যশোরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা

0
350

খবর৭১:জাহিরুল ইসলাম মিলন।।যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ
যশোরে ধানের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি নাবিতে বৃষ্টিপাতের কারণে অন্য ফসলের আবাদ কমে যাওয়ায় যশোরের কেশবপুরে চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। পর পর দুই বছর বন্যায় নিঃস্ব হয়ে যাওয়া কৃষক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বোরো আবাদে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। খরচ কমাতে পুরুষের পাশাপাশি এলাকার নারীরাও মাঠে নেমেছে। সার ও বীজ রয়েছে কৃষকের হাতের নাগালে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি বছর প্রায় ২৩২ কোটি টাকার প্রায় এক লাখ মেট্রিকটন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

কেশবপুরের প্রধান ৩ নদী হরিহর, বুড়িভদ্রা ও আপারভদ্রা নদীর নাব্যতা না থাকায় উপচে পড়া পানিতে সৃষ্ট বন্যায় এ উপজেলার আউশ আমন, শাক সবজি পানসহ অন্যান্য ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়ে লক্ষাধিক মানুষ। পর পর দুই বছর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষেরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কৃষক শ্রেণীর মানুষ। বন্যায় নিঃস্ব হয়ে যাওয়া কৃষক ক্ষতি কাটিয়ে উঠে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে তাই কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে বোরো আবাদে। খরচ কমাতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও মাঠে নেমেছে বোরো আবাদে সহযোগিতার জন্যে। কৃষকেরা সনাতন পদ্ধতির লাঙ্গল গরুর পাশাপাশি পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষের কাজ করেছেন। তাই কৃষকরা সময়মত সার ও বীজ ক্ষেতে প্রয়োগ করতে পারায় ধানের চারা সবুজ বর্ণ ধারণ করেছে। ডিজেল ও বিদ্যুতের সরবরাহ রয়েছে কৃষকের চাহিদা মত। সব মিলিয়ে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিলেও শেষ মুহূর্তে ক্ষেতে ব্রাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু ধানের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি নাবিতে বৃষ্টিপাতের কারণে যে সমস্ত জমি অনাবাদি ছিল তাও কৃষকরা বোরো আবাদের আওতায় আনায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এবার ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে বলে উপজেলা কৃষি অফিস দাবি করছে। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর বেশী। এ থেকে ২৩২ কোটি টাকার প্রায় এক লাখ মেট্টিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এলাকার কৃষকেরা বলছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বোরো আবাদ করতে তাদের অর্থনৈতিকভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। চারা লাগানো থেকে ধান কাটা পর্যন্ত যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তা হলে তারা বন্যার ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে উঠবে।

কেশবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মহাদেব চন্দ্র সানা জানান, এ উপজেলায় বোরো আবাদ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মাঠে আদর্শ বীজতলা তৈরি হওয়ায় এবার ৫০০ মেট্টিক টন বীজ সাশ্রয় হয়েছে। ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা বোরো আবাদে ঝুঁকে পড়েছে। কেশবপুরে কয়েক বছর ধরে বন্যায় হওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাষী পর্যায়ে উন্নত জাতের বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে এ বছর ব্রি-ধান-৬৩, ৬৭, ৭৪ ও ৮১ জাতের নতুন ধান আবাদ হয়েছে। তবে গত বছরের মত এ বছরও যদি নাবিতে শীত পড়ে তাহলে ক্ষেত ব্রাস্ট রোগে আক্রান্ত হতে পারে। যে কারণে কৃষকদের বেশী মাত্রায় পটাশ সার ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here