লালমনিরহাটের দুর্গম সীমান্ত পরিদর্শন করলেন বিজিবির মহাপরিচালক

0
296

আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট : বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের নবনিযুক্ত মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম নিজে মটরসাইকেল চালিয়ে তিস্তা ও ধরলার দর্গম সীমান্তপথ পরিদর্শন করেছেন। শনিবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউনিয়ন সীমান্তে অবস্থিত রংপুর-৭বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঠ্যাংঝাড়া বিজিবি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
সীমান্ত পরিদর্শন শেষে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম এনডিসি, পিএসসি নিজে মটরসাইকেল চালিয়ে প্রায় চার কিলোমিটার তিস্তার দূর্গম চর এবং ভাঙা রাস্তা পথ অতিক্রম করে নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার টেপা চরখড়িবাড়ী সীমান্ত ক্যাম্পে যান। পরে তিনি সীমান্ত এলাকা ও বিজিবি ক্যাম্প পরিদর্শন করে উপস্থিত স্থানীয় লোকজনের সাথে এক শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসী বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলামকে কাছে পেয়ে চরখড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্প থেকে ঠ্যাংঝাড়া বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার একটি রাস্তা ও তিস্তার ভাঙন রোধ করতে বাঁধ নির্মাণের দাবী করেন। জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক বিষয়টি সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে স্থানীয় জনতাকে আশ্বাস দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিজিবির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের (রংপুর জোন) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাহিদুল ইসলাম খাঁন, পরিচালক (অপারেশন-রংপুর জোন) লে. কর্নেল হাসান মোর্শেদ, বিজিবির রংপুর সেক্টর পরিচালক কর্নেল আজিজুল কাহার, রংপুর-৭বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লে. কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাট-১৫বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-পরিচালক (টুআইসি) মেজর মাসুম জিয়া বিন কুদ্দুস, রংপুর-৭বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-পরিচালক (টুআইসি) মেজর মুহিত উল আলম, মেজর আনোয়ার হোসেন ও টেপাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহীন উপস্থিত ছিলেন। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে চরখড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্প থেকে আবারও নিজেই মটরসাইকেল চালিয়ে ঠ্যাংঝাড়া বিজিবি ক্যাম্পে ফেরত আসেন বিজিবি মহাপরিচালক। এরপর সড়ক পথে নিজের গাড়ীতে চড়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়ন সীমান্তে অবস্থিত রংপুর-৭বিজিবি ব্যাটালিয়নের ডাঙাটারী বিজিবি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং বিজিবি সৈনিকদের সাথে মধ্যাহ্নভোজ করেন।
এরআগে বিজিবির সৈনিকদের সাথে আলোচনা করেন। পরে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্প পরিদর্শন করতে এসে জানতে পারলাম গাড়ী চলাচলের রাস্তা নেই। সেজন্য মটরসাইলেকে করেই ঘুরে দেখলাম। এতে কষ্ট হয়নি। আনন্দ পেয়েছি। আমার লোকজনের চলাচলের পথটা কতটা কঠিন, তা দেখলাম। এসব সরকারের উচ্চ মহলে তুলে ধরার চেষ্টা করবো।’
তিনি আরো বলেন, ‘বিজিবি-বিএসএফের চমৎকার সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আমরা মানবিক সীমান্ত ব্যবস্থাপনা তৈরির চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে সীমান্ত হত্যা আশাব্যঞ্জকভাবে কমেছে। আমরা সীমান্তে একজন নিরীহ মানুষেরও হত্যা চাই না। বিএসএফও একমত হয়েছে।’
সীমান্তের লোকজনকে বিনাপাসপোর্টে অহেতুক সীমান্তে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘বিজিবি আলোকিত সীমান্ত ব্যবস্থা চালু করেছে। প্রয়োজনে লালমনিরহাটেও আলোকিত সীমান্ত চালু করা হবে। আগের তুলনায় মানুষ অনেক সচেতন হয়েছে। আমরা আরো সচেতনতা সৃষ্টি করতে চাই। এতে গণমাধ্যমেরও ভূমিকা রাখতে হবে। স্মার্ট সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বদলে দিতে পারে চোরাকারবারী। আমরা সকলে চোরাকারবারী প্রতিরোধ করে নিজেরা সমৃদ্ধশালী হবো।’ পরে ডাঙাটারী বিজিবি ক্যাম্প থেকে বিজিবি মহাপরিচালকসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ সড়কপথে তিস্তা ব্যারাজ হয়ে রংপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।
খবর ৭১/ এস:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here