মাদকবিরোধী অভিযানে দুরভিসন্ধি রয়েছে: মওদুদ

0
278

খবর ৭১ঃবিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, মাদকবিরোধী অভিযানে চলছে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের চেষ্টা চলছে। এর পেছনে সরকারের দুরভিসন্ধি রয়েছে। এই অভিযানে প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন তিনি।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘সাংবাদিক হত্যা-নির্যাতন বন্ধ এবং মাহমুদুর রহমান ও শওকত মাহমুদসহ সাংবাদিককের বিরুদ্ধে মামলা-সন্ত্রাসের প্রতিবাদ’ শীর্ষক যৌথভাবে সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (একাংশ)।

বিএফইউজের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, বিএফইউজের মহাসচিব এম আব্দুল্লাহ, সহসভাপতি আহমদ মতিউর রহমান, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি বাছির জামাল, ডিইউজের প্রচার সম্পাদক দেওয়ান মাসুদা সুলতানা প্রমুখ।

মওদুদ আহমদ বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে নির্যাতন নিপীড়ন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। কারণ এই সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই। এই সরকার একদলীয় এবং ভোটারবিহীন অবৈধ। এজন্যই সাংবাদিকদের ওপর বেশি নির্যাতন। কারণ তারা জনগণের মনের কথাগুলো লেখে এবং কিছুটা হলেও বলে। এসব নির্যাতন বন্ধ করতে হলে কঠিন আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমেই সভ্যতা ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।

খালেদা জিয়ার কারাবন্দি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি করেছে। উচ্চ আদালত জামিন দিলেও নিম্ন আদালত জামিন দিচ্ছে না। বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ সত্যিকারার্থে আর নেই। মাসদার হোসেন মামলার কার্যকারিতাও নেই।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে মওদুদ আহমদ বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন বিলম্বিত করতে পারেন। কিন্তু তিনি মুক্তি পাবেন। বিএনপির নেতৃত্ব দেবেন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে এবং বাংলাদেশে আগামী দিনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। কেননা, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল।

দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানে সরকারের দুরভিসন্ধি রয়েছে মন্তব্য করে সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, নয় বছরে বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশে মাদকের বিস্তার লাভ করেছে। মাদকের সঙ্গে সরকারের সবাই জড়িত। এই সরকারই মাদকের সুযোগ করে দিয়েছে। আজকে তরুণদের মাদকের মাধ্যমে চেতনা থেকে দূরে রেখেছে সরকার।

তিনি বলেন, সরকার এত দিন কোথায় ছিল? হঠাৎ করে কেনো মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করল? আসলে এর মাধ্যমে সরকার মানুষ হত্যার লাইসেন্স দিয়েছে। সংবিধানের কোথায় আছে যে বিচারবহির্ভূত মানুষ হত্যা করা যাবে? আসলে দেশে আইন নেই। এ জন্যই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চলছে। কারণ এই সরকার আইনের শাসনে, জনগণের মতামতকে বিশ্বাস করে না।

মওদুদ আহমদ বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এখন পর্যন্ত যারা ক্রসফায়ারে মারা গেছে তাদের ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মাদকের সঙ্গে জড়িত নয়। ৭৯ জনের যে তালিকা করা হয়েছিল তাদের তো কেউ ধরা পড়েনি। অন্যদিকে কক্সবাজারের বদিকে বিদেশ যেতে সহায়তা করা হলো!

‘বিএনপির মাদক ব্যবসায়ীদের খোঁজা হচ্ছে’ আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মওদুদ আহমদ বলেন, তাহলে এত দিন যাদের ধরলেন আর মারলেন তারা কি আওয়ামী লীগের লোক? আসলে আমরা যে আশঙ্কা করেছিলাম এই অভিযানের পেছনে দুরভিসন্ধি রয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা হচ্ছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মীর তালিকা করা হয়েছে। এসব অবিলম্বে বন্ধ করুন। প্রকৃতপক্ষে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের ধরুন।

বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে প্রত্যেক হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করতে হবে। সুপ্রিমকোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারক দিয়ে এই কমিটি করতে হবে।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here