শাহজাদপুরে আসামী বহনে নেই কোন প্রিজন ভ্যান

0
446

রাজিব আহম্মেদ, শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃ শাহজাদপুর কোর্টে আসামি আনা নেওয়ার জন্য নেই কোন প্রিজন ভ্যান বা অন্য কোন যানবাহন । এই কারনে বিভিন্ন সময় ঘটছে আসামির পলায়নের মতো অপ্রীতিকর ঘটনা, শাহজাদপুর থেকে সিরাজগন্জ জেলা কারাগারের দুরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারী শাহজাদপুরে চৌকি আদালত পূর্ণ স্থাপন করেছেন সরকার।

শুধু তাই নয় ২০১৭সালের নভেম্বরে এখানে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কার্যক্রমও চালু হয়েছে। শাহজাদপুর চৌকি আদালত থেকে প্রায় প্রতিদিনই সিরাজগন্জ জেলা কারাগারে আসামী আনা নেওয়া করতে হয়। কিন্তু এত দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে আসামী আনা নেওয়ার জন্য কোন প্রিজন ভ্যান বা নির্দিষ্ট কোন যানবহন নেই শাহজাদপুর চৌকি আদালতে!

পুলিশের প্রিজন ভ্যান বা অন্য নির্দিষ্ট কোন যানবহন না থাকার কথা জানিয়েছেন শাহজাদপুর আমলী আদালতের কোর্ট ইনচার্জ সাব ইন্সপেক্টর প্রদ্যুৎ কর।

তিনি আরো জানান যে, দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে জেলা কারাগারে আসামী আনা নেওয়ার জন্য আমাদের এখানে কোন পুলিশ প্রিজন ভ্যান বা নির্দিষ্ট অন্য কোন যানবহন নেই! কোর্ট পুলিশ পাবলিক বাস,ভাড়াকৃত লেগুনা,সিএনজি অটোরিক্সায় করে আসামী আনা নেওয়া করে। অনেক সময় হরতাল,অবরোধ,প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে গন পরিবহনে অতি কষ্টে আসামী আনা নেওয়া করা হয়।

বাসে আসামী আনা নেওয়ার সময় আদালত প্রাঙ্গন থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার পথ রিক্সা ভ্যানযোগে দিলরুবা ও বিসিক বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়!বেশিরভাগ দিন বাসে সিট পাওয়া যায় না!লোকাল বাসে দাড়িয়ে থাকতে হয় আসামীর হাতের হ্যান্ডকাপ,আর রশি ধরে!! আবার সিরাজগন্জ বাস টার্মিনালে নেমে রিক্সা ভ্যানযোগে কারাগারে পৌঁছাতে হয়। তিনি আরও জানান, থানা থেকে অনেক সময় দেরিতে আসামী জমা দেয়,তখন সেই আসামী কারাগারে জমা দিতে হলে রাত হয়ে যায়! সেক্ষেত্রে পুলিশ ব্যারাকে ফিরতে বেশ বেগ পেতে হয় কসস্টেবলদের।

দেরিতে আসামী জমা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)খাজা গোলাম কিবরিয়া জানান, শাহজাদপুর থেকে সিরাজগঞ্জ পৌঁছাতে সময় লাগে এক থেকে দেড় ঘন্টা, আদালতে যত সময় আসামী জমা নেয় আমরা সেই সময়ের মধ্যে আদালতে আসামী জমা দেই।

আসামী আনা নেওয়ার জন্য শাহজাদপুর চৌকি আদালতে পুলিশের প্রিজন ভ্যান বা নির্দিষ্ট অন্য কোন যানবহন না থাকার কথা মুঠোফোনে সত্যতা স্বীকার করেছেন সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু ইউসুফ। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, সিরাজগঞ্জ জেলায় একটি মাত্র প্রিজন ভ্যান আছে তারও বেহাল অবস্থা ! ঐ প্রিজন ভ্যানটি বর্তমান অবস্থায় শাহজাদপুরে যাওয়ার মত অবস্থায় নাই! শাহজাদপুর চৌকি আদালতে আসামীর সংখ্যা বেশি হলে বা গুরুত্বপুর্ণ আসামী হলে সেক্ষেত্রে পুলিশ প্রিজন ভ্যান, বা অন্য যানবহনে আসামী আনা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

আগামীতে প্রিজন ভ্যানের ব্যবস্থা করা হবে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে জানান পুলিশ বিভিন্ন সময় প্রিজন ভ্যানের জন্য পুলিশ হেডকোয়াটার্সে আবেদন করা হয়েছে, বরাদ্দ হলে আমরা সেখানে তা দিয়ে দিবো ।

উল্লেখ্য গত ২৮ এপ্রিল শাহজাদপুর চৌকি আদালত থেকে আসামী সিরাজগন্জ জেলা কারাগারে নেওয়ার পথে হ্যান্ডকাপসহ সিএনজি অটোরিক্সা থেকে পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যায় দুই আসামী। পরবর্তীতে একজন আত্নসমর্পন করে ও আরেকজন আসামীকে গত ৪ পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থেকে শাহজাদপুর থানা পুলিশ আটক করে। এ ঘটনায় দুই কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে সিরাজগঞ্জের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার।

পলাতক দুই আসামীর নামে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহজাদপুর আমলী আদালতের কোর্ট ইনচার্জ সাব ইন্সপেক্টর প্রদ্যুৎ কর। চাকুরি জীবনে শেষের দিক এসে প্রত্যাহার হওয়া দুই পুলিশ কনস্টেবল আঃ হাই,ও শ্রী বিদ্যুৎ কুমার হয়তো দুই চোখে অন্ধকার ছাড়া কিছু দেখতে পাচ্ছেন না! আসামী পালানোর ঘটনার এ দায় কি শুধু তাদের নাকি নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দায়ী? অনেকের ধারনা আসামী আনা নেওয়ার জন্য এখানে প্রিজন ভ্যান বা নির্দিষ্ট অন্য কোন যানবহন থাকলে আসামী পালানোর মত ঘটনা ঘটতো না।

প্রিজন ভ্যান বা নির্দিষ্ট অন্যকোন পরিবহন ব্যবস্থা থাকলে এমন ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে।আসামী আনা নেওয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থার এ ঘাটতি দুর করতে পারে একটি প্রিজন ভ্যান বা অন্য নির্দিষ্ট কোন যানবহন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন অনেকে।
খবর৭১/এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here