লক্ষ্মীপুরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সবজি উৎপাদন

0
593

খবর৭১ঃচলতি শীত মৌসুমে লক্ষ্মীপুরে সবজি উৎপাদন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। স্থানীয় কৃষি-সম্প্রসারণ বিভাগের হিসাব মতে এ বছর লক্ষ্মীপুরে ৪ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাক-সবজির আবাদ হয়েছে। এতে উৎপাদিত শাক-সবজির পরিমান প্রায় ৬৫ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২০০ কোটি টাকারও বেশি।
রামগঞ্জে ৫ হাজার গাছের চারা বিতরণ করা হবে
জানা যায়, এখানে উপযোগী মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার শাক-সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে কৃষকরাও পেয়েছেন আশানুরূপ মূল্য। এতে লক্ষ্মীপুরের কৃষকরাখুশি। এতে তারা যেমন সন্তুষ্ট হয়েছেন তেমনি গ্রামভিত্তিক স্থানীয় অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হয়েছে।

তবে গেল বছর একই মৌসুমে অসময়ে বৃষ্টি হওয়ায় লক্ষ্মীপুরে শাক-সবজিসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এবার গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে কিছুটা লাভের দেখা পেয়েছেন কৃষকরা। যে কারণে এসব কৃষকদের চোখে-মুখে এবার সন্তুষ্টির হাসি ফুটে উঠেছে।

লক্ষ্মীপুর জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলায় এবার ব্যাপকহারে শাক-সবজির আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ১ হাজার ৩০০ হেক্টর, রায়পুরে ১ হাজার ৭৫ হেক্টর, রামগঞ্জে ৮০০ হেক্টর, রামগতিতে ১ হাজার ২০০ হেক্টর ও কমলনগরে ৩১০ হেক্টর জমিতে শাক-সবজির উৎপাদন হয়েছে।

উৎপাদিত শাক-সবজির মধ্যে মুলা, লালশাক পালংশাক, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজর, লাউ, বরবটি, ওলকপি, মিষ্টিকুমড়া, করলা, শিম, ঢেঁড়স, শসা ও ধুন্দুল উল্লেখযোগ্য। এতে উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৬৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। যার গড় মূল্য প্রায় ২১২ কোটি টাকা।

সূত্রে আরও জানা যায়, বর্তমান বাজারে উৎপাদিত ধানের চেয়ে শাক-সবজির দাম বেশি, লাভও বেশি। যে কারণে লক্ষ্মীপুরের কৃষকরা শাক-সবিজ আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। প্রতিবছরই বাড়ছে সবজি আবাদ।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার আবিরনগর, টুমচর, শাকচর, মিয়ারবেড়ি, চর উভূতি, ভবানীগঞ্জ,আবদুল্যাপুর, তেওয়ারিগঞ্জ ,লাহারকান্দিসহ বিভিন্ন এলাকায় সারাবছর ধরে শাক-সবজির চাষ হয়। তবে শীত মৌসুমে আবাদ হয় ব্যাপক হারে। জেলার সবচেয়ে বড় সবজির হাট পিয়ারাপুরবাজার। সপ্তাহে চারদিন হাট বসে ওই বাজারে। স্থানীয় কৃষকরা সরাসরি হাটে তোলে কৃষিপণ্য। এসব পন্য এখানে পাইকারি দরে বিক্রি করেন তারা।

দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এসব শাক-সবজি ট্রাক-পিকআপ ভরে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করেন।

স্থানীয় সবজি চাষীরা জানান, ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যায় না। যে কারণে কৃষকরা সবজি চাষে ঝুঁকছেন। সফলও হয়েছেন। তবে লক্ষ্মীপুরে কাঁচামাল সংরক্ষণের জন্য সরকারি-বেসরকারি কোনো হিমাগার নেই। এজন্য বিপাকে পড়তে হয় তাদের।

ফসল কাটার পরপরই বিক্রি করতে হয়। যে কারণে তারা সারাবছর সংরক্ষণ করে শাক-সবজি বিক্রি করতে পারেন না। হিমাগার থাকলে তারা আরও বেশি সুফল পেতেন। আয়ের পরিমানু বেড়ে যেত। একারনে এখানে কাঁচচামাল সংরক্ষনের জন্য সরকারি উদ্যোগে হিমাগার স্থাপনের দাবি জানান তারা।

জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো.বেলাল হোসেন খান বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শাক-সবজির ভালো ফলন হয়েছে। শাক-সবজি উৎপাদনে প্রত্যেক ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকের কল্যাণে কাজ করছেন। অল্প খরচে বেশি ফসল উৎপাদনে কৃষকদের নানাভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন এসব কর্মকর্তারা। এছাড়া আবাদকালীন সময়ে আরও নানান ভাবে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।’ এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here