মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিতে জিম্বাবুয়ের টার্গেট ৪৪৩ রান

0
206

খবর ৭১: ঢাকা টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখছেন মাহমুদউল্লাহ। টেস্টে ব্যাট হাতে নিজের বাজে ফর্মটাকে এক তুড়িতেই উড়িয়ে দিলেন তিনি। দেশের মাটিতে প্রথম আর নির্দিষ্ট করে বললে ২০১০ সালের পর টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি পেলেন বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত টেস্ট অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। তাঁর ১০১ রানের ইনিংসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনের প্রথম টেস্ট ফিফটি। দুইয়ে মিলে ঢাকা টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ২২৪ রান তুলে জিম্বাবুয়ের সামনে ৪৪৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।
মাহমুদউল্লাহর ইনিংসটি ১২২ বলে, ৪টা চার ও দুটি ছয়ে সাজানো। মিঠুন ৬৭ করেছেন ১১০ বলে। মেরেছেন চারটি চার ও একটি ছয়। এই দুইয়ের মধ্যে ১১৮ রানের জুটি এমন একটা সময় গড়ে উঠেছিল, যখন বাংলাদেশ বেশ বিপর্যয়ে। জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন না করিয়ে আজ চতুর্থ দিনের শুরুতেই নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু ইনিংসের শুরুতেই দ্রুত ফিরে যান টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটসম্যান। লিটন দাস, ইমরুল কায়েসের সঙ্গে ফেরেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল আর ডাবল সেঞ্চুরির মালিক মুশফিকুর রহিম। ২৬ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার যে শঙ্কাটা দেখা দিয়েছিল, সেটি দূর করেছেন মাহমুদউল্লাহ আর মিঠুন। জিম্বাবুয়ের বোলারদের ওপর পাল্টা চড়ে বসে এরা ধীরে ধীরে বাংলাদেশের লিডটাকে নিয়ে যান জিম্বাবুয়ের ধরাছোঁয়ার বাইরে।
মিথুন ফেরেন ১১০ বলে ৬৭ রান করে। সিকান্দার রাজার বলে চাকাভার হাতে ক্যাচ দিয়ে। ৪টি চার ও একটি ছয় আছে তাঁর ইনিংসে। মিথুনের বিদায়ের পর উইকেটে এসে আরিফুল হক অবশ্য খুব বেশি সময় টিকে থাকতে পারেননি। ৫ রান করে শন উইলিয়ামসের বলে বোল্ড হয়েছেন তিনি। মেহেদী মিরাজ ৩৪ বলে ২৭ করে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে।
জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করানো হবে কি না, এ নিয়ে সমর্থকদের ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছিল বাংলাদেশ দল। তবে দলীয় সূত্রে কালই জানা গিয়েছিল, বাংলাদেশ দল ব্যাটিং করার পক্ষে। সকালে ব্যাটিংয়ে নামার পর শঙ্কাটা ছিল ভালোই।
সকালের সেশনে পঞ্চম ওভারের প্রথম বল থেকে মড়কের শুরু। কাইল জার্ভিসের করা অফস্টাম্পের বেশ বাইরের বল অযথাই তুলে মেরে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চলে মাভুতার তালুবন্দী হন ইমরুল (৩)। ঠিক এর এক বল পর জার্ভিসের দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড হন লিটন (৬)। পরের ওভারে তিরিপানোর চতুর্থ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মুমিনুল। মোহাম্মদ মিঠুনকে সঙ্গে নিয়ে এই ধ্বংসস্তুপ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি আগের ইনিংসে ডাবল সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া মুশফিকুর রহিম। মিঠুনের সঙ্গে ১৫ রানের জুটি গড়েই ধৈর্যহারা হন তিনি। তিরিপানোর করা অফস্টাম্পের বাইরের বল অযথাই পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন মুশফিক (৭)। লিটনকে বোল্ড করেন জার্ভিস। এই জার্ভিসের বলেই মাভুতার হাতে ক্যাচ দেন ইমরুল।
মুমিনুল তিরিপানোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন চাকাভাকে। মুশফিকও আউট হন তিরিপানোর বলে মাভুতার ক্যাচ হয়ে।
কাল জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস ৩০৪ রানে গুটিয়ে যাওয়ার সঙ্গে শেষ হয়েছিল তৃতীয় দিনের খেলা। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেকে তখনো ২১৮ রানে পিছিয়ে থাকায় ফলোঅনে পড়েছিল সফরকারি দল। জিম্বাবুয়েকে ফলোঅন করাবে কি না—এই প্রশ্ন ঘিরে কাল থেকেই শুরু হয়েছিল জল্পনা-কল্পনা ও নানা সমীকরণ মেলানো। বাংলাদেশ দল কালই সিদ্ধান্তটা জানিয়ে দেয়নি। কারণ, চতুর্থ দিনে উইকেট দেখে সিদ্ধান্ত নিতে চেয়েছে দল।
তৃতীয় দিনের উইকেট দেখে বাংলাদেশ একটু অবাকই হয়েছে। যতটা ভাঙার কথা ছিল, যতটা টার্ন পাওয়ার কথা ছিল, তেমন কিছুই দেখা যায়নি। বরং বল সুন্দর ব্যাটে এসেছে। আজ চতুর্থ দিন সকালে তাই উইকেট দেখে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। দলীয় সূত্রে কালই জানা গিয়েছিল, জিম্বাবুয়েকে অন্তত ৪০০ রানের লক্ষ্য দিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করতে চায় তাঁরা। এক-দেড় সেশনে ব্যাটিং করে যদি উইকেট ভাঙে, সেটি কাজে লাগাতে চায় দল। চতুর্থ ইনিংসে অন্তত ১৩০ ওভার বোলিংয়ের সুযোগ পেলে জিম্বাবুয়েকে অলআউট করা কঠিন হবে না বলেই বিশ্বাস বাংলাদেশের।
জিম্বাবুয়েকে অলআউট করতে আজকের বাকি সময় মিলিয়ে মোট চার সেশন হাতে পাচ্ছে বাংলাদেশ। ৪৪৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামা জিম্বাবুয়েকে গুটিয়ে ফেলতে এই সময়টা তো যথেষ্টই হওয়া উচিত।

বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, মুমিনুল হক, মোহাম্মদ মিঠুন, খালেদ আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, আরিফুল হক এবং তাইজুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: হ্যামিলটন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চারি, ব্রেন্ডন টেইলর, শন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, রেগিস চাকাভা, ব্রেন্ডন মাভুতা, ডোনাল্ড তিরিপানো, কাইল জারভিস এবং তেন্দাই চাতারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here