যশোরের বেনাপোল সীমান্ত ও স্থলবন্দর পরিদর্শন বিজিবি মহাপরিচালকের

0
301

জাহিরুল ইসলাম মিলন,যশোর জেলা প্রতিনিধি:
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মায়ানমারের সাথে আমাদের ভালো সম্পর্ক। তাদের সাথে সমন্বয় করে সমন্বিত ভাবে সীমান্তে চোরাচালানসহ সব ধরনের অপরাধ দমনে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বেনাপোলে সফলতার সাথে ক্রাইম জোন স্থাপন করেছি। ফলে এ অঞ্চলে অপরাধ দমন সম্ভব হয়েছে। বিএসএফের সাথে সমন্বয় করেই অপরাধ দমন সম্ভব হয়েছে।

‘বর্ডার সার্ভেইল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তবর্তী ৩৯৯ কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। স্পর্শকাতর ওই এলাকাজুড়ে বিজিবির নজরদারি নিশ্চিত করতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ‘বর্ডার সার্ভেইল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে থার্মাল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, রাডার, সেন্সরযুক্ত বিভিন্ন যন্ত্র ও সমন্বিত যোগাযোগ নেটওয়ার্ক।

বর্ডার সার্ভেইল্যান্স এর পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্গম সীমান্তে ‘রেসপন্স টিম’ পৌঁছানোর লক্ষ্যে যেকোন ধরণের স্থল সীমান্তে চলাচল উপযোগী ‘অল টেরেইন ভেহিকেল’ এবং দুর্গম জল/নৌ সীমান্তে জন্য হাইস্পীড বোট সরবরাহ করা হবে।

সোমবার সকাল ৯টায় দিকে বেনাপোলের পুটখালী সীমান্তে ‘বর্ডার সার্ভেইল্যান্স অ্যান্ড রেসপন্স সিস্টেম’ ও মাদক অস্ত্র নারী শিশু পাচাররোধে পুটখালি বিওপিতে স্থাপিত ওয়াচ টাওয়ার-আধুনিক সার্কিট ক্যামেরা হাউজ পরিদর্শন শেষে তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি জানান, ‘বর্ডার সার্ভেইল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ এর মাধ্যমে নেটওয়ার্কভুক্ত সীমান্তে সংশ্লিষ্ট ‘কমান্ড’ পর্যায় থেকে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট ইউনিট ছাড়াও কেন্দ্রীয়ভাবে সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম এর মাধ্যমে সীমান্তের নজরদারির লক্ষ্যে বিজিবি সদর দপ্তর, পিলখানায় সর্বাধুনিক ‘কমান্ড সেন্টার’ স্থাপন করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় মাদক, অস্ত্র, সবধরণের চোরাচালান ও সীমান্ত অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ সহায়ক হবে। মিয়ানমার ও বেনাপোলে সীমান্ত সড়ক নির্মান করা হবে। এছাড়াও দৌলতপুর সীমান্তে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সার্চ লাইটের আওতায় আনা হবে। সীমান্তে মাদক, অস্ত্র ও নারী শিশু পাচারসহ চোরাচালান রোধে বিজিবি সব ধরনের ব্যাবস্থা গ্রহন করবে বলে জানান বিজিবি পরিচালক।

বিজিবি মহাপরিচালক জানান, চিহ্নিত স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ ৩৯৯ কিলোমিটার সীমান্ত আগামী ৩ বছরের মধ্যে সার্ভেইল্যান্স সিস্টেম এর আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তের ৭ কিলোমিটার স্পর্শকাতর সীমান্তে ‘বর্ডার সার্ভেইল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপনের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে।

বর্তমানে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ সীমান্তের ১০ কিলোমিটার এলাকায় এই সিস্টেম স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। আগামী বছর নাগাদ কক্সবাজার জেলার অধিকাংশ সীমান্ত এলাকা, নওগাঁর হাপানিয়া সীমান্ত, দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী চরাঞ্চলে ‘বর্ডার সার্ভেইল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হবে।

সীমান্তের চেকপোস্টগুলোতে নিরাপত্তা ও নজরদারি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বেনাপোল ও হিলি চেকপোস্ট বিজিবি’র সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সীমান্তের সকল চেকপোস্ট একইভাবে সিসিটিভি নেটওয়ার্কের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ও স্পর্শকাতর সীমান্ত এলাকায় ‘সার্ভেইল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপন সম্পন্ন হলে সীমান্ত অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে বলে জানান তিনি।

এর আগে তিনি আজ সকাল ৯টায় বেনাপোল চেকপোস্ট পরির্দশন করেন। এ সময় বিজিবি‘র মহাপরিচালককে বিএসএফের মহাপরিচালকের পক্ষে ৬৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার কর্ণেল রাবি ভূষণ ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটনও তাকে শুভেচ্ছা জানান।

এ ছাড়া তার সাথে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালিদ আল মামুন, খুলনা সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল তৌহিদুল ইসলাম, যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আরিফুল হক, খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে.কর্ণেল তারিকুল ইসলাম, আরআইবি এর কমান্ডিং অফিসার লে.কর্ণেল খবির উদ্দিনসহ বিজিবি‘র উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here