শায়েস্তাগঞ্জে বধ্যভূমি আজও অরক্ষিত

0
370

মঈনুল হাসান রতন, হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অসংখ্য স্মৃতি চিহৃ রয়েছে। তন্মধ্যে রেলওয়ে গেইটের পাশে ১১ চা-শ্রমিক শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর স্বাধীনতার ৪৬ বছরেও সংরক্ষণ করা হয়নি। আজও অরক্ষিত রয়েছে। তবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন থেকে শুধুমাত্র ছোট্ট একটি সাইনবোর্ড টানিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন। যাহাতে লেখা রয়েছে ‘বধ্যভূমি’।দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবরকে চিহিৃত করে নির্মিত হয়েছে নান্দনিক স্মৃতিস্তম্ভ। আর শায়েস্তাগঞ্জের গণকবরের আশপাশে গড়ে ওঠেছে সিএনজি (অটোরিক্সা) স্ট্যান্ড। এমনকি এই বধ্যভূমির চতুর দিকে বেড়া (সীমানা প্রাচীর) পযর্ন্ত দেয়া হয়নি। অবহেলিত পরিত্যক্ষ ভূমিতে শায়িত আছেন দেশের বীর সন্তানরা। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে।সূত্র জানায়, স্থানীয় কয়েক মুক্তিযোদ্ধা এ বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করলেও কোন তারিখে তাদেরকে হত্যা করে গণকবর দেয়া হয়েছিল তারো কোনো সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। তবে ডিসেম্বর এলেই তাঁদের কথা মনে পড়ে। পরে আর মনে থাকে তাঁদের কথা।স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের দাবী গণকবরটিকে বধ্যভূমিতে পরিণত করে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা টানিয়ে রাখা।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাক হানাদার বাহীনির হাতে হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন লালচান চা বাগানের ১১ জন চা-শ্রমিক। তারা হলেন- (১) শহীদ মুক্তিযোদ্ধা অনু মিয়া, (২) কৃষ্ণ বাউরী, (৩) রাজ কুমার, (৪) ভুবন বাউরী, (৫) সুশীল বাউরী, (নেপু বাউরী, লাল সাধু, রাজেন্দ্র রায়, গফুর রায়, মহাদেব বাউরী।স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকার বয়বৃদ্ধ ব্যক্তিরা জানান- ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে পাকিস্তান বাহীনিরা যখন লালচান চা-বাগানসহ আশপাশের এলাকা ঘিরে ফেলে। পরে বাগানের কিছু চা-শ্রমিকদেরকে পাক বাহীনির সদস্যরা নানা প্রলোভন দেখিয়ে শায়েস্তাগঞ্জে নিয়ে যায় এবং ‘ব্রাশ ফায়ার’ করে তাদেরকে হত্যা করে ।শায়েস্তাগঞ্জ পৌর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ-এর কমান্ডার মোঃ আব্দুল আলী জানান, চা বাগানের সহজ সরল প্রকৃতির লোকদেরকে পাক বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে এলাকার লোকজন রেলওয়ের পরিত্যক্ষ ভূমিতে তাদের গণকবর দেন।মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী (৭০) জানান, তিনি ৩নং সেক্টরে যুদ্ধে ছিলেন। দেশ স্বাধীনের পর বাড়ীতে গিয়ে জানতে পারেন পাঞ্জাবীরা চা-বাগানের ১১ শ্রমিককে হত্যা করেছে। এলাকার মানুষ তাদের রেলওয়ের ভূমিতে কবর দেয়।শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোঃ ছালেক মিয়া বলেন, বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের জন্য পৌরসভা থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী অর্থ বছরের বাজেটে বধ্যভূমি সংরক্ষণ ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নামে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here