রমজানে ডায়াবেটিস রোগীদের করণীয়!

0
697

খবর৭১: শুরু হয়েছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান। শুধু আত্মশুদ্ধিই নয়, এ মাস আত্মনিয়ন্ত্রণেরও। রোজার অন্যতম লক্ষ্য মানুষের স্বাস্থ্যগত উন্নতি সাধন। অনেক রোগীই যে কোনো অবস্থায় রোজা রাখতে বদ্ধপরিকর। আবার অনেকেই নিজের মতো অজুহাত তৈরি করে রোজা না রাখার পক্ষে যুক্তি খোঁজেন। আসলে দীর্ঘস্থায়ী রোগেও রোজা রাখা সম্ভব। রোজা রাখলে অনেকে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় করেন।

ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা থাকা উচিত কি-না তা নিয়ে প্রায়ই আলোচনা হয়। রমজানের সময় রোজা পালন করা মানে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করা। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীরাও রোজা থাকতে পিছপা হন না। তবে ডায়াবেটিস থাকলে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি।

যেহেতু রোজা রাখলে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয় এজন্য অনেক সময় ডায়াবেটিস রোগীর শরীরে শর্করার পরিমাণ কমে যেতে পারে। এ কারণে রোজা শুরুর আগেই ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

যারা ডায়াবেটিসের জন্য ইনসুলিন ব্যবহার করেন রোজার সময় তা বন্ধ করা যাবে না। বরং সেহরি ও ইফতারের আগে ইনসুলিন নিতে হবে। তবে পরিমাণটা কেমন হবে তার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পরিমাপ করা উচিত। অনেকে মনে করেন, রোজা থেকে রক্তে শর্করা পরিমাপ করলে রোজা ভেঙে যায়। কিন্তু অনেক আলেমের মতে, এই ধারণা ঠিক নয়। রোজায় শরীরের পানি শূন্যতা দূর করার উপায় হলো, রাতে বেশি বেশি পানি পান করা।

ইফতারে বিকল্প চিনি দিয়ে ইসবগুলের ভুষি, তোকমা, লেবু, কাঁচা আম বা তেঁতুলের শরবত— এসব ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী। ডাব ছাড়া অন্যান্য মিষ্টি ফলের রস এ সময় না খাওয়াই ভালো। ইফতারির সময় কাঁচা ছোলার সঙ্গে আদাকুচি, টমেটো কুচি, পুদিনা পাতা খেতে পারেন।

ইফতারির পর অনেকে রাতে একেবারেই খান না- এটা ঠিক নয়। এই সময় হালকা মসলায় রান্না ছোট-বড় মাছ এবং সবজি নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে।

সেহরিতে রুটি অথবা ভাত খেতে পারেন। এগুলোতে থাকা কার্বোহাইড্রেট দীর্ঘক্ষণ শরীরে শক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। সেহরিতে মাছ ও সবজি খেতে পারেন। এই সময় দুধ অথবা ডাল থাকলে ভালো হয়। ইফতারে একসঙ্গে বেশি না খেয়ে অনেক খাবার ধাপে ধাপে খান। এতে রক্তে হঠাৎই শর্করার মাত্রা বেড়ে যাবে না।

যদি রোজা রাখা অবস্থায় কোনো ডায়াবেটিস রোগীর প্রসাবে সমস্যা, তীব্র মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, গা কাঁপা, চোখে ঝাপসা দেখা, মাথা ঘোরানো, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া— এসব সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ এসময় রক্তের সুগার অতিরিক্ত কমে যাওয়া (হাইপোগ্লাইসিমিয়া), সুগার অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া (হাইপারগ্লাইসিমিয়া), পানি শূন্যতা এবং ডায়াবেটিক কিটো এসিডোসিস সমস্যাগুলো হতে পারে। সূত্র: ডায়াবেটিস ডট সিও, ইউএসনিউজ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here