মেঘনার বুকে অন্য এক কক্সবাজার!

0
620

খবর৭১ঃ
চাঁদপুর জেলা শহরের প্রায় দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে পদ্মা ও মেঘনার মাঝে গত বছর জেগে উঠেছে চরটি। এর চারদিক পদ্মা ও মেঘনার জলবেষ্টিত। চরটি কারও কাছে মোহনার চর, কারও কাছে চাঁদপুরের সৈকত, আবার কারও কাছে ‘মিনি’ কক্সবাজার নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এখানে সকালে বা বিকেলে এসে সূর্যাস্ত দেখে ফিরছেন কেউ। আবার কেউ আসছেন এক-দুই ঘণ্টার জন্য।

বালুচরে পাতা বেঞ্চ, ওপরে রঙিন ছাতা। সামনে বিস্তীর্ণ জলরাশি। তবে এটি কোনো সৈকত নয়। এটি চাঁদপুরের পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থলে জেগে ওঠা চর। এখানে এখন ভ্রমণপ্রিয় মানুষের ভিড় বাড়ছে। পরিবার নিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ঘুরতে আসছেন এ চরে।

চাঁদপুর পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াস বলেন, স্থানীয়ভাবে এ বছর চরটিতে আটটি ছাতা ও বেঞ্চ বসানো হয়েছে। এ ছাড়া একটি শৌচাগার, একটি দোকান ও মসজিদ করা হয়েছে। জনপ্রতি আসা-যাওয়ার জন্য মাত্র ৫০ টাকায় ট্রলার বা নৌকার ব্যবস্থা রয়েছে।

সাব্বির আজম নামের এক পর্যটক বলেন, চাঁদপুরে এটি নতুন আবিষ্কার। এখানে পাশেই শহর। স্থানীয়ভাবে সব ব্যবস্থা থাকায় সহজেই এখানে আসা যায়। তা ছাড়া আসা-যাওয়া ট্রলার ভাড়াসহ অন্যান্য খরচ একেবারেই কম। বারবার আসা যাবে।

সম্প্রতি চরটিতে গিয়ে দেখা যায়, ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ও নৌকা নিয়ে একের পর এক নানা বয়সী নারী, পুরুষ ও শিশুরা আসছে চরে। সেখানে নেমে কেউ নদীর পানিতে ছোটাছুটি করছে, কেউ বালুচরে আড্ডা আর খেলাধুলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।

চরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলশিক্ষক মো. শাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে বেশ কয়েকবার এসেছি। এবার পরিবার নিয়ে এসেছি। চাকরি করে দূরে যাওয়ার তেমন সুযোগ হয় না। সরকারি বন্ধ পেলে এখানে ছুটে আসি।’

আইনজীবী বদরুল আলম বলেন, ‘আমরা যারা নদী ভ্রমণ বা ঘুরতে পছন্দ করি, তাদের আর অনেক টাকাপয়সা ও সময় ব্যয় করে কক্সবাজারে যাওয়া দরকার নেই। অল্প কিছু টাকা খরচ করে সেই আনন্দ এখানেই উপভোগ করা যাচ্ছে।’

পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে এসেছেন জেলা শহরের বাবুরহাট এলাকার ব্যবসায়ী আবু তাহের। তিনি বলেন, ‘আমাদের চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার মাঝখানে এত সুন্দর মনোরম পরিবেশে যে চর জেগেছে আগে জানতাম না। এখন তো এসে দেখি, এটি যেন দ্বিতীয় কক্সবাজার। এখানে সাগরের নোনা পানি আর বড় বড় ঢেউয়ের শব্দ নেই। তবে বাকি সবই যেন কক্সবাজারের মতো। পর্যটকদের জন্য সরকারি বা বেসরকারিভাবে পরিবহন, থাকা, খাওয়া, নিরাপত্তাসহ অন্যান্য ব্যবস্থা করলে আরও লোকজন এখানে ছুটে আসতেন।’

জানতে চাইলে পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এই চর চাঁদপুরবাসীর জন্য অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান। তবে বর্ষার সময় এটি ডুবে যায়। এটি নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। আগামী দিনে অবস্থা বুঝে সরকারি হোক আর বেসরকারিভাবে হোক, এটি আরও আকর্ষণীয় করার ব্যবস্থা করব।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here