মুশফিক-মিঠুনে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৩৯

0
325

খবর৭১ঃমুশফিকুর রহিম এবং মোহাম্মদ মিঠুনের বাড়তি দায়িত্বশীলতায় ২৩৯ রান তুলতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয়ে পড়ে যাওয়া বাংলাদেশ দলকে খেলায় ফেরান মুশফিক-মিঠুন। তাদের কল্যাণে আড়াইশ’র কাছাকাছি রান সংগ্রহ করতে সমর্থক হয় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৯ রান করেন মুশফিক। ৬০ রান করেন মিঠুন। পাকিস্তানের হয়ে ৯ ওভারে ১৯ রানে ৪ উইকেট নেন জুনায়েদ খান।

জুনায়েদ খানের চতুর্থ শিকার মাহমুদউল্লাহ

এশিয়া কাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ফিরেই দলের ত্রাতা জুনায়েদ খান। তার গতিতেই বিধ্বস্ত বাংলাদেশ দল। সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মিরাজ এবং মাহমুদউল্লাহর উইকেট তুলে নেন পাকিস্তানের এই পেসার। জুনায়েদ খানের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন রিয়াদ। তার আগে ৩১ বলে ২৫ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।

১ রানের আক্ষেপ মুশফিকের

এশিয়া কাপে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন মুশফিকুর রহিম। উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ার সেরা ১৪৪ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক।

বুধবার পাকিস্তানের বিপক্ষে আবুধাবিতে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেও অসাধারণ খেলেন মুশকিক। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার, ভালো খেলেও ১ রানের জন্য সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সপ্তম সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও ব্যর্থ হন মুশফিকুর রহিম। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেয়ার আগে ১১৬ বলে ৯টি চারের সাহায্যে ৯৯ রান সংগ্রহ করেন মুশফিক। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৯৯ রানে আউট হলেন তিনি।

এর আগে ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বুলাওয়ে ৯৮ রানে আউট হয়েছিলেন তিনি। সেবার মাত্র ২ রানের জন্য সেঞ্চুরি দেখা পাননি। এরপর ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে ৯০ রানে আউট হয়েছিলেন মুশফিক।

ওয়ানেডতে ১৯১ ম্যাচে ৬টি সেঞ্চুরি এবং ৩০টি ফিফটিতে ৫ হাজার ১২৫ রান করেছেন দেশের অন্যতম সেরা এ ব্যাটসম্যান। ওয়ানডে ক্রিকেটে দেশের হয়ে রান সংগ্রহের দিক থেকে মুশফিক তৃতীয়।

১৮৩ ম্যাচে ১১টি সেঞ্চুরি এবং ৪২টি ফিফটির সাহায্যে ৬ হাজার ৩০৭ রান নিয়ে সবার ওপরে আছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।

আর ১৯২ ম্যাচে ৭টি সেঞ্চুরি এবং ৩৯টি ফিফটিতে ৫ হাজার ৪৮২ রান নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আঙুলে চিড় ধরায় খেলতে পারেননি। অন্যদিকে হাতে চোট পেয়ে দেশে ফিরে এসেছেন তামিম ইকবাল।

পাকিস্তানের বিপক্ষে অঘোষিত সেমিফাইনাল ম্যাচে মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ দল। সেই অবস্থা থেকে দলকে উদ্ধার করেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। চতুর্থ উইকেটে মুশফিক-মিঠুনরা ১৪৪ রানের জুটি গড়েন।

এর আগে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষেও ব্যাটিং বিপর্যয়ে হাল ধরেছিলেন তারা। সেদিন ষষ্ঠ উইকেটে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১২৮ রানের পার্টনারশিপ গড়েন তারা।

মিঠুনের বিদায়ে জুটি ভাঙল

পাকিস্তানের বিপক্ষে ১২ রানে ৩ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। চতুর্থ উইকেটে তাদের গড়া ১৪৪ রানের জুটিতে খেলায় ফের বাংলাদেশ। দলের হয়ে কার্যকরী ব্যাটিং করেন মিঠুন। হাসান আলীর শিকার হওয়ার আগে ৮৪ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৬০ রান করে ফেরেন তিনি।

চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটির মালিক রাজিন সালেহ এবং হাবিবুল বাশার সুমন। ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ফতুল্লাহ স্টেডিয়ামে ১৭৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েছিলেন তারা।

