মিরসরাই বৌদ্ধ পরিষদের অভিষেক, গুণীজন ও রত্নগর্ভা মায়ের সংবর্ধনা

0
289

খবর৭১:রেদওয়ান জনি,চট্রগ্রাম প্রতিনিধি:মিরসরাই উপজেলা বৌদ্ধ পরিষদের অভিষেক, গুণীজন ও রত্নগর্ভা মায়ের সংবর্ধনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুক্রবার (৬ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলার হাইতকান্দি ইউনিয়নের দমদমা অভয়শরণ বৌদ্ধ বিহার মাঠে বিকেল তিনটায় ২য় পর্বের অনুষ্ঠানে মঙ্গলাচরণ করেন জ্ঞানলংকার ভিক্ষু ও ভদন্ত উপানন্দ ভিক্ষু। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহামন্ডল’র সভাপতি ভদন্ত জিনালংকার মহাথের। মিরসরাই উপজেলা বৌদ্ধ পরিষদের সভাপতি উত্তম কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে স্বাগত ভাষণ দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ব্যাংকার বিজয় বড়ুয়া, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ পুষ্পেন্দু বড়ুয়া, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব পুলক কান্তি বড়ুয়া, অন্ন কুমার বড়ুয়া, অভিষেক অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী নয়ন কান্তি বড়ুয়া। প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ তথা বিশ্ব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান রয়েছে। বিশেষ করে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রনীতি অনুসরণের মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সংবিধান সব ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের সমঅধিকার নিশ্চিত করেছে। অন্য ধর্মের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব পরিত্যাগ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উক্তি ধর্ম যার যার উৎসব সবার। তিনি বলেন, ধর্ম মানুষকে উন্নত করে, হিংসা-বিদ্বেষ দেশ ও জাতির ক্ষতি করে। আড়াই হাজার বছর পূর্বে সিদ্ধার্থ গৌতম তাঁর এ উপলব্ধি মানুষের মাঝে প্রচার করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন হিংসার মাধ্যমে হিংসাকে জয় করা যায় না। মৈত্রী দ্বারাই হিংসাকে জয় করতে হয়। শত্রুতাকে মিত্রতা দিয়ে, লোভকে ত্যাগ দিয়ে, ক্রোধকে মৈত্রী দিয়ে জয় করার শিক্ষা দিয়েছেন। মানবতাকে উদ্ধার এবং লালনের এমন শিক্ষা থেকে মানুষ যেদিন দূরে সরে যাবে, সেদিন থেকে পৃথিবী আবার অনাচারে পূর্ণ হয়ে উঠবে। বুদ্ধের শিক্ষা সব জীবের সুখ, শান্তি এবং বিশ্বভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সহায়ক। তাঁর সাধনা ও সুখ কামনা ছিল সব প্রাণীর জন্য।

এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন মিরসরাই উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইয়াসমিন শাহীন কাকলী, মিরসরাই সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মশিউর রহমান, উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল হুদা, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র ভিপি নিজাম উদ্দিন, মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌস হোসেন আরিফ, সাহেরখালী ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হায়দার চৌধুরী। মিরসরাই উপজেলা বৌদ্ধ পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট দীর্ঘতম বড়ুয়া ও সদস্য প্রকৌশলী বাবলু বড়ুয়ার যৌথ সঞ্চালনায় মূখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্যভাষা বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনবোধি মহাথের। বক্তব্য রাখেন প্রফেসর মিয়া খাঁন, উদযাপন পরিষদের আহবায়ক বরুণ চন্দ্র বড়ুয়া, প্রধান সমন্বয়কারী নয়ন কান্তি বড়ুয়া, সমন্বয়কারী ডা. পুজন বড়ুয়া ও সদস্য সচিব কৃষিবিদ পুস্পেন্দু বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ৩ জন রত্নগর্ভা মাকে সম্মাননা জানানো হয়। এছাড়া ব্যাংকার বোধিমিত্র বড়ুয়া ও ব্যাংকার প্রণয় কান্তি বড়ুয়ার যৌথ সঞ্চালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন বেতার ও টেলিভিশনের শিল্পীরা।
এর আগে সকাল ৯ টায় ১ম পর্বের অনুষ্ঠানে অষ্টপরিস্কারদান সহ সংঘদান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ভদন্ত শাসনপ্রিয় মহাস্থবির।

আশিবার্দক ছিলেন নিজামপুর বৌদ্ধ ভিক্ষু সমিতির সভাপতি ভদন্ত শ্রীমৎ প্রিয়ানন্দ মহাস্থবির, প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা’র সাধারণ সম্পাদক ভদন্ত এস লোকজিৎ স্থবির। প্রধান সদ্ধর্মদেশক ছিলেন রাঙ্গামাটির রাজবন বিহারের বিচিত্র ধর্মকথিক ভদন্ত মেত্তাবংশ স্থবির, ধর্মদেশনায় মায়ানী অমিতাভ বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত প্রিয়বংশ মহাস্থবির, নিজামপুর বৌদ্ধ ভিক্ষু সমিতির সহ-সম্পাদক ভদন্ত মেত্তানন্দ স্থবির, দমদমা শান্তি নিকেতন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত প্রজ্ঞাপ্রিয় ভিক্ষু, স্বাগত ভাষণ দেন অভিষেক অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের আহবায়ক বরুণ চন্দ্র বড়ুয়া, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন মিরসরাই উপজেলা বৌদ্ধ পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি দুলাল চন্দ্র বড়ুয়া, সহ-সভাপতি ভজন লাল বড়ুয়া, অধীর রঞ্জন বড়ুয়া, সঞ্জীব বড়ুয়া মুন্না।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here