রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত ও প্রতিরক্ষা মূল লক্ষ্য

0
459
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত ও প্রতিরক্ষা মূল লক্ষ্য

খবর৭১ঃ প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন ‘নিরাপত্তা-সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি’কে সার্বিক সহায়তা দিতেই গঠিত হয়েছে ‘জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত সেল’ (এনএসসি)। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীন গঠিত এ সেল দেশের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।

যেখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। এমনকি দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেবে এ সেল। প্রয়োজনে মন্ত্রিসভার বিবেচনার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন করবে সেলটি।

তবে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয় সমন্বয় করতে জননিরাপত্তা বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব/যুগ্ম সচিবকে ফোকাল পয়েন্ট নিয়োগ করা হবে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

সূত্র আরও জানায়, নবগঠিত এই সেলের জন্য বছরে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। সেলের জন্য কেনা হচ্ছে তিনটি গাড়ি। সেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ব্যবহারের জন্য ৯১ লাখ ৬৬ হাজার টাকার ২৭০০ সিসির একটি জিপ কেনা হচ্ছে।

সেল প্রধানের স্টাফ অফিসারের জন্য কেনা হচ্ছে ১৬০০ সিসির একটি সিডান কার। এ ছাড়া অন্যান্য স্টাফের ব্যবহারের জন্য ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি মাইক্রোবাস কেনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেলের নতুন অফিস স্থাপন করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।

রোববার প্রথম কার্যদিবসের অফিস করেছেন সেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদ্য সাবেক কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

অফিস শেষে এদিন সন্ধ্যায় তিনি বলেন, আজই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যোগদান করে প্রথম অফিস করেছি। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই হবে এ সেলের প্রধান কাজ। আশা করছি, সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে দায়িত্ব পালন করতে পারব, ইনশাআল্লাহ।

৩ সেপ্টেম্বর মো. আছাদুজ্জামান মিয়াকে এ সেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা করে তিন বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় সরকার। জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেড-১ পদে বেতন-ভাতা পাবেন সেলপ্রধান। জানা গেছে, ১৩ আগস্ট ডিএমপি কমিশনারের চাকরির মেয়াদ শেষ হলে সরকার এক মাসের জন্য একই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়।

আছাদুজ্জামান মিয়া ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি ডিএমপির ২৭তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন এবং বিভিন্ন ইউনিটে কৃতিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ পেশাগত জীবনে তিনি সুনামগঞ্জ, পাবনা ও টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার এবং রেলওয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন।

বগুড়ায় প্রথম এপিবিএনের কমান্ডিং অফিসার, অতিরিক্ত ডিআইজি ও নোয়াখালী পুলিশ ট্রেনিং কেন্দ্রের কমান্ড্যান্টের দায়িত্বও পালন করেছেন। এ ছাড়া হাইওয়ে, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা রেঞ্জে দায়িত্ব পালন করেন আছাদুজ্জামান মিয়া। দেশ-বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও তিনি বাংলাদেশ পুলিশের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১১ জুলাই সরকারের প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় ‘জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সেল’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ৮ জন এ সেলে কাজ করবেন। তাদের মধ্যে একজন প্রধান নির্বাহীর স্টাফ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

যিনি সরকারের সিনিয়র সহকারী সচিব বা সহকারী সচিব পদমর্যাদার হবেন। যিনি জাতীয় বেতন স্কেলের ৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা। থাকবেন একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, একজন কম্পিউটার অপারেটর, একজন অফিস সহায়ক ও তিনজন গাড়িচালক। প্রতিষ্ঠানটির জন্য রোববারই ৩টি গাড়ি কিনতে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

এর আগে ২২ মে প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে ২৯ সদস্যের নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি পুনর্গঠন হয়। এই কমিটির ৪ দফা কার্যপরিধি রয়েছে। কার্যপরিধির মধ্যে রয়েছে ১. দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যাবলি ও কার্যক্রমের পুনঃনিরীক্ষণ (রিভিউ)।

২. দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতির মূল্যায়ন ও পুনঃনিরীক্ষণ। ৩. দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়াদির ওপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান ও প্রয়োজনবোধে মন্ত্রিসভার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন। ৪. সংশ্লিষ্ট অন্যসব বিষয়াদি।

কমিটির সদস্যরা হলেন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, পররাষ্ট্র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, প্রতিরক্ষা সচিব, অর্থ সচিব, আইন সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শক, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদফতরের মহাপরিচালক, ফোর্সেস ইনটেলিজেন্সের মহাপরিচালক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের মহাপরিচালক।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here