শচিনের জামাই হতে চান দেব

0
331

খবর৭১: পছন্দের ক্রিকেটারকে ভক্তদের প্রেম নিবেদন নতুন কিছু নয়। ২০০৭ সালে ভারতের মুর্শিদাবাদের এক তরুণী ইডেন গার্ডেন্সে ভারতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাহেন্দ্র সিং ধোনিকে জড়িয়ে ধরে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিলেন। কিন্তু মহিষাদলের প্রত্যন্ত গ্রামের এক যুবক যেটা করলেন সেটা চোখ কপালে ওঠার মতোই।

সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের একজন শচিন টেন্ডুলকারের মতো কিংবদন্তীর ব্যক্তিগত ও বাসার ফোন নম্বর জোগাড় করে তাঁরই মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার মতো দুঃসাহস দেখালেন দেবকুমার মাইতি নামের ওই যুবক!

গত দুই বছর ধরে পুরো ঘর জুড়ে তিনি লিখে রেখেছেন শচিনের একমাত্র মেয়ে সারা টেন্ডুলকারের নাম। মোটরসাইকেলের হেডলাইটে লিখেছেন ‘সারা ও দেব’। হাতে উল্কিও এঁকেছেন সারার নামে।

এখানেই থেমে গেলে ব্যাপারটা অন্য রকম হতো। কিন্তু ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়! কীভাবে যেন জোগাড় করে ফেলেছিলেন লিজেন্ড ক্রিকেটার শচিনের ফোন নম্বর। তার পরেই সোজা মুম্বাইয়ে ফোন- ‘শচিন স্যার, ম্যায় আপকি লড়কি সারাসে শাদি করনা চাহতা হুঁ। সারা সির্ফ মেরি হ্যায়!’

৩২ বছর বয়সী যুবক দেবকুমার সারাকে বিয়ে করতে চেয়ে বিশ বার ফোন করেন মাস্টার ব্লাস্টার শচিনের বাড়িতে। প্রতিবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে একই কথা- ‘আমি আপনার জামাই হব।’

বারবার ফোন আসায় ২ জানুয়ারি বান্দ্রা থানায় অভিযোগ জানান শচিন। ফোন নম্বরের সূত্র ধরেই দেকুমারের কাছে পৌঁছে যায় মুম্বাই পুলিশ। গত শনিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার আন্দুলিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার তাকে হলদিয়া আদালতে তুলে তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে নেয় মুম্বাই পুলিশ।

জিজ্ঞাসাবাদে দেবকুমার বলছেন, মুম্বাইয়ে কাজ করতে গিয়ে ফোন নম্বর পেয়েছেন। কখনও আবার জানাচ্ছেন মুম্বাই প্রবাসী এক আত্মীয় তাকে শচিনের ফোন নম্বর দিয়েছেন। পুলিশের আর একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওয়েবসাইট ঘাঁটাঘাঁটি করে প্রথমে মুম্বাইয়ে শচিনের অফিসের ফোন নম্বর জোগাড় করেন দেবকুমার। তারপর নিজেকে শচিন-ভক্ত পরিচয় দিয়ে তাঁর বাড়ির নম্বর জোগাড় করেন। পুলিশ দেবকুমারের মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করেছে।

দেবকুমার যে শচিন-ভক্ত তা পাড়া-পড়শিরা সবাই জানেন। জানেন সারাকে নিয়ে তার পাগলামির কথাও। দেবকুমারের পরিবারের দাবি, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। তার চিকিৎসা চলছে। পুলিশকে সেই কাগজপত্রও দিয়েছেন তার আত্মীয়রা। আটপৌরে পরিবারের ছেলে দেবকুমার। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে দেবকুমারই ছোট।

ছোট ভাইয়ের এমন কাণ্ডে শচিনের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দেবকুমারের বড়ভাই রাজকুমার। তিনি বলেছেন, আট বছর ধরে ভাইয়ের মানসিক রোগের চিকিৎসা চলছে। ও আমাদের অনেক বার বলেছে, ‘শচিনের মেয়েকেই বিয়ে করব’। ডায়েরির পাতায় সারার নামও লিখে রেখেছে। কিন্তু এমন কাণ্ড যে ঘটাবে, তা বুঝিনি। ভাইয়ের আচরণের জন্য আমরা শচিন স্যারের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা চাই প্রশাসন ভাইয়ের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করুক।’

তবে যাকে নিয়ে এত কাণ্ড, সেই দেবকুমার কিন্তু নির্বিকার। আদালতে বিচারকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, ‘টিভিতে খেলা দেখার সময়ে দেখতাম, প্যাভিলিয়নে সারা বসে আছে। তখনই ওর প্রেমে পড়ে যাই। শচিনই আমার শ্বশুর। সারাকে আমি ভালবাসি। ওকেই বিয়ে করতে চাই।’

অন্যদিকে, দেবকুমারের মতো একজন সাধারণ যুবক কীভাবে শচিনের মতো হাই প্রোফাইল ব্যক্তির ফোন নম্বর জোগাড় করলেন, সেটাই ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘মুম্বাই পুলিশ ওই যুবককে চিহ্নিত করতে সাহায্য চেয়েছিল। কীভাবে সে শচিনের ফোন নম্বর পেল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে’।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here