রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দায় বাংলাদেশের ওপর চাপালেন:সুচি

0
320

খবর৭১:আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের ভূমিকা বরাবরই ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ হলেও, দেশটির কথিত গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সু চি বাংলাদেশকেই উল্টো চাপে রাখার কৌশল নিয়েছেন। তিনি আবারও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দায় বাংলাদেশের ঘাড়ে চাপিয়েছেন। বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশের। মিয়ানমার তাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত।

মঙ্গলবার সিঙ্গাপুর সফররত সু চি এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। বক্তৃতায় মিয়ানমার নেত্রী রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয় অস্বীকার করেন। রোহিঙ্গা শব্দের বদলে ‘বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া’ মানুষ বলে আখ্যা দেন।

সু চি এমন সময় প্রত্যাবাসনের দায় বাংলাদেশের ওপর চাপালেন, যখন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এইআরডব্লিউ রাখাইনে ফেরা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ আনে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারের প্রতিশ্রুতির সত্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলেও মনে করছে ওই সংস্থা।

কয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না মিয়ানমার। রাখাইনে সেনা নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। বিশ্বজুড়ে আলোচিত এ সংকটের শুরু থেকেই বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবাসনের যাবতীয় পথ রুদ্ধ করে রেখেছে মিয়ানমার। পাশাপাশি দেশটি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ার দায়ও বাংলাদেশের ওপর চাপিয়ে আসছে।

বক্তৃতায় সু চি বলেন, ‘বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া জনগণের পুনর্বাসনের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে তাদের ফেরার ব্যাপারে সময়ের কাঠামো নির্ধারণ করা কঠিন। প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে দুই দেশকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

ঢাকাকেই প্রক্রিয়াটি শুরু করার জন্য প্রথম উদ্যোগ নিতে হবে দাবি করে সু চি বলেন, ‘বাংলাদেশকেই প্রত্যাবাসনকারীদের ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা কেবল সীমান্তে তাদের স্বাগত জানাতে পারি।’

তিনি আবারো জোর দিয়ে বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে আমি মনে করি বাংলাদেশকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কত দ্রুত পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে চায়।’

সু চি বলেন, রাখাইন রাজ্যের জন্য সন্ত্রাসবাদ একটি হুমকি, যা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। সেখানকার নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঝুঁকি থেকে যাবে। এই হুমকি শুধু মিয়ানমার নয়, এই অঞ্চল ও আশেপাশের অন্যান্য দেশের জন্যও ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

শান্তিতে নোবেলজয়ী সু চি মিয়ানমারে কথিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মুখ হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু দেশটির রাখাইনে বসবাসকারী রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর ওপর সেনা অভিযান ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ার বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে রয়েছেন তিনি।

জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন ও সেনা অভিযানকে ‘জাতিগত নিধনের পাঠ্যপুস্তকীয় উদাহরণ’হিসেবে অভিহিত করেছে। আর মিয়ানমার সেই অভিযোগ অস্বীকার করে নৃশংসতার জন্য রোহিঙ্গাদেরই দায়ী করে আসছে।

খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here