মিথ্যা ও প্রতারণার রোল মডেল বাংলাদেশ: ফখরুল

0
303

খবর ৭১: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়ন নয় মিথ্যা ও প্রতারণার রোল মডেল। বর্তমান সরকার দেশের মানুষের সাথে মিথ্যা কথা বলে, প্রতারণা করে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অ্যাব আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও তার দলের নেতারা বলেন আমরা এখন মধ্যম আয়ের দেশে প্রবেশ করেছি। বিশ্বের কাছে আমরা এখন উন্নয়নের রোল মডেল। কিন্তু কিসের উন্নয়ন, কোথায় উন্নয়ন? জনগণের কথা বলার, ভোটের অধিকার নেই আর সকরার বলছে উন্নয়নের রোল মডেল। আসলে উন্নয়ন নয় বাংলাদেশ হচ্ছে মিথ্যা ও প্রতারণার রোল মডেল।

তিনি বলেন, দেশের সব অর্থিক খাত ধ্বংস হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো লুট হয়ে গেছে। এসব আমার কথা নয়, সিপিডি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকগুলো শেষ হয়ে গেছে, অর্থনীতিতে ধ্বস নেমেছে। আর সরকার বলে উন্নয়নেরর জোয়ার বইছে, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। আসলে এগুলো সবই জনগণের সাথে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।

সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, বর্তমান ভোটার বিহীন সরকারের অপশাসন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গণ বিস্ফোরণ ঘটাতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আর সে জন্য মানুষেরর কাছে যেতে হবে, তাদেরকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। কারণ এ সরকার গোটা দেশের সব শেষ করে দিয়েছে।
খালেদা জিয়াকে নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। একটি মানুষ আছেন যাকে কেন্দ্র করে মানুষ এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পায়। আন্দোলন ও ভোটের অধিকার ফিরে পেতে প্রেরণা পায়।
বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিও পালন করতে দেয়না মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যেখানেই প্রোগ্রাম করতে চাই সেখানে বাধা দেয়া হয়। কোথাও জড় হলে বলে এখানে সভা সমাবেশ করা যাবে না, কারণ কি এখানে নাকি নাশকতা হবে। সরকার ও প্রশাসনের কথায় মনে হয় তারা সবাই জ্যোতিষ, আচার্য।

তিনি বলেন, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশালে, রাজশাহীতে আমাদের ১ ঘণ্টা আগে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে। খুলনা, বরিশালে বলছে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না। যখন বলা হলো গোটা শহরে সমাবেশ হবে পারলে গুলি করেন তখন তারা সরে যায়। আসলে যেখানে প্রতিরোধ সেখানে সরে যায়। মনে রাখতে হবে প্রতিরোধের কোন বিকল্প নেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকার সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। এমনকি মানুষের সব শেষ আশ্রয় বিচারালয় ও তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আমাদের এখন বলতে বাধা নেই নিম্ন আদালতের বিচারকরা অপেক্ষায় থাকে কখন উপরের মহল থেকে নির্দেশ আসবে তখন রায় ঘোষণা করবে। উচ্চ আদলতের ওপর একটা আস্থা ছিলো, কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলায় জামিনের বিষয়ে তারাও সরকারের নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে জামিন স্থগিত করল। এটি সম্পূর্ণ নজির বিহীন।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সব বিরোধী দল একমত হয়েছে বর্তমান সরকারেরে অধীনে সুষ্ঠু হবে না। তখন বেগম খালেদা জিয়ার ডাকে সাড়া দিয়ে কোনো দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাহলে আজ কেন আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারছি না? আমাদের সবাইকে আবার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মানুষের গণতান্ত্রিক, নাগরিক ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে যে অরাজক উপরিস্থ তার জন্য ভোটার বিহীন সরকার ব্যবস্থা দায়ী। আর সে জন্য আমরা বার বার বলছি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু সে ব্যবস্থা এখনও করার কোনো প্রক্রিয়া আমরা দেখছি না।
বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাসের বিষয়ে তিনি বলেন, মিথ্য মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রাখা হয়েছে। নজিরবিহীন ভাবে তার জামিন আটকে রাখা হয়েছে। তার জামিনও বিলম্বিত করছে। আমাদের দেশে আইনে আছে ৫ বছরেরে কম সাজা হলে উচ্চ আদালত তাকে জামিন দিতে পারে। কিন্তু খালেদা জিয়ার বেলায় তা করা হয়নি। উদ্দেশ্য তার কারাবাস দীর্ঘায়িত করা।
তিনি বলেন, যখন বিচারপতি খাইরুল হক সংবিধান কাটা ছেড়া করে একটি বিতর্কিত রায় দিয়েছে তখনই দেশে সংকট তৈরি হয়েছে। কারণ ওই রায়ের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে ভোটার বিহীন নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকার পথ সুগম করে দিয়েছে।
ফখরুল বলেন, আবারও একদলীয় শাসন ফিরিয়ে আনার মূল হোতা বিচারপতি খাইরুল হক। তারপরে যারা এসেছেন তারা সবাই এটাকে আবার বহাল করতে কাজ করছেন। এটা একটি ষড়যন্ত্র একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার।

প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও আমারদেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, ড্যাব মহাসচিব এ জেড় এম জাহিদ হোসেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here