এস. এম. রাসেল, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
ঢাকায় পরিবহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে এনে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মাদারীপুরের দূরপাল্লার বাস চলাচলা বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। আজ শনিবার ভোর থেকেই অভ্যন্তরীণ রুটে পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের দাবী, ঢাকায় বিভিন্ন পরিবহন ভাংচুর করছে শিক্ষার্থীরা। এতে শ্রমিক ও মালিকদের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এই কারণে মাদারীপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া সকল ধরণের দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়ও এই ঘটনায় নৌপরিবহন মন্ত্রী ও শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানের সম্পৃক্ততা না থাকা সত্বেও তার পদত্যাগ দাবী করা হচ্ছে। যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। এরই প্রতিবাদে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ সময় নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের পারিবারিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ‘সার্বিক পরিবহন’ বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন বন্ধ থাকারও হুমকি দেন মালিক-শ্রমিকরা। কোন ঘোষণা ছাড়া দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ রাখায় দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা।
রাশেদ, রবিউল, সামিম, রতন, রহুল, ময়না নামে কয়েকজন যাত্রীদের দাবী, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের খামখেয়ালির রোষানলে পড়ে অবর্ণীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে ঢাকাসহ অন্য কোথাও যাতায়াত করা যাচ্ছে না। যদি আগে থেকেই জানানো হতো তাহলে হয়তো প্রয়জোনে আগেই ঢাকা চলে যাওয়া হতো, এখন অনেক কস্ট করে ঢাকা পৌছাতে হবে। সময়ও বেশী লাগবে।
নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে মাদারীপুর পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা জানান, সড়ক দূর্ঘটনা হয়েছে তার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা আছে। আর আমাদের মন্ত্রীকে দোষ দিচ্ছে। গাড়ী চালিয়েছে চালক, আমাদের মন্ত্রীতো গাড়ী চালায় নাই। যে অপরাধ করছে তার শাস্তি হবে। আর গাড়ী নিয়ে যে আমরা বের হবো সেই পরিস্থিতি নাই। ঢাকা শহরে ছাত্ররা আন্দোলন করছে, তারা গাড়ী পুড়াচ্ছে, ভাংচুর করছে। আমাদের নিরাপত্তা কে দিবে।
মাদারীপুর সার্বিক পরিবহন ম্যানেজার মোসলেউদ্দীন বলেন, আমাদের সার্বিক পরিবহন চলে শুধু ঢাকা-মাদারীপুর, তাই নিরাপত্তার কারণে আমাদের পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। আমাদের গাড়ীর সুরক্ষার জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমাদের গাড়ী চলবে।
এর আগে গত শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে শিক্ষার্থী ও বাস শ্রমিকদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এক আলোচনা সভার অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সভায় জেলার বাস মালিক- শ্রমিক নেতাকর্মী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা অংশ নেয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ, বাংলাদেশ শ্রমিক ইউনিয়ন, মাদারীপুর জেলার সাধারন সম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান হাওলাদার, বাস মালিক সমিতি সাধারন সম্পাদক মফিজুর রহমান হাওলাদারসহ শ্রমিক ও বাস মালিক সমিতির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।