মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জ ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় কৃষিজমির উপর অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন শিল্পকারখানা। এসব শিল্পকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য আশপাশের খাল ও নদীতে ফেলার কারণে ভয়াবহ শিল্পদূষণ হচ্ছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগসহ জটিল রোগে ভুগছেন। তাছাড়া কারখানার অপরিকল্পিত বর্জ্য নিষ্কাশনের কারণে স্থানীয় নদী তীরের মানুষের জীবনযাত্রা অন্যদিকে কৃষি উৎপাদন দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার অন্যতম সুতাং নদী দূষণের মাত্রা ছাড়িয়েছে। পানি কালো ও দুর্গন্ধময় হয়েছে। নদীতে আর মাছ পাওয়া যায় না, নদীর পানি ব্যবহারকারীরা পানি সংকটে ভুগছেন। মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন গ্রামের মানুষ। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য বিধ্বংসী ও ক্রমাগত দূষণের বিরুদ্ধে ঐ এলাকার গ্রামগুলোতে চরম পরিবেশ ও মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরজমিনে সদর উপজেলার সুতাং নদীর করাব, রাজিউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নের নদীপাড়ের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, শিল্পবর্জের কারণে নদী বিপন্ন । দূষিত বর্জ্যে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে কৃষি উৎপাদন দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই জেলার অন্যতম সুতাং নদী দূষণের মাত্রা ছাড়িয়েছে। পানি কালো ও দুর্গন্ধময় হয়েছে। নদীতে আর মাছ পাওয়া যায় না, নদীর পানি ব্যবহারকারীরা পানি সংকটে ভুগছেন। মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন গ্রামের মানুষ। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র বিধ্বংসী ও ক্রমাগত দূষণের বিরুদ্ধে ঐ এলাকার গ্রামগুলোতে চরম পরিবেশ ও মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরজমিনে সদর উপজেলার সুতাং নদীর করাব, রাজিউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ব্রাহ্মণডুরা ইউনিয়নের নদীপাড়ের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, শিল্পবর্জের কারণে নদী বিপন্ন । দূষিত বর্জ্যে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।
সদর উপজেলার করাব ইউনিয়নের ফুলতলি গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ কৃষক আরব আলী তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে জানান, কোম্পানী আসার কারণে তাদের জীবন-জীবিকা দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। একদিকে তীব্র গন্ধের মধ্যে বসবাস অন্য দিকে ফসল উৎপাদন কমে গেছে। দিন দিন অসুস্থ হয়ে পড়েছে বাড়ির লোকজন। কৃষি কাজের জন্য সুতাং নদীর পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। প্রাণ আরআফএল কোম্পানীর বর্জ্যে নদী মরেছে এখন মানুষও মরবে।
শিক্ষার্থী সুশান্ত পাল (২০) বলেন, সুতাং নদী থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো জেলেরা। কালো কুচকুচে পানিতে এখন আর মাছ পাওয়া যায় না। শত শত জেলে বেকার হয়ে পড়েছে। উচাইল গ্রামের কালজ মিয়া (২৫) জানান, সকাল, সন্ধ্যা এবং রাতে গন্ধ বেশি হয়। নদীর বিষাক্ত পানিতে নেমে হাঁস, মোরগ, গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। এলাকার মানুষের শরীর চুলকানি রোগ মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে।
পুটিয়া গ্রামের হাবিব মিয়া (৪০) বলেন, সুতাং নদীর পানি দূষিত হওয়ার কারণে এখন আর মাছ পাই না। আমরা বেকার হয়ে পড়েছি। একই গ্রামের মোছাঃ আঞ্জুমানা বেগম (৩৫), মোছাঃ জমিলা খাতুন (৫০) এবং রিজিয়া খাতুন (৫৫) বলেন, আমাদের গরীবদের কথা কেউ শুনে না। বাতাসে দুর্গন্ধ। আমাদের আশপাশের গ্রামে কেউ আত্মীয়তা করতে চায় না। মেয়ে বিয়ে দিতে চায় না।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোল হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, কয়েক বছর ধরে কারখানা থেকে বিষাক্ত বর্জ্য সুতাং নদীসহ খাল-জলাশয়ে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে ক্ষতি হচ্ছে আমাদের পরিবেশ-প্রতিবেশ ও কৃষি জমি, অন্যদিকে জনস্বাস্থ্যে ও জীববৈচিত্র্যের উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। তাই পরিবেশ সচেতন মানুষের পক্ষ থেকে দাবি, দূষিতবর্জ্য নিষ্কাশন রোধে অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক এবং একই সঙ্গে সুতাং নদী পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।
খবর৭১/জি: