রুখে দাড়ানোর এখনই শেষ সময় : বি. চৌধুরী

0
495

খবর ৭১:অব্যাহত গুম-খুন-দুর্নীতি-দুবৃত্তায়নের বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়ানোর শেষ সময় বলে মন্তব্য করে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রশান হয়েছে আ.লীগ-বিএনপির জনপ্রিয়তা কমেছে। জনগন তাদের হাত থেকে মুক্তি চায়। জনগন নতুন শক্তির আকাংখা নিয়ে পরিবর্তনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

তিনি বলেন, রসিক নির্বাচনে সরকারী দল ভোট কারচূপি করতে পারে নাই। এ কারণেই তাদের পরাজয় স্বীকার করে নিতে হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে জনগন। দেশবাসী জনগনের পক্ষের রাজনৈতিক শক্তির পথ চেয়ে আছে। আর যুক্ত ফ্রন্ট জনগনের সেই কাংঙ্খিত মুক্তি সংগ্রামে নেতৃত্ব দিবে।

শুক্রবার বাংলাদেশ ফটোজর্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জন দল (বিজেডি) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বি. চৌধুরী বলেন, সরকারী দলের প্রায় সকলেই দুর্নীতিতে আচ্ছাদিত। দুর্নীতি এখন এক মহাব্যাধিতে পরিনত হয়েছে। এই ব্যাধির বিরুদ্ধেই সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যত ধ্বংস করতে প্রশ্নপত্র ফাঁস, নারী-শিশু ধর্ষন, হত্যা-গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে জনজীবনে অস্থিরতা সৃষ্টিকারী এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই।

তিনে দুই মেরুর লুটেরাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে বিজয়ের চেতনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

বিজেডি’র চেয়ারম্যান ডাঃ এস.এম শাজাহান এর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডি’র সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীরপ্রতীক, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি শেখ আবদুল নূর, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, জনদলের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক আতিকুল ইসলাম, আবুল হাশেম সরকার, ক্যাপ্টেন (অব.) রফিক আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সেলিম আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইকবাল হাসান, হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক জনদলের সদস্য সচিব মিলন বসু, শ্রমিক জনদলের আহ্বায়ক এমরান প্রমুখ।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মিথ্যুক, ভন্ড, প্রতারকরা বর্তমানে রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছে। এদর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই যুক্তফ্রন্ট। এই ফ্রন্ট মানুষের মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্ব দিবে।

তিনি বলেন, মানবতার চূড়ান্ত অবমাননা চলছে। গণতন্ত্র নেই, মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নেই। দুই বৃহত দল দেশটাকে নিরাপত্তহীন করে তুলেছে। সরকারের মন্ত্রী-এমপি আর নেতাদের নেতৃত্বে চলছে ব্যাংক লুন্ঠন। আর রাজপথের বিরোধী দল নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। তারা সরকারের বিরুদ্ধে জনগনের দাবীর পক্ষে মাঠে নামছে না। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে তাদের কোন কর্মসূচী নাই।

তিনি আশংকা প্রকাশ করেন দুই বৃহত দল দেশটাকে আবারো সংঘাতের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে।

আবদুল মালেক রতন বলেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও জাতির ভাগ্যের পরিবর্তন হয় নাই। দুই মেরুর রাজনীতিতে লুটেরারা ভর করে দেশকে লুন্ঠনে ব্যস্ত। এই অবস্থা থেকে দেশ-জাতিকে মুক্তি দিতে প্রয়োজন গণআন্দোলন।

হাবিবুর রহমান তালুকদার বীরপ্রতীক বলেন, স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধারা দেশ পরিচালনায় অংশ নিতে পারে নাই। বরং ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা পাকিস্তানের অনুগত ছিল তারাই ১৬ ডিসেম্বরের পর দেশপরিচালনা করেছে। আর এই কারণেই বিজয়ের চেতনা বাস্তবায়িত হয় নাই।

গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার সপক্ষশক্তিকে মনে রাখতে হবে, মানুষের চেতনার বিপ্লব সম্পন্ন করতে না পারলে প্রকৃত অর্থে বিজয়ের চেতনাকে প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে না। তাই একটি সচেতন ও সংস্কৃতিমনস্ক জাতি তৈরির ওপর সর্বাগ্রে জোর দিতে হবে। শুধু অর্থনৈতিক মানদণ্ডে উন্নয়নের বিচার করতে গেলে তা হবে বাংলাদেশের জন্য আত্মঘাতী।

তিনি বলেন, বিজয়ের চেতনা বাস্তবায়নকারী শক্তি হলো দেশের গণতান্ত্রিক শক্তি। যারা সবচেয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করতে পারেন। কিন্তু, দু:খ জনক সত্য হলো তাদের অধিকাংশই এখন ক্রীতদাসে পরিণত হয়েছে। তাদের চোখ-মুখ বন্ধ, তাদের হাত নিশ্চল, তাদের কান বধির এবং তাদের বিবেক বন্দি। এটা জাতির জীবনে ভয়াবহ অশনিসঙ্কেত। এই বিপর্যয় থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে দরকার তারুণ্যের শক্তিকে সঠিক পথে পরিচালনা করা।

স্বাগত বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী বি.চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্টের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষায় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষায় স্বৈরতন্ত্রকে হটাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডাঃ এস.এম শাজাহান বলেন, বীরশ্রেষ্ঠ সন্তানেরা দেশ বিজয় করেছে ঠিকই; কিন্তু প্রকৃত বিজয়ের স্বাদ মানুষ এখনো পায়নি। কারণ, দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিরতায় ভুগছে। দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই মহান মুক্তিযোদ্ধা বীর শহীদদের বিজয়ের স্বপ্ন স্বার্থক হবে।

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here