আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনারহাটঃ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে যৌতুক লোভী স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নির্যাতিত গৃহবধু রুপালী বেগমকে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত গৃহবধু রুপালী বেগম (২৪) উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘড়িয়া আবলার বাজার এলাকার মানিক মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের আবলার বাজার এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে মানিক মিয়া (৩০) প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে ৪ বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন পাশ্বববর্তি সদর উপজেলার কালমাটি গ্রামের মৃত জসির উদ্দিনের মেয়ে রুপালী বেগমকে। বিয়ের পর থেকে মাঝে মধ্যেই যৌতুকের টাকার জন্য বায়না ধরত মানিক ও তার পরিবার। সব সময় জামাইয়ের চাহিদা মেটাতে পারতেন না রুপালীর বিধবা মা ফাতেমা বেগম। এরই মাঝে তাদের সংসারে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মানিক ঢাকায় পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজে গিয়ে স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে তৃতীয় বিয়ে করে ঢাকায় থেকে যান। তার নির্দেশে তার বাবা মা ভাই ভাবিরা রুপালীকে বাড়ি ছাড়া করতে কারনে অকারনে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন শুরু করে।
শুক্রবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে মানিক ঢাকার তৃতীয় স্ত্রীকে তালাক দিতে রুপালীর কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। রুপালী বেগম সেই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে স্বামী শ্বশুর শ্বাশুরি ও ভাসুর মিলে লাঠি ও দা দিয়ে বেধম মারপিট করে বাড়ির বাহিরে ফেলে রাখেন। এতে রুপালী বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হন। পরে স্থানীয়রা আহত গৃহবধু রুপালীকে উদ্ধার করে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় রুপালী বেগম বাদি হয়ে স্বামী মানিক মিয়াসহ ওই পরিবারের ৫ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
হাসপাতালের বেডে থাকা রুপালী বেগম জানান, ৫০ হাজার টাকা তার মায়ের কাছ থেকে এনে না দেয়ায় স্বামী মানিকসহ পরিবারের সবাই মিলে মারপিট করে বাচ্চাটিকে আটকিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এমন অমানুষিক নির্যাতন গত এক বছর ধরে সইতে হচ্ছে তাকে। এটার বিচার দাবি করেন তিনি।
আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক আব্দুস সালাম শেখ জানান, রুপালী রক্তাক্ত জখম হয়েছে। বাম হাতের কনুইয়ের উপরে বেশ আঘাত পেয়েছেন।
এ ব্যাপারে আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর৭১/এসঃ