেই হয়তো আপনার গাড়ির চাকায় লেপ্টে যায় কোনও এক নিষ্পাপ শিশুর রক্ত। শিশুর রক্ত মাড়িয়ে যাওয়ার মতো মানুষ তো আপনি নন। এ দায় তবে কেনো আপনাকে বহন করতে হবে। ক্ষ্যাপা ঘোড়াগুলোর লাগাম টানুন।’ – নিজের ফেসবুকে এভাবেই স্ট্যাটাস লিখেছেন নাট্যকার মাসুম রেজা। পরবর্তীতে আরেকটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি আরও লিখেছেন-‘শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করবেন না। দাবি মেনে নিয়ে ওদের নির্বিঘ্নে ঘরে ফেরান।’

‘আয়নাবাজি’-খ্যাত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী লিখেছেন- ‘হোক প্রতিবাদ। বিচার চাই।’ সঙ্গে নিজের ফেসবুকের প্রোফাইল ছবি কালো করে নিজের অবস্থান জানিয়েছেন এই তারকা।

অভিনেত্রী শাহনাজ খুশি ফেসবুকে লিখেছেন- ‘এই বাচ্চাদের অবরোধে পরে সাড়ে পাঁচঘণ্টায় পূবাইল শুটিং সেটে আসলাম। আমি ভীষণ অসুস্থ, ফিরবো কিভাবে, কয় ঘণ্টায় জানি না। তবুও কোনও রাগ হয়নি। প্রাণছেঁড়াধন, সোনার বাচ্চারা, আমরা তোমাদের কোনও নিরাপত্তা দিতে পারিনি। তাই আজ পথে নামতে হয়েছে তোমাদের। এই মা তোমাদের সাথে আছে। অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না। এটা তোমাদের কোনও এক মায়ের আকুতি।’

নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেছেন- ‘বাইরের দেশে লাইসেন্স অর্জন করা যত কঠিন, লাইসেন্স টিকাইয়া রাখা তার চেয়েও কঠিন। আমাদের দেশে লাইসেন্স পাইতে ঝামেলা নাই, টিকাইয়া রাখতে তো আরো ঝামেলা নাই। এখানে মানুষের প্রাণের কোনো দাম নাই। আপনি মানুষ মারবেন, আর নৌমন্ত্রী আপনার পাশে আইসা নির্লজ্জের মতো সাফাই গাইবে। একসময় অপরাধবোধ, লজ্জাশরম এইসব ব্যাপার ছিলো। কলির এই কালে, সেসবের বালাই নাই। হয় মাইনা নেন, না হয় দুইটা গালি দিয়া পাশ ফিরা শুইয়া পড়েন, যেহেতু কিছু করতে পারতেছেনইনা।’

চিত্রনায়ক ওমর সানী এক স্ট্যাটাসে লিখেন, দয়া করে বাচ্চাদের গায়ে হাত দেবেন না। তারা কোন আসনের নমিনেশন পাবার জন্য পথে নামে নাই,তাদের দাবী পথের নিরাপত্তা কেবল। এই দেশের পরবর্তী কর্নধার এই বাচ্চারাই।এখনো অনেক বাচ্চা মৃত্যুর সাথে পান্জা নড়ছে।বাচ্চাদের মাথায় লাঠির আঘাত নয়,ভরসার হাত রাখুন।মা-বাবাদের পথে নামতে বাধ্য করবেন না দয়া করে।ওরা আমাদের সন্তান।নাড়ি ছেঁড়া ধন ! জারজ নয় !

মেহের আফরোজ শাওন লিখেছেন, ওরা কিন্তু রাজনীতি বোঝে না- রাজনীতি করতে পথে নামেও নি.., কিন্তু রাজনীতির প্রতি, রাজনীতিবিদদের প্রতি কি পরিমাণ ঘৃণা জন্মে যাবে তাদের মনে ভেবে দেখছেন..!

এই ছেলেপুলে গুলোই আগামী ২/১ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে- হয়তো ছাত্র রাজনীতিও করবে.., আজকের এই ঘৃণা কি ওদের ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে দিবে..?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী- তিনি তো কোমল হৃদয়ের মানুষ… সারাজীবন সেভাবেই দেখে এসেছি তাকে… আজ কেন তার কোমলতা দেখাতে দেরী করছেন..? তার সম্বন্ধে এই বাচ্চাগুলোর ধারনা কোনদিকে যাচ্ছে..!

প্রিয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা- আপনি ছাড়া আর কে আছে আমাদের..? কার কাছে যাব..? আপনাকে এই কিশোর কিশোরীরা ভুলভাবে জানুক তা তো চাই না… এদের ঘরে ফেরাতে আপনার একটি আশ্বাসের বাক্যই তো যথেষ্ট… আপনি কি তাদের মাথায় আপনার হাতটা একটু রাখবেন না..?
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here