যোগ্য নেতা হিসেবেই তারেক রহমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান: ফখরুল

0
262

খবর ৭১: এ ধরনের একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে তারা চেয়ারপারসন করলো। বিএনপি নাকি সবচেয়ে বড়, জনপ্রিয় দল। তাদের দলে কি একজন যোগ্য লোকও নেই?’- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন দলটির মহাসচিব মিজা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমান পার্টির কাউন্সিলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। দলের চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেবেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের- এটা বিএনপির গঠনতন্ত্রে আছে। আমাদের নেতা আমরা নির্বাচিত করেছি। যোগ্য নেতা বলেই তাঁকে নির্বাচিত করেছি। এটাতে আপনাদের বলার কিছু নেই, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’

বুধবার (২ মে) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক স্মরণ সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। সভাটির আয়োজন করে নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টু স্মৃতি সংসদ।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তারেক রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগের বলার কিছু নেই।’

এসময় তিনি অভিযোগ করেন, ‘ভিত্তিহীন মামলায় সরকার উচ্চ আদালতের মাধ্যমে তারেক রহমানকে সাজা দিয়েছে। বিচারিক আদালতে তাঁকে খালাস দেয়ায় সংশ্লিষ্ট বিচারককে দেশ ছাড়তে হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘উনি (তারেক রহমান) সাজাপ্রাপ্ত কোন মামলায়? যে মামলার কোনো ভিত্তি নেই, যে মামলায় তিনি খালাস পেয়েছিলেন। তাকে খালাস দেয়ায় ওই বিচারকের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা (আওয়ামী লীগ) সব সাজাপ্রাপ্ত লোকদের নিয়ে মন্ত্রিসভায় বসিয়ে রেখেছেন। আপনাদের মামলাগুলো নিজেরা তুলে নিয়েছেন। একটাও মামলা রাখেননি, সব তুলে নিয়েছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে (এস কে সিনহা) একটা রায় দেয়ার অপরাধে দেশ থেকে বের করে দিলেন। বলা হলো- উনার হাত নাকি অনেক লম্বা হয়ে গেছে। দেশ থেকে চলে যাওয়ার পর এখন দুর্নীতির মামলা দেয়া হচ্ছে।’

‘কয়েকজনকে ডিঙিয়ে তাকে প্রধান বিচারপতি বানালেন। তখন সুবিধা ছিল যে, তিনি আপনাদের পক্ষে রায় দিচ্ছিলেন, তাই না? বিচার বিভাগকে শেষ করে দিচ্ছেন। এবারও একজনকে ডিঙিয়ে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিয়েছেন। এই যদি করতে থাকেন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা কোথায়?’- যোগ করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘নিম্ন আদালতের সমস্ত ক্ষমতা নিয়ে নেয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয় ছাড়া কোনো বিচারপতির পোস্টিং, প্রোমোশন কিছুই হবে না। আপনাদের আইন মন্ত্রণালয়ের একজন বিশেষ কর্মকর্তার নির্দেশ ছাড়া কারো বিচার এবং জামিন হয় না। এভাবে বিচার বিভাগকে, দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছেন।’

দলের মহাসচিব আরও বলেন, ‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলাপ করছেন তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনবেন। এই ভয়গুলো আমাদের দেখাচ্ছেন কেন? দেশে যদি ফিরে আসতে হয়, উনি আসবেন। যেদিন উনি দেশে ফিরে আসবেন, সেদিন দেখবেন কোটি কোটি মানুষ উনাকে বরণের জন্য বিমানবন্দরে গিয়ে হাজির হয়েছে।’

অক্টোবরে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘জাতি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকলেই তফসিল ঘোষণা করতে হয়। আপনারা ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছেন। এই দেশের মানুষ আপনাদের অধীনে নির্বাচন বিশ্বাস করে না। আপনারা সরকারে থাকবেন আর নির্বাচন সুষ্ঠু হবে তা এ দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না।’

খালেদা জিয়াকে জামিন না দেয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এরকম মামলায় আপিল করার সঙ্গে সঙ্গে জামিন হয়ে যায়, কিন্তু খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়া হয়নি। অথচ আপনার (শেখ হাসিনা) মন্ত্রিপরিষদে তিনজন সাজাপ্রাপ্ত মন্ত্রী রয়েছে। একজনের ১৩ বছরের সাজা হয়েছে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইদ হাসান মিন্টুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, পিন্টুর স্ত্রী বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নাসিমা আক্তার কল্পনা প্রমুখ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here