শতবর্ষী দুই হিজলের কথা

0
1213

খবর ৭১ঃ হিজলের দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের আনাচকানাচে হিজলগাছ ছড়িয়ে রয়েছে শিকড়-বাকড়ের মতো।

ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে!

মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে

এমনই হিজল—বট—তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ

দেখেছিল…

রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় হিজল আছে এভাবে।

এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে চিত্রা। উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী নদীটি আচমকা বাঁক নিয়ে পূর্বমুখী হয়েছে। কিছুদূর এগিয়ে পুনরায় বাঁক নিয়ে নদীটি আবার উত্তরমুখী। বাঁক নেওয়ার জায়গার নাম নারিকেলবাড়িয়া। যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার এই নারিকেলবাড়িয়ায় চিত্রা নদীর পাড়ে পাশাপাশি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে দুটি হিজলগাছ। গাছ দুটির প্রকৃত বয়স কত, তা নিশ্চিতভাবে জানা না গেলেও এলাকায় ওই হিজলগাছ দুটি ‘শতবর্ষী হিজল’ নামেই পরিচিত।

যশোর শহর থেকে বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়ার দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। নারিকেলবাড়িয়া-ক্ষেত্রপালা সড়কের পাশে চিত্রা নদীর তীরে নারিকেলবাড়িয়া মহাশ্মশান। এই মহাশ্মশানে বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে শতবর্ষী হিজলগাছ দুটি।

নিসর্গবিদেরা জানিয়েছেন, হিজলের আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া ও বাংলা-ভারত। ‘হিজল’ শব্দটি বাংলা। এর সংস্কৃত নাম ‘নিচুল’। এ ছাড়া ‘জলন্ত’, ‘নদীক্রান্ত’—এসব নামেও হিজলগাছ পরিচিত। ইংরেজি নাম ইন্ডিয়ান ওক। বৈজ্ঞানিক নাম barringtonia acutangula।

ছোটবেলায় চিত্রা নদীতে নৌকার মাঝি ছিলেন নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের অশীতিপর সিলামত মাঝি। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলায় হিজলগাছ দুটি দেখতে যেমন ছিল, আজও তেমনি আছে। খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।’

যশোর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম বলেন, হিজলগাছ দুটি শতবর্ষী। গাছ দুটি এলাকার পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি পাখিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে অবদান রাখেছ। গাছ দুটি সংরক্ষণে খুব শিগগির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here