লালমনিরহাটে এক কৃষাণীর বীজ সার আত্নসাতের অভিযোগ

0
257

আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার এক উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুট্টা চাষ প্রদর্শনীর সরকারী বীজ ও সার আত্নসাতের অভিযোগ তুলেছেন সুলতানা বেগম নামে এক কৃষাণী। রোববার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপ পরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগটি তদন্তে তদন্ত কর্মকর্তাও নিয়োগ করেছেন কৃষি বিভাগ। কৃষাণী সুলতানা বেগম আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর এলাকার হযরত আলীর স্ত্রী।

অভিযোগে জানা গেছে, ব্রান্ডিং ফসল হিসেবে ভুট্টার চাষাবাদ বাড়াতে প্রতি বছর লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদফর থেকে কৃষক কৃষাণীদের প্রদর্শনী দেয়া হচ্ছে। এ প্রদর্শনীতে প্রতি কৃষকের ৫০ শতাংশ হারে ওই এলাকার ৫ কৃষকের আড়াই একর জমিতে গ্রুপ করে রাজস্ব প্রদর্শনী দেয়া হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতি কৃষককে পরিমান মত বীজ, সার ও সেচ খরচ প্রদান করে সরকারের কৃষি বিভাগ।

গত মৌসুমে সারপুকুর উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (ব্লোকের সুপারভাইজার) মোকলেছ আলী ভুট্টা প্রদর্শনী দেয়ার কথা বলে কৃষাণী সুলতানা ও তার স্বামী হযরত আলীসহ ওই গ্রামের ৫জন চাষির জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছবি সংগ্রহ করেন। জেনে নেন কৃষকদের ব্যাংকের হিসাব নং। এ প্রদর্শনীর কিছু চাষি বীজ ও সার পেলেও গত ৮/৯ মাস ধরে ব্লোক সুপারভাইজারের দাঁড়ে দাঁড়ে ঘুরেও বীজ সার পাননি কৃষাণী সুলতানা বেগম ও তার স্বামী হযরত আলী। তবে সেচ বাবদ সরকারী ভাবে জনপ্রতি এক হাজার ৫শত টাকা জমা হয়েছে তাদের স্ব-স্ব ব্যাংক হিসাব নংয়ে। কিন্তু দীর্ঘ ৯ মাসেও পাননি ভুট্টা চাষের বীজ ও সার।

এ বীজ ও সার উদ্ধার ও আত্নসাৎকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি তুলে কৃষাণী সুলতানা বেগম লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপ পরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার অনুলিপি জেলা প্রশাসক থেকে কৃষি মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন দফতরে পাঠিয়েছেন।

কৃষাণী সুলতানা বেগম বলেন, সরকারী ভাবে আসা বীজ ও সার শেষ হয়েছে তাই পুনরায় এলে সেখান থেকে তাদেরকে বীজ ও সার দেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করেন ব্লোক সুপারভাইজার মোকলেছ আলী। আজ কাল বলে প্রায় ৮/৯ মাস নিষ্ফল ঘুরে অবশেষে জানতে পারেন তার বীজ ও সার উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে। পরে তাকে আগামী মৌসুমে পুনরায় প্রদর্শনী দেয়ার আশ্বাস দেন। তবে বিষয়টি কাউকে জানালে আগামীতে আর প্রদর্শনী থেকে শুরু করে কোন সহযোগিতা করা হবে না বলেও হুমকী দেন ব্লোক সুপারভাইজার মোকলেছ আলী।

সারপুকুর ব্লোকের অপর কৃষক সন্তোষ কুমার জানান, দীর্ঘ ৩০/৩৫ বছর ধরে ৪ দোন জমি চাষাবাদ করে সংসার চালাচ্ছেন। কোন দিন কৃষি বিভাগ থেকে প্রদর্শনী দুরের কথা একটা পরামর্শও পাননি। ব্লোক সুপারভাইজার যার কাছে ভাগ বা টাকা পান প্রতি বছর তাকেই প্রদর্শনী থেকে সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করেন।

অভিযুক্ত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোকলেছ আলীর সাথে কথা হলে ওই কৃষাণীর নামে প্রদর্শনী থাকার বিষয়টি স্বীকার করলেও বীজ সার না পাওয়া প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি তিনি।

আদিতমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন অফিসার কৃষিবিদ আলীনুর রহমান জানান, তার যোগদানের আগের প্রদর্শনী হওয়ায় বিষয়টি তার জানা নেই। তবুও অভিযোগটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

লালমনিরহাটর কৃষি সম্প্রসারন অধিদফতরের উপ পরিচালক বিদু ভুষন রায় জানান, কৃষাণীর লিখিত অভিযোগটি তদন্ত করতে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here