ধোনি-মাহেলাকে ছাড়িয়ে মুশফিক

এশিয়া কাপে ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৫তম ম্যাচে ৭৩৪ রান সংগ্রহ করেছেন মুশফিকুর রহিম। এই রান করার মধ্য দিয়ে শ্রীংকান কিংবদন্তি ক্রিকেটার মাহেলা জয়াবর্ধনেকে ছাড়িয়ে যান মুশফিক। শুধু মাহেলাই নয়, মহেন্দ্র সিং ধোনিকেও ছাড়িয়ে গেছেন এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

এশিয়া কাপে ২৮ ম্যাচে মাহেলার সংগ্রহ ৬৭৪ রান। আর ২৩ ম্যাচে ধোনির সংগ্রহ ৬৫৪ রান।

এশিয়া কাপে ২৫ ম্যাচ খেলে ১২২০ রান নিয়ে সবার ওপরে আছেন শ্রীলংকান সাবেক কিংবদন্তি সনাথ জয়সুরিয়া। ২৪ ম্যাচে ১০৭৫ রান নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন কুমার সাঙ্গাকারা। আর ২৩ ম্যাচে ৯৭১ রান নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে আছেন শচীন টেন্ডুলকার।

মিঠুনের দ্বিতীয় ফিফটি

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন। একদিনের ক্রিকেটে নিজের অষ্টম ম্যাচে মিঠুনের এটা দ্বিতীয় ফিফটি। এশিয়া কাপেও দ্বিতীয় ফিফটি তার। এর আগে এশিয়া কাপের উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৬৩ রান করেছিলেন ২৭ বছর বয়সী এ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

মুশফিক-মিঠুনে প্রতিরোধ

পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যাওয়া দলকে খেলায় ফেরান তারা।

সৌম্য-মুমিনুল-লিটনকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে শুরুতে চাপে পড়ে বাংলাদেশ দল। মাত্র ৫ রানের সৌম্যর উইকেট হারিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ দল।

খেলায় ফেরার আগেই এরপর মুমিনুল হক ও লিটন দাসের উইকেট হারায়। মাত্র ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ দল।

১৬ বলে ৬ রান করে জুনায়েদ খানের বলে বোল্ড হন লিটন দাস। আর ৫ বলে ৪ রান করে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে বোল্ড হন মুমিনুল হক সৌরভ।

আবারও ব্যর্থ সৌম্য সরকার

এক বছর পর সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি সৌম্য সরকার। ওপেনিংয়ে বাজে পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। তার পরিবর্তে পাকিস্তানের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ পেয়ে শূন্য রানে ফেরেন সৌম্য।

দলীয় ৫ রানে জুনায়েদ খানের বলে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য। তার উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ দল।

টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন মাশরাফি

সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

আবুধাবিতে খেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এশিয়া কাপের আজকের ম্যাচটি অঘোষিত সেমিফাইনালে পরিণত হয়েছে।

দুই ম্যাচ জিতে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। অন্যদিকে দুই ম্যাচ হেরে বিদায় নিয়েছে আফগানিস্তান।

ফলে সুপার ফোরের দুটি ম্যাচের একটি করে জেতা বাংলাদেশ ও পাকিস্তান একই বিন্দুতে। দুদলের সামনেই অভিন্ন সরল সমীকরণ। জিতলে ফাইনাল, হারলে বিদায়।

তামিমের জায়গায় টানা তিন ম্যাচে সুযোগ দেয়া হয়েছিল তরুণ ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে। তিন ম্যাচেই ব্যর্থ তিনি। আরেক ওপেনার লিটন দাসও দিতে পারছেন না প্রত্যাশার প্রতিদান।

ধারাবাহিক ব্যর্থতায় আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে অলিখিত ‘সেমিফাইনালে’ ওপেনিংয়ে শান্তর পরিবর্তে খেলেন সৌম্য সরকার।

আর আঙুলে চিড় ধরায় সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে খেলার সুযোগ পান মুমিনুল হক সৌরভ। নাজমুল ইসলাম অপুর পরিবর্তে একাদশে ফিরেছেন অভিজ্ঞ পেস বোলার রুবেল হোসেন।

অন্যদিকে পাকিস্তান একটি পরিবর্তন এনেছে। পেস বোলার মোহাম্মদ আমিরের পরিবর্তে দলে সুযোগ পেয়েছেন জুনায়েদ খান।

বাংলাদেশের একাদশ: লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, ইমরুল কায়েস, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন ও মোস্তাফিজুর রহমান।

পাকিস্তান একাদশ: ইমাম উল হক, ফখর জামান, বাবর আজম, সরফরাজ আহমেদ, শোয়েব মালিক, আসিফ আলী, শাদাব খান, মোহাম্মদ নাওয়াজ, হাসান আলী, জুনায়েদ খান, ও শাহিন শাহ আফ্রিদি।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here