লালমনিরহাট মহেন্দ্রনগর-মোস্তফি সড়কটি সংস্কার হচ্ছে না

0
564

আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাট এলজিইডি ও সওজ অধিদপ্তরে রশি টানাটানি মহেন্দ্রনগর-মোস্তফি সড়কটি সংস্কার হচ্ছে না। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাছ থেকে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরে হস্তান্তর প্রক্রিয়া আটকে থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে আগে থেকেই ভাঙাচোরা সড়কটিতে বৃষ্টির পানি জমে সাড়ে ৫ কিলোমিটার সড়কটি একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
লালমনিরহাট সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট ৫ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার রাস্তাটি সওজ’র অধীনে এলে বুড়িমারী স্থলবন্দর-লালমনিরহাট-মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট-রংপুর পর্যন্ত ১২৯ কিলোমিটার মহাসড়ক ‘সাসেক-টু’ প্রকল্পের আওতায় চার লেন নির্মাণ করা হবে। ৫ মে সাসেক-টু প্রকল্পের (এলেঙ্গা থেকে রংপুর) প্রকল্প পরিচালকসহ একটি প্রতিনিধি দল রংপুর মডার্ন মোড় থেকে কাউনিয়া-মোস্তফিরহাট-মহেন্দ্রনগর-লালমনিরহাট-হাতীবান্ধা-বুড়িমারী স্থলবন্দর পর্যন্ত পরিদর্শনও করেছেন। পরিদর্শনের পরেও দির্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও পরিকল্পনা কমিশন থেকে গেজেট না হওয়ায় তা আটকে আছে।
সওজ ও এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি অবকাঠামো বিভাগের সড়কগুলোর পুনঃ শ্রেণীবিন্যাস-সংক্রান্ত আন্তঃ মন্ত্রণালয় কমিটির সভায় সড়ক পরিবহন বিভাগ ও মহাসড়ক বিভাগের এবং এলজিইডির ১৭টি সড়কের মধ্যে একটি সড়ক সওজের কাছ থেকে সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে, আর ১১টি সড়ক এলজিইডির কাছ থেকে সওজের কাছে হস্তান্তর ও পাঁচটি সড়কের শ্রেণী পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়। এর মধ্যে লালমনিরহাট এলজিইডির অধীনে থাকা মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট জিসি ভায়া রাস্তাটি সওজের কাছে হস্তান্তর এবং মহাসড়কে পুনঃ শ্রেণীবিন্যাসের সিদ্ধান্ত হয়। রংপুর-কুড়িগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক ও বড়বাড়ী-লালমনিরহাট-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়ক লালমনিরহাট সওজ বিভাগের আওতাধীন। তবে এলজিইডির আওতাধীন মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট সড়কটির দুই প্রান্ত রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে যুক্ত। এ কারণে এটি সওজের অধীনে হস্তান্তরের পক্ষেই সভায় যুক্তি তুলে ধরা হয়।
লালমনিরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শেখ আব্দুল হামিদ বাবু ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আলোচিত সড়কটি জাতীয় মহাসড়কে অন্তর্ভুক্ত করার এ জেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি। এটি বাস্তবায়ন হলে লালমনিরহাটের ব্যবসা-বাণিজ্যে আরো প্রসার ঘটবে।
বুড়িমারী স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী বলেন, মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট অংশটি জাতীয় মহাসড়ক হলে ব্যবসায়ীদের জন্য অনেক ভালো হবে। এটি হলে সবকিছুতেই আমাদের জন্য সাশ্রয় হবে।
মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট মহাসড়কের পাশে দোকান মালিক মাহফুজ বলেন, রাস্তাটি একবার ভেঙ্গে গেলে যান ও মানুষ চলাচলে একেবারেই অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। রাস্তাটি সংস্কারে আগে এলজিইডি কাজ করতো। কিন্তু এখন শুণছি এই রাস্তাটির দায়িত্ব নাকি সওজ বিভাগকে দেয়া হয়েছে। এভাবে ঢিল চালাচালি হলে হয়তো বা কোন একদিন রাস্তাটি বিলিন হয়ে যেতে পারে।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম জাকিউর রহমান জানান, সড়কের পুনঃ শ্রেণীকরণ-সংক্রান্ত আন্তঃ মন্ত্রণালয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সওজ বিভাগের কাছে সড়কটি হস্তান্তর করা যেতে পারে মর্মে ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু গেজেট না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ একটি বক্স কালভার্টসহ রাস্তাটি সংস্কার করার কাজ ঝুলে আছে। ঘস্তান্তরের চিঠি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে লালমনিরহাট সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নূরায়েন ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আন্তঃ মন্ত্রণালয় সভায় চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হলেও পরিকল্পনা কমিশন থেকে গেজেট প্রকাশ করা হচ্ছে না। এটি হলে বুড়িমারী স্থলবন্দর-লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগর-মোস্তফিরহাট হয়ে রংপুরের সঙ্গে মহাসড়কে যুক্ত হবে। এতে করে লালমনিরহাট সদর থেকে রংপুরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার কমে যাবে। তিনি আরো বলেন, গেজেট না হওয়ার কারণে কোনো পক্ষই রাস্তাটির সংস্কারকাজ করতে পারছে না। ফলে বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত সংস্কার করা না গেলে চলতি বর্ষা মেসৈুমে রাস্তাটি ব্যবহারে একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়বে। আসন্ন ঈদে ঘরমুখী মানুষ গুলোও চরম ভোগান্তিতে পড়বে। লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য আবু সালেহ মো. সাঈদ দুলাল এমপি বলেন, দ্রুত গেজেট প্রকাশ ও রাস্তাটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here