রংপুর-৩ উপনির্বাচনে চমক দেখাতে পারে বিএনপি

0
509
সিলেটে মহাসমাবেশর অনুমতি বিএনপির

খবর৭১ঃ রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে চায় বিএনপি। সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোজাফফর হোসেনের আকস্মিক মৃত্যুতে মনোনয়নের ক্ষেত্রে চুলচেরা হিসাব-নিকাশ চলছে দলটিতে।

নীতিনির্ধারকরা এমন কাউকে মনোনয়ন দিতে চান যিনি লাঙ্গলের আসনটিতে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে পারবেন। প্রয়োজনে দলের বাইরের কাউকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টির এক নেতার নাম আলোচনায় রয়েছে। এ বিষয়ে রংপুরের নেতাদের মতামতও নেয়া হচ্ছে। স্থানীয়রা ইতিবাচক মতামত দিলে এবং জাতীয় পার্টির ওই নেতার সম্মতি পাওয়া গেলে তাকেই দলীয় মনোনয়ন দেয়া হতে পারে।

তবে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, শেষ মুহূর্তে জাতীয় পার্টির ওই নেতা রাজি না হলে দল থেকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। এক্ষেত্রে প্রয়াত মোজাফফর হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া হোসেন ও ২০ দলীয় জোটের শরিক পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান রিটা রহমানের মধ্য থেকে কাউকে মনোনয়ন দেয়া হতে পারে। তারা দু’জনই দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন। প্রয়াত মোজাফফরের স্ত্রীকে মনোনয়ন দিয়েও চমক দেখাতে পারে হাইকমান্ড। এ দু’জন ছাড়াও দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন রংপুর মহানগর বিএনপির সহসভাপতি কাওসার জামান বাবলা ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু।

রংপুর-৩ আসনে আগামী ৫ অক্টোবর ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে উপনির্বাচনের তফসিল দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া যাবে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, তা বাছাই হবে ১১ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৬ সেপ্টেম্বর।

দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, রংপুর সদর বরাবরই লাঙ্গলের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এইচএম এরশাদ মারা যাওয়ায় পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। কারণ জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কেন্দ্রের কোন্দলের ছোঁয়া লাগতে পারে এই উপনির্বাচনেও। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও ওই আসনে দলীয় প্রার্থী দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শক্তিশালী প্রার্থী দেয়া হলে ধানের শীষের প্রার্থীর জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে দলের বাইরে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়া হলে নেতাকর্মীরা যাতে বিদ্রোহ না করে সে ব্যাপারে আগাম প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

সম্প্রতি রংপুর যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে তিনি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। নির্বাচনে প্রার্থী সম্পর্কে তাদের মতামত নেন। প্রায় সবাই স্থানীয় কাউকে মনোনয়ন দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। ভাড়াটিয়া কাউকে যাতে মনোনয়ন দেয়া না হয় সেই অনুরোধ জানান তারা। প্রার্থী বাছাই ও দলের ঐক্যসহ সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়নে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু কাজ করছেন।

স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি দফায় দফায় বৈঠক করছেন। জানতে চাইলে রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ধানের শীষের বিপুল বিজয় হবে। কিন্তু বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ সরকার নির্বাচন সিস্টেমটাই ভেঙে ফেলেছে। তারপরও আমরা নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি বলেন, ‘শনিবার (আগামীকাল) দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের বৈঠক আছে। সেখানেই প্রার্থী চূড়ান্ত করা হতে পারে। দলের বাইরে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়ার ব্যাপারে কিছু জানি না।’

জানা গেছে, জয়ের লক্ষ্যে রংপুর আসনে শক্তিশালী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। রংপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ?ফর হোসেনকেই সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়। স্থানীয় নেতাকর্মীরাও তাকে সামনে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। কিন্তু ২ সেপ্টেম্বর আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান মোজাফফর হোসেন। তার মৃত্যুর পর পাল্টে যায় হিসাব-নিকাশ। এরপর কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলকে রংপুর আসনে মনোনয়ন দেয়ার চিন্তা করে হাইকমান্ড। কিন্তু তিনি রংপুরে নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়ে দেন। এরপরই বিকল্প হিসেবে দলের বাইরে থেকে শক্তিশালী প্রার্থী দেয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here