এস. এম. রাসেল, মাদারীপুর ॥
মাদারীপুর জেলার রাজৈরে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বরাদ্ধকৃত “জি,আর” বা খয়রাতি সাহায্যের চাল আতœসাতের অভিযোগ উঠেছে । উপজেলার ৩১টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে দুইটন করে চাল বরাদ্ধ থাকলেও প্রতিষ্ঠানগুলো পায়নি। তাও আবার চাল না দিয়ে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করে দিয়েছে এলাকার চিহ্ণিত ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। এ ঘটনা এলাকায় ফাঁস হয়ে গেলে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে উপজেলার সর্বত্ত্ব।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রাজৈর ২৭/৬/২০১৮ তারিখে ৫১.০১.৫৪৮০.০০০.৪১.০০১.১৫-২৭৫ নং স্বারকে রাজৈর উপজেলার ৩১টি মাদ্রাসা, মসজিদ ও এতিমখানার নামে খয়রাতির সাহায্যের দুই টন করে চাল উপ-বরাদ্ধ দেয়া হয়। এ উপ-বরাদ্ধকৃত চাল স্থানীয় সরকারী খাদ্য গুদাম হতে উত্তোলন করে দায়িত্বশীল কর্মকর্তার তদারকিতে মানবিক সহায়তা কর্মসূচী বাস্তবায়নের নির্দেশ অনুসরন করে যথানিয়মে বিতরন করার নির্দেশনা থাকলেও হয়েছে তার উল্টো। বিভিন্ন কুটকৌশল ও প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে ইচ্ছে মত দুই টন চালের পরিবর্তে এক টন চাল অথবা ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা প্রতিষ্ঠান কমিটির হাতে দিয়ে দায় সেরেছে । আর একাজটি করেছে সিন্ডিকেটের নির্দিষ্ট কয়েকজন সদস্য। তারা বলেছে এ টাকা না নিলে বরাদ্ধ বাতিল হয়ে যাবে। উপায়ায়ন্ত না দেখে সব হারানোর ভয়ে যা পেয়েছে তা-ই হাত পেতে নিয়েছে সুবিধাভোগি প্রতিষ্ঠান। সরকারের সহায়তাকে কুলসিত করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ফুলে ফেপে উঠেছে এচক্রের সদস্যরা।
সরেজমিনে এলাকায় গেলে রাজৈর পৌরসভার নয়াকান্দি দক্ষিন পাড়া হাজ্বীবাড়ী জামে মসজিদের সভাপতি সাহেদ আলী সাংবাদিকদের জানান, আমাদের মসজিদের জন্য জি আর চাল বাবদ ২০ হাজার টাকা পেয়েছি । ঘোষালকান্দি বাইতুল ফানাহ জামে মসজিদের সভাপতি এমারত শেখ জানান, তিনি তার মসজিদের জন্য ১৯ হাজার ৫ শত টাকা পেয়েছে। নয়াকান্দি ইসমাইল শেখের বাড়ী জামে মসজিদের সদস্য সম্রাট শেখ ২০ হাজার টাকা পেয়েছেন। খালিয়া দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসার মোহতামেম মাওঃ সিরাজুল ইসলাম জানান, ২টন বরাদ্ধ থাকলেও পেয়েছি একটন চাল। এছাড়া আরো অনেকেই এমন অভিযোগ করেছেন ।
উপজেলা খাদ্য অফিস সুত্র জানায়, ১৭/১৮ অর্থবছরে খয়রাতি সাহায্যের প্রতিটন চালের সরকার নিধারিত মুল্য ছিল প্রতি মেট্রিক টন ৩৯,১০১ টাকা।
এ ব্যাপারে টেকেরহাট ফুট গোডাউনের ওসিএলএসডি গাজী সালাউদ্দিন জানান, আমরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার ডিওর প্রেক্ষিতে চাল ডেলিভারী দেই।
এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এইচ এম মাহবুব হোসেন জানান, এব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহানা নাসরিন জানান, এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।