যে কারণে সৌদি আরবে গণশিরশ্ছেদ

0
317

খবর৭১ঃ সৌদি আরবে সম্প্রতি গণশিরশ্ছেদ হওয়া অধিকাংশই ছিলেন দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ শিয়া সম্প্রদায়ের লোক। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে লড়াই চালিয়ে আসছিলেন তারা।

শুক্রবার মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের খবরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। শিরশ্ছেদ হওয়া এসব লোক আদালতের কাছে তাদের জীবন রক্ষার করুণ আবেদন করেছিলেন। কিন্তু দেশটির আদালত সেই আবেদন আমলে নেননি।

পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের শিয়া শহর আওয়ামিয়ার কেন্দ্রে বেশ কয়েক জনের শিরশ্ছেদ করা হয়েছে। ২০১১ সালের আরব বসন্তের প্রভাব পড়েছিল এই শহরটিতে।

বিখ্যাত শিয়া ধর্মীয় নেতা শেখ নিমর আল নিমরের শহর হচ্ছে এই আওয়ামিয়া। ২০১৬ সালে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করার আগেই তিনি ছিলেন সেখানকার একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪ জনের মামলা ছিল বিক্ষোভে অংশ নেয়া সম্পর্কিত। ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল সন্ত্রাসী সেল গঠনের। মঙ্গলবার ৩৭ জনের শিরশ্ছেদ কার্যকর করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। এদের মধ্যে তিনজন অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল। সৌদি আরব বলছে, তাদের বয়স কম হলেও তারা অপরাধ করেছে।

সিএনএনর কাছে থাকা আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, এসব সৌদি নাগরিকের সাজা কার্যকরের মূলভিত্তি ছিল তাদের স্বীকারোক্তি। তাদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা, সরকার বিরোধী প্রচার ও যৌনসম্পর্কিত অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অভিযুক্তদের মধ্যে হুসেইন মোহাম্মদ আল মুসাল্লাম নামের একজন আদালতে বলেন, জেরাকারীদের নিপীড়নের কারণে তিনি মারাত্মক হয়েছেন। তার নাক ও পা ভেঙে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের স্বীকারোক্তির নামে যা বলা হয়েছে, তার কোনো কিছুই সত্যি না। কিন্তু আমাদের দিয়ে যে জোর করে এসব বলানো হয়েছে, তার আমি প্রমাণ করতে পারবো না। কিন্তু দাম্মাম কারা হাসপাতালের মেডিকেল রিপোর্ট রয়েছে। তাদের আমি ডেকে আনার অনুরোধ করছি।

চলতি সপ্তাহে সৌদি আরবের ইতিহাসে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি শিরশ্ছেদ কার্যকর করার ঘোষণা দেয়ার বহু আগে তাদের কয়েকজন অভিযোগ করে বলেছেন, যারা আমাদের নির্যাতন করেছেন, তারাই আমাদের নামে মিথ্যা স্বীকারোক্তি লিখেছে। আমরা সম্পূর্ণ নিরপরাধ।

জেরাকারীদের হাতে নির্যাতিত হওয়ার প্রমাণ থাকার কথাও তাদের কয়েকজন বলেছিলেন। বিচারের নথিপত্রে দেখা গেছে, তাদের একজন আদালতে করুণা পাওয়ার প্রত্যাশায় বাদশাহ সালমান ও তার ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানের আনুগত্য প্রকাশ করেন।

তবে ২০১৬ সালে যখন বিচার চলছিল। তাদের সন্ত্রাস সংশ্লিষ্ট অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here