খবর ৭১: নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত কয়েকদিনের ছাত্র বিক্ষোভের জের ধরে এবার ‘অঘোষিত ধর্মঘট’ ডেকে পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঢাকায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে টানা অষ্টম দিনের মতো গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে।হাজার হাজার কর্মজীবী মানুষ সড়কে দাড়িয়ে তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করছেন গণপরিবহনের জন্য। দীর্ঘ অপেক্ষার পরও মিলছে না কাঙ্খিত যানবাহন। এতে চরম দেশজুড়ে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ পৌঁছেছে চরমে।
দেশের প্রায় সব জেলার বাস বন্ধ রয়েছে। নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে গত শুক্রবার থেকে রাজশাহী থেকে সব আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে সন্ধ্যা থেকে নৈশকালীন বাসগুলো চলছিল। রোববার থেকে রাতেও বাস চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে রাজশাহী থেকে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
আজও ভোর থেকেই হাজার হাজার অফিসগামী যাত্রী এই ভিআইপি সড়কে অপেক্ষা করলেও দেখা মিলছে না কোনো ধরনের গণপরিবহনের। হাউজ বিল্ডিং থেকে বিমানন্দর মোড়, খিলক্ষেত, বনানী ও মহাখালীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা গেছে, হাজার হাজার অফিসগামী যাত্রী বাসের জন্য বসে দাড়িয়ে অপেক্ষা করছেন বাসের জন্য।
রিকশা-ভ্যানে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও স্বস্তি নেই। নাকাল হয়েই তিনি গত কদিন অফিস করছেন। যেখানে বিশ টাকা ভাড়ায় বাসে যাতায়াত করেন সেখানে তার খরচ হচ্ছে এখন দুই থেকে তিনশত টাকা।
রাজধানীর সড়কে কোনো বাস চলাচল করছে না। প্রাইভেট কার, সিএনজি অটোরিকশা আর রিকশায় করেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। সিএনজি অটোরিকশা আর রিকশার অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে অনেকে আবার রওয়ানা দিয়েছেন পিকআপ ভ্যানে চড়ে।
একই অবস্থা ফার্মগেট ও কারওয়ানবাজার মোড়ের। সেখানেও দেখা গেছে হাজার অফিসগামী যাত্রীরা বাসের অপেক্ষায়। গণপরিবহন কয়েকদিন ধরে বন্ধ থাকলেও এভাবে কেন অপেক্ষা বাসের জন্য।
উত্তরে অনেক যাত্রী জানান, প্রতিদিন সকালে নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে যেতে হয়। এভাবে বাস বন্ধ রাখার কোনো কারণ খুজে পাচ্ছেন না বলে যাত্রীরা অভিযোগ করছেন।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের মতো মহাখালী, সায়েদাবাদ, গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে রাতেও কোনো আন্ত:নগর ও দূরপাল্লার বাস ঢাকার বাইরে চলাচল করেনি। টার্মিনালগুলোতে গাদাগাদি করে সাজিয়ে রাখা হয়েছে সব ধরনের বাস।
উল্লেখ্য, ২৯ জুলাই রোববার দুপুরে কালশি ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখে জাবালে নূরের বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রমিজ উদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী। এ ছাড়া আহত হয় আরও ১৩ জন শিক্ষার্থী। এরপর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।