খবর৭১:গত ৩০ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে কম দামে কেনাবেচা হয়েছে কোরবানির পশুর চামড়া। চামড়া ব্যবসায় এই ধস কয়েক বছর ধরে চলছে। গরুর দাম বেশি হওয়ার সত্ত্বেও চামড়ার ন্যায্য দাম পায়নি এসব ব্যবসায়ীরা। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের দাবি, চামড়া থেকে চামড়াজাত পণ্যের দাম বেশি অথচ একটা চামড়া দিয়ে অনেকগুলো পণ্য তৈরি করা হয়।
তবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর পেছনে মূলত দায়ি যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ। বাংলাদেশের প্রধান চামড়া রফতানি বাজার চীন থেকে অর্ডার কমে যাওয়া ও কাঁচা চামড়ার দাম ব্যাপকভাবে পড়ে যাওয়ায় বাণিজ্যের সব শাখা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি পণ্য হচ্ছে চামড়া খাত। ২০১৭-১৮ সময়কালে মোট ৩৬.৭ বিলিয়ন ডলারের রফতানিতে চামড়া খাতের অবদান ছিল ১.০৮ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশের কাঁচার সবচেয়ে বড় সংগ্রহ হয় কোরবানি ঈদে। কিন্তু কোরবানির ঈদে ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে কাঙ্খিত সাড়া না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা। আড়তদারদের দাবি, গত কয়েক বছরে কাঁচা চামড়ার দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। সব মিলিয়ে সারাদেশে চামড়া শিল্পে ধসের আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
পাইকাররা বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম কমে গেছে। এছাড়া সাভারে সুষ্ঠু ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রতিষ্ঠা করতে বিলম্ব হওয়ার কারণে অনেক রফতানি অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শওকত উল্লাহ বলেন, গত তিন মাসে চীনে রফতানি প্রায় শূন্যে নেমে গেছে। তারা আগে অর্ডার দেয়া সামগ্রীও নিতে চাচ্ছে না।
তিনি বলেন, চীনে এখন কেবল ক্রাস্ট চামড়া (প্রক্রিয়াকৃত কাঁচা চামড়া) রফতানি করা যেতে পারে। বাংলাদেশ ২০১৭-১৮ সময়কালে চীনে ১৫০ মিলিয়ন বর্গফুট ক্রাস্ট চামড়া রফতানি করেছে। এটি মোট ক্রাস্ট চামড়া রফতানির ৫০ ভাগের বেশি।
তিনি বলেন, আমরা প্রতি বর্গফুট ক্রাস্ট চামড়া চীনে রফতানি করতাম ১০০ টাকা দরে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে তারা ৮০ টাকার বেশি দিতে চাচ্ছে না। এই দামে বিক্রি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
ট্যানার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহমেদ বলেন, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ ছাড়াও চামড়া পণ্যের দাম কমে গেছে বিকল্প আবিষ্কারের কারণে। এছাড়া ট্যানারি বন্ধ হয়ে যাওয়াও দাম পতনের অন্যতম কারণ। হাজারিবাগ থেকে সাভারে ট্যানারিগুলো নিয়ে যাওয়ায় প্রায় ২২৫টি ট্যানারি বন্ধ হয়ে গেছে।
খবর৭১/জি: