শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : বহুদিনের আশা ছিল যশোর-বেনাপোল এলাকা ঘুরে দেখব। অবশেষে সৌভাগ্য হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখানকার রাস্তার এমন খারাপ অবস্থা দেখব তা কখনো ভাবিনি। কেবল যশোর থেকে বেনাপোল পৌছাতে ৩০ মিনিটের রাস্তায় দেড় ঘন্টা সময় লাগল। স্বচক্ষে দেখলাম এলাকার মানুষের জন দূর্ভোগ। সেসাথে দেশের সর্ববৃহৎ স্থল বন্দর বেনাপোলে হওয়ায় জাতীয় অর্থনীতি আহরণে এ ভ্গংুর রাস্তাটি মারাত্বক হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। যার এখনি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। শুক্রবার বেলা ১২ টার সময় যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের বেহাল দশা সরেজমিনে দেখতে জাতীয় সংসদীয় উপ-কমিটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সড়কটি পরিদর্শনে এসে বেনাপোল পর্যটন মোটেলের এক আলোচনা সভায় একথা বলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন-সেতু মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির ৩নং সাব কমিটির আহবায়ক ও ১৬৫ কিশোরগঞ্জ ৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক।
বেনাপোল পর্যটন মোটেলে বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে মতবিনিময় সভায় সংসদীয় উপ-কমিটির সভাপতি রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক আরো বলেন, যারা উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করে তাদেরকে সামাজিক ভাবে বয়কট করতে হবে। এটা স্বাধীনতার মাস। দ্রুত এ মহা সড়কটি ৮ লেনের মাষ্টার প্লান করে ৬ লেনে উন্নতি করা হবে বলেও জানান তিনি।
উক্ত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির ৩নং সাব কমিটির সদস্য ও ১২৭ পিরোজপুর ১ আসনের এমপি এ,কে,এম,এ আওয়াল(সাইদুর রহমান) বলেন এক সময়ে বিশ্ব নেতারা বাংলাদেশকে তলা বিহীন ঝুড়ি বলে আখ্যা দিলেও আজ তারা উন্নয়ন কাকে বলে তা জনার জন্য বাংলাদেশকে দেখার পরামর্শ দেন। যার সব কিছুই সম্ভব হয়েছে জাতীর জনকের কণ্যা শেখ হাসিনার উন্নয়নশীল চিন্তাভাবনার আলোকে। বঙ্গবন্ধু কণ্য দেশের সর্বস্তরে উন্নয়ন করেছেন। যা দেখার মতো এবং অনুকরণীয়। সেখানে বাংলাদেশের সর্ববৃহত্তম প্রবেশদ্বার বেনাপোল। এপথ দিয়ে কেবল দেশের মানুষ নয়, বর্হিবিশ্বের অধিকাংশ মানুষ স্থল পথের এ বৃহৎ প্রবেশদ্বার দিয়ে যাতায়াত করেন। যেকারণে যশোর-বেনাপোল রাস্তাটি ৪ লেন নয়, ৬ লেন নয়, প্রধাণ মন্ত্রীর কাছে ৮ লেনের প্রস্তাব করা হবে। তিনি বঙ্গবন্ধু কণ্যা। উন্নয়ন কাজে কখনো তিনি পিছপা হন না। আা করি অতি দ্রুত যশোর-বেনাপোল রোডের কাজ বাস্তবায়ন হবে।
এসময় ৮৫, যশোর-১(শার্শা)’র সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শেখ আফিল উদ্দিন বলেন, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন বাংলার মানুষকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। আজ তার গুণধর কণ্যা, দেশের বারংবার নির্বাচিত সফল প্রধাণ মন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন মাথা উঁচু করে বিশ্বের দরবারে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের বাসিন্দা হিসেবে দেশকে পরিচিতি লাভ করাচ্ছেন ঠিক সেই মুহুর্তে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিরা, যারা কখনো এদেশের উন্নয়ন চাইনি, তারা যেমনভাবে স্বাধীনতাকে বাধাগ্রস্থ্য করার চেস্টা করেছিল, ঠিক তেমনিভাবে কিছু কূমন্ত্রনা নিয়ে, রাস্তার দুপাশের মৃতপ্রায় কিছু গাছকে পুজি করে সেগুলোকে রক্ষার দাবিতে পরিবেশবাদীর ব্যানারে উন্নয়নের এই মহা পরিকল্পনার অর্থনৈতিক রোর্ড, তথা যেখানে দেশের সর্ববৃহৎ স্থল বন্দর অবস্থিত, যেখান থেকে সরকার বছরে কয়েক’শ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করেন, সেই যশোর-বেনাপোল সড়ককে মহামান্য হাইাের্টে রিট করে স্থগিত করে রেখেছে। যার এখনি উন্নয়ন করা না হলে ব্যবসায়ীরা এপথ দিয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়াসহ অনেক হুমকির মুখে পড়বে বেনাপোল বন্দর।
এসময় ৮৫, যশোর-২’র সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিরা এখনো সক্রিয়ভাবে দেশের সকল উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ্য করার চেষ্টা করছে। তাই, তারা যাতে কোনভাবে যশোর-বেনাপোল সড়কের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ্য করতে না পারে সেজন্য তিনি সংশ্লিষ্ঠ সংসদীয় কমিটিকে আহবান জানান।
উক্ত আলোচনান্তে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব ফজলুল ইসলাম যশোর-বেনাপোল সড়কটির কাজ যাতে দ্রুত সমপ্রসারণ করা যায় সেলক্ষ্যে তিনি সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।
এসময় সংসদীয় উপকমিটির নেতৃবিন্দ আরো বলেন, এ সড়কটি ৮ লেনের মাষ্টার প্লান করে ৬ লেনে উন্নতি করা হবে। এছাড়া সড়ক নির্মানের পর দু’পাশ দিয়ে বনায়ন করা হবেও বলে জানান তারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তযোদ্ধা সিরাজুল হক মঞ্জু, সাধারণ সম্পাদক ও বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব নুরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা, কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক ও বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন, বেনাপোল ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব বজলুর রহমানসহ প্রশাসনের সকল দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ।
এদিকে সংসদীয় উপকমিটির আগমন উপলক্ষ্যে যশোর-বেনাপোল মহা সড়কটি সংস্কারসহ ৬ লেনে উন্নিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষসহ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্যরা এ সড়কে মানববন্ধন করেন।
খবর ৭১/ ই: