মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত

0
276

খবর৭১ঃ আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর রক্তাক্ত আঘাত সরকার প্রধানের ক্রুদ্ধ প্রতিশোধের বহিঃপ্রকাশ মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণভাবে পরিষ্কার- মাহমুদুর রহমানের ওপর নৃশংস আঘাত সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত।’

মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলার ঘটনার মাধ্যমে কলাম লেখক এবং বুদ্ধিজীবীদের জীবনকে সংকটাপন্ন করার বার্তা দেয়া হলো বলে মন্তব্য করেছেন।

বুধবার(২৫ জুলাই) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাহমুদুর রহমান বহুদিন ধরেই সরকারের টার্গেট মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘গত রবিবার তাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ সামগ্রিক সরকারি সন্ত্রাসের প্যারাডাইম শিফট। এই রক্তাক্ত ঘটনায় প্রতিবাদী কলাম লেখক, বুদ্ধিজীবীদের শুধু মামলা ও কারাভোগই নয়, তাদের জীবনকেও সংকটাপন্ন করার বার্তা দেয়া হলো। কুষ্টিয়ায় আদালত প্রাঙ্গণে তাকে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করার পৈশাচিক ঘটনা পূর্বপরিকল্পনার বাস্তবায়ন।’

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা বাহানা। মামলার তারিখ পড়লেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন- প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার এই বক্তব্য অমানবিক ও চরম প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ। গতকালও কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে রিপোর্ট করেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাই তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি। সরকারি-বেসরকারি এবং বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বলছেন, তিনি অসুস্থ। তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে শেখ হাসিনা সেটাকে নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারেন?’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘বেগম জিয়ার অসুস্থতাকে নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্য বিবেকবর্জিত ও বিনা চিকিৎসায় তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের জীবনকে সংকটাপন্ন করে দিতে চান। যেহেতু বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার মামলাগুলো চলমান। সুতরাং এই মামলাগুলোকে প্রভাবিত করতেই বেগম জিয়াকে নিয়ে শেখ হাসিনা বিভিন্ন ফোরামে বক্তব্য দিচ্ছেন।’

আবারও বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান রিজভী।

তিন সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও মন্ত্রী পদমর্যাদার নেতারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিন সিটি নির্বাচনে। সড়ক-মহাসড়ক দখল করে নির্বাচনী সভা-সমাবেশ করছেন তারা। বড় পিকআপ ভ্যানে বিশাল কালার মনিটর লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রচারণা চালাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনে এসব অভিযোগ দেয়ার পরেও তারা সরকারের মুখ চেয়েই কাজ করছে।’

বর্তমানে ইলেকশন-গেট কেলেঙ্কারির মূল হোতা আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনগুলোকে অন্যায়ভাবে সরকারের অনুকুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি বারবার উপেক্ষা করছে কমিশন। এই নির্বাচন কমিশনের কাছে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা অরন্য রোদন, গল্পকথা মাত্র।’

বিএনপির এই মুখপাত্র অভিযোগ করেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর আইনজীবী সমর্থকরা করপোরেশনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় মিছিল ও শোভাযাত্রা করছে। এই মিছিলে পাবলিক প্রসিকিউটর, অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর এবং স্পেশাল পিপিগণ অংশগ্রহণ করেছেন, যা নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করার পরও তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করায় আমি দলের পক্ষ থেকে নিন্দা জানাচ্ছি, অবিলম্বে নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর আহবান জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও চলছে ব্যাপক অনিয়ম ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক। উক্ত দু’টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারি কর্মকর্তারাও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নৌকা মার্কার পক্ষে প্রকাশ্যে প্রচারণা চালাচ্ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here