যাদের হৃদয়ে পাকিস্তান, তাদের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে

0
287

খবর ৭১:বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যাদের হৃদয় থাকে পাকিস্তানে, তারা বাংলাদেশে থেকে সব রকমের আরাম আয়েশ ফল ভোগ করবে আর অন্তরাত্মাটা পড়ে থাকবে ওখানে (পাকিস্তানে)। তাদের ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

পেয়ারে পাকিস্তান ওয়ালাদের থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে চলতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের যারা মন্ত্রী বানিয়েছিল, লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত পতাকা এদের হাতে তুলে দিয়েছিল, তাদের ব্যাপারে জাতিকে সচেতন থাকতে হবে। তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। জাতি যেন কোনদিন তাদের ক্ষমা না করে।

শনিবার বিকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বাংলা ভাষার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নাকি বাংলা ভাষায় পড়ানো হয় না। এটা কেন? কেন বাংলায় পড়ানো হবে না। আমরা দাওয়াতের কার্ডও এখন বাংলা ভাষায় লিখতে চাই না। মনে হয় এটা যেন ব্যাধির মতো ছড়িয়ে গেছে। এটা কেন হচ্ছে জানি না। বিয়ের কার্ডটাও কেন বাংলা ভাষায় লেখা হবে না। ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা, কাজেই আমরা ইংরেজি শেখার বিপক্ষে নই। কিন্তু,যে ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি তার চর্চা করবো না কেন? কাজেই বলবো, দ্বিতীয় ভাষা শিক্ষার ওপর অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। এতে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। তবে, সঙ্গে সঙ্গে মায়ের ভাষা—যে ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি তার চর্চাও থাকতে হবে। এ বিষয়ে পরিবার থেকেই উৎসাহিত করতে হবে।’

ইংরেজিতে রায় লেখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের রায় ইংরেজিতে লেখা হয়। আমাদের অনেকে আছেন ইংরেজি বোঝেন না। তার উকিল যা বোঝাবেন তাকে তা বুঝতে হচ্ছে। সেই উকিল সাহেব ঠিকমতো বোঝাতে পারছেন নাকি আরও কিছু টাকা খসানোর বা পকেট খালি করার জন্য অন্যভাবে বোঝাচ্ছেন তা কিন্তু তার মক্কেল বুঝতে পারেন না। তবে, এখন নিম্ন আদালতে মোটামুটি বাংলায় রায় লেখা শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন একটি সময় দেখেছি মানুষ নিজে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিতে সাহস পেতেন না। সরকারি চাকরি পেতে মুক্তিযোদ্ধা কথাটি লিখতেও ভয় পেতেন। কারণ, তাহলে চাকরি পাবেন না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এই অবস্থা বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়েছিল। তবে, দীর্ঘ ৯ বছর আমরা সরকারে থাকার কারণে এখন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে মানুষ গর্ববোধ করেন। এখন আর মানুষ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে ভয় পায় না। তারা এখন আর ভীত সন্ত্রস্ত হন না।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু জেলে বসে ভাষার আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার দিক-নির্দেশনা দিতেন। ১৯৪৮ সাল থেকে ভাষার জন্য আন্দোলন শুরু হয়। ৫২ সালে বুকের রক্ত দিয়ে তা আদায় করে ছাত্র-জনতা।

আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পাকিস্তানের প্রথম শাসনতন্ত্র প্রণয়ন হয়। ওই শাসনতন্ত্রে বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায়। ওই সময় ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়।

আমরা যা কিছু পেয়েছি সংগ্রামের মধ্য থেকে পেয়েছি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা আন্দোলনের পথ ধরে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেন। সেই সংগ্রামের পথ ধরে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। প্রতিটি অর্জনের পেছনে এদেশের জনগণের ত্যাগ রয়েছে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী এখন বাংলাদেশের ওপর দায়িত্ব পড়েছে মাতৃভাষাকে রক্ষা ও সংরক্ষণ করার আর আমারা এর জন্যই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউশন গঠন করেছি

খবর ৭১/ ই:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here