রোহিঙ্গাদের নামে এনআইডি: ইসির ১৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত

0
445
রোহিঙ্গাদের নামে এনআইডি: ইসির ১৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত

মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অপচেষ্টায় জড়িত রয়েছে নির্বাচন কমিশনের ১৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এদের বেশিরভাগই বিভিন্ন অপরাধে চাকরিচ্যুত।

নির্বাচন ভবনের সভাকক্ষে সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম।

প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে ভোটার তথ্যে সার্ভারের প্রেজেন্টেশন তুলে ধরে এনআইডি মহাপরিচালক বলেন, আমাদের মূল সার্ভার সম্পূর্ণ সুরক্ষিত আছে। অনেকেই না জেনে বলছেন-ইসির সার্ভারে রোহিঙ্গা ভোটার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ইসির মূল সার্ভারে আগামী ২৪ জানুয়ারির পূর্বে ঢোকার সুযোগ নেই। কেননা, আইন অনুযায়ী-মূল সার্ভারে তথ্য সন্নিবেশ করার আগে ১ জানুয়ারি খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর দাবি-আপত্তি নিয়ে নিষ্পত্তি করা হয়। আর ২৪ জানুয়ারির পর আবারও যাচাই করে মূল সার্ভারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাই চলমান হালনাগাদে রোহিঙ্গারা টেম্পোরারি সার্ভারে ঢুকেছে। ৬১ জনের মতো আমরা চিহ্নিত করেছি।

ব্রিগেডিয়ার সাইদুল বলেন, আমরা ফাঁদ পেতে একটি চক্রকে ধরতে সক্ষম হই। সামরিক বাহিনীতে আমরা যেটা অ্যামবুশ বলি। এতে আমাদের ডাবলমুরিং থানা নির্বাচন অফিসের কর্মচারী জয়নালকে প্রথমে চিহ্নিত করা হয়। এরপর অন্যদের চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সংখ্যাটা ১৫ জনের অধিক হবে না।

তিনি বলেন, যারা এই অপচেষ্টার সঙ্গে জড়িত, তাদের বেশিরভাগই ইসির থেকে পূর্বে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। তারা ইসির বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতেন। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের সকল উপজেলা কর্মকর্তা এবং যারা আমাদের লোকবল সাপ্লাই দেয় তাদের বলেছি-পূর্বে চাকরিচ্যুতরা যেন ভোটার তালিকার কাজে কোনোভাবে সম্পৃক্ত হতে না পারে।

ব্রিগেডিয়ার সাইদুল ইসলাম বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা নির্দেশনা দিয়েছেন-জিরো টলারেন্স এগেইনস্ট করাপশন। তাই আমরা শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছি। ইসি কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা পূর্বের যারা কাজ করেছেন, তাদের কেউ জড়িত থাকে সেটা দেখা হচ্ছে। আমরা চাকরিচ্যূতদের ওপর কঠোর নজরদারি চালানোর জন্যও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বলবো। রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অপচেষ্টায় যেই জড়িত হোক না কেন আমরা সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেব।

সংবাদ সম্মেলনে ইসির সিস্টেম ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, আগামীতে কেউ যাতে রোহিঙ্গাদের টেম্পরারি সার্ভারেও যুক্ত করতে না পারে, সেজন্য সকল কর্মকর্তার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে দিয়েছি। এছাড়াও সার্ভারে ঢোকার জন্য ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) মেসেজের ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ইসির এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) আবদুল বাতেন বলেন, ৬১ জনের মধ্যে আমাদের বিশেষ তদন্ত কমিটি একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। যার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের এক কর্মচারীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here