রমজান দেড় মাস বাকি সৈয়দপুরে হঠাৎ ফলের বাজার চড়া, বিপাকে ভোক্তারা

0
1483

মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
রমজান আসতে এখনও দেড় মাস বাকি থাকলেও তার আগেই রোজার অন্যতম উপকরণ আমদানী নির্ভর বিভিন্ন ফলমূলের সংকট দেখা দিয়েছে ফলের মোকাম সৈয়দপুরে। ফলে আপেল, কমলা লেবু, আঙ্গুর, খেজুর মালটাসহ অন্যান্য ফলের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। হঠাৎ করে এসব ফলমূলের মূল্য বৃদ্ধিতে খুচরা পর্যায়ের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে বাক বিপত্তি ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ রয়েছে রমজান মাসের ফলের বাজার চাঙ্গা রাখতে সৈয়দপুরে ফলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ পাইকারী মহাজনরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বাজারে দামের তাপ বাড়িয়েছেন। তবে মহাজনরা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন চাহিদার অনেক কম আমদানি হচ্ছে। দেশের বড় মোকাম চট্টগ্রাম বন্দরেই অস্বাভাবিক হারে ফল বেচা- কেনা হচ্ছে। আমদানি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থা চলবে বলে তারা আশংকা করছেন।
সূত্র জানায়, রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় প্রায় শতাধিক ফলের দোকান রয়েছে। আর ওইসব দোকানের ফলমূল সৈয়দপুর থেকেই খরিদ করে থাকেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। এজন্য সৈয়দপুরে গড়ে উঠেছে ফলের বড় মোকাম। আর এ মোকামেই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ফলমূল বেচাকেনা হয়ে থাকে।
সূত্র মতে, রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় চাহিদা মেটাতে প্রায় ১০/১২ গাড়ি ফল প্রয়োজন। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে আসছে মাত্র ৩/৪ গাড়ি। ফলে আমদানি কম ও চাহিদা বেশি থাকায় চরম সমস্যায় পড়ছেন পাইকারী ক্রেতা-বিক্রেতারা। ফলমূল কিনতে আসা খুচরা ব্যবসায়ীরা জানায়, গত ১৫ দিন আগে ২০ কেজি ওজনের হাড্ডি আপেল বিক্রি হতো ২ হাজার ১০০ টাকা কার্টুন, সেটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকায়, এছাড়া ২ হাজার ১০০ টাকার হানি আপেল ৩ হাজার ৩০০ টাকার স্থলে ২ হাজার ৭০০ টাকা, ১৫০ দানার শোসা কমলা ২ হাজার ১০০ টাকার স্থলে ২ হাজার ৩৫০ টাকা, ২০ কেজি ওজনের কেনু কার্টুন ১ হাজার ৫৫০ টাকার মূলে ১ হাজার ৮৫০ টাকা, ১ হাজার ৪০০ টাকার মালটা ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারে আপেল, কমলা, আঙ্গুর, মালটা, কেনু প্রতি কেজিতে ৪০ থেকে ৬০ টাকা বেশি দরে বিক্র হচ্ছে। তবে উন্নত মানের খেজুরের দাম স্বাভাবিক থাকলেও খোলা খেজুরের মূল্য বেড়েছে। বর্তমানে ৫৫ টাকা দরের ওই খেজুর ৬৫/৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে অস্বাভাবিক হারে ফল মূলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে ক্রেতাদের বাক বিতন্ডার ঘটনা ঘটেছে। বিক্রেতারা জানান, পাইকারী বাজারে মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় খুচরা পর্যায়েও দাম বেড়েছে। ফলে সাধারাণ ক্রেতারা বাজারের মূল্যবৃদ্ধির প্রসঙ্গটি না জানায় এমন আচরণ করছেন। হঠাৎ করে আমদানি ফলমূলের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কথা হয় পাইকারি ব্যবসায়ী বিসমিল্লাহ ফল ভান্ডারের মালিক হাজী মো: বাদশা মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, সারা দেশে প্রতিদিন আমদানি ফলের চাহিদা প্রায় ৬০ হাজার কার্টুন (প্রায় ১০০ গাড়ি)। কিন্তু সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনারে মাল আসছে চাহিদার প্রায় ১০ ভাগ। ফলে চাহিদা বেশি থাকায় বন্দরেই বেশী দামে মাল বেচাকেনা হচ্ছে। কোন কৃত্রিম সংকট নয়, আমদানি কম থাকায় বাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানি স্বাভাবিক হলে কেবল বাজারে ফলের মূল্য কমবে বলে জানান তিনি। তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা কিছু কারসাজি করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here