রোহিঙ্গাদের সঙ্গে থাকতে চায় না কেউ

0
254

খবর৭১ঃ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আর একই গ্রামে থাকতে চান না কেউ। রোহিঙ্গাদের তারা ভয় পান।’ মিয়ানমারের রাখাইনে বসবাসকারী ম্রো জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাবিরোধী এ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা নিধনের আজ এক বছর পরও গ্রামজুড়ে এখনও সেই একই কথা।

২৫ আগস্ট, রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞের এক বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে রাখাইনের এক গ্রাম পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের একদল সাংবাদিক। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সু চি সরকার কতটা অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে সেটা জানতেই এ বিশেষ টিম পাঠায় স্কাই নিউজ।

সেখানকার (রোহিঙ্গাদের ফেলে আসা গ্রাম) নতুন বাসিন্দারা তাদেরকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস সম্ভব নয়। রোহিঙ্গারা তাদের পুরনো ভূমিতে ফিরলে তারা গ্রাম ছেড়ে চলে যাবে। স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়েছে সরকার নিয়ন্ত্রিত সফরে তাদের পরিদর্শন করা ম্রো জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত গ্রামটির নেতৃস্থানীয়দের দাবি গত বছরের আগস্টে তাদের গ্রামের একটি স্কুলে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের হামলায় আটজন নিহত হন।

ওই স্কুল ভবনটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। হামলাকারীরা কেউ রোহিঙ্গা ছিল কিনা তা নিশ্চিত করতে না পারলেও ওই নেতারা বলছেন, তারা আর পরস্পরের কাছাকাছি বাস করতে চায় না। সান তুন নামে গ্রামটির এক নেতা বলেন, ‘তারা ফিরে এলে আমরা আমাদের গ্রাম ছেড়ে যাব। আমরা একটি বৈঠক ডেকে তাদের ফিরে আসার বিষয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে বয়স্ক ব্যক্তিরাও বলেছেন তারা তাদের (রোহিঙ্গা) সঙ্গে থাকতে চান না।’

সরকার নিয়ন্ত্রিত সফরে ম্রো জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত ওই গ্রামে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য নির্মিত দুটি কেন্দ্র পরিদর্শনও করে তারা। নাগাখুয়া প্রত্যাবাসন কেন্দ্রে থাকা কিছু মানুষ দেখিয়ে কর্তৃপক্ষ তাদের বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসা শরণার্থী বলে জানায়। বাসিন্দারা স্কাই নিউজকে বলেছেন, তারা কখনও বাংলাদেশে আসেইনি। বরং অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটকের পর মিয়ানমারের কারাগার থেকে তাদের এখানে এনে রাখা হয়েছে।

ওই লোকগুলোর দাবি, উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন থেকে সেনাসদস্যরা তাদের আটক করে আর বাংলাদেশ থেকে আসা বলে অভিযুক্ত করে। দেশটির অভিবাসন পরিচালক উ খিন খাইনও নিশ্চিত করেন, জানুয়ারিতে খুলে দেয়ার পর এ কেন্দ্রে কোনো প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। তার দাবি, ‘তারা এখনও ফিরছে না কারণ বাংলাদেশে পাওয়া সাহায্য উপভোগ করছে। আমরা এখানে অপেক্ষা করছি, তারা ফিরছে না- এ হল ঘটনা।’

গত বছর রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী সেনা অভিযানের জন্য ২৫ আগস্টে নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার (রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন) হামলাকে দায়ী করে থাকে মিয়ানমার। কিন্তু ওই বছরের অক্টোবরে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে উঠে আসে আগে থেকেই সেখানে জাতিগত নিধনের পরিকল্পনা নেয়া হয়।

ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গারা ফের নির্যাতিত : এইচআরডব্লিউ

বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের অনেকেই দেশে ফেরার পর ফের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক এই মানবাধিকার সংস্থার এশিয়া অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘দেশে ফেরা শরণার্থীদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা দেয়ার যে প্রতিশ্র“তি মিয়ানমার সরকার দিয়েছিল, প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের নির্যাতন সেই প্রতিশ্রুতিকে মিথ্যায় পর্যবসিত করেছে।’
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here