মসজিদটি ছিল শান্ত নিস্তরঙ্গ নীরব

0
376

খবর৭১ঃএলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ার আগে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদটি ছিল শান্ত, নিস্তরঙ্গ ও নীরব।

শুক্রবার রমজান নামে এক মুসল্লি সাংবাদিকদের বলেন, নামাজের আগে যখন খুতবা শুরু হয়, তখন একটি পিনপতনের শব্দও শোনা যায়নি।

বেলা দেড়টার দিকে এলোপাতাড়ি গুলি শুরু হলে এ পর্যন্ত ৪৯ জন মুসল্লি নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, মসজিদের মূল কক্ষ থেকে গুলি শুরু হয়েছে। আমি ছিলাম পাশের কক্ষে। কাজেই কে গুলি করছেন, তা আমি দেখিনি। কিন্তু কিছু লোক ওই কক্ষ থেকে পালিয়ে আমাদের এদিকে আসতে শুরু করেন।

‘কিছু কিছু লোকের শরীরে আমি রক্ত দেখতে পেয়েছি। কেউ কেউ নিস্তেজ হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন।’

তখনই আমার কাছে মনে হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটছে।

এদিকে ক্রাইস্টচার্চের আল নূর মসজিদে প্রাণঘাতী হামলা চালাতে যখন গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠবাদী যুবকটি তখন লোকগান ও সামরিক সংগীত শুনছিলেন। এর পর একটি সরু গলিতে গাড়িটি পার্ক করে রেখে অস্ত্র নিয়ে মসজিদের দিকে এগিয়ে যান।

তার গাড়ি থেকে অন্তত ছয়টি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। হেঁটে হেঁটে তিনি মসজিদের সামনের দরজায় গিয়ে অবস্থান নিয়ে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। -খবর মেইল অনলাইনের।

এর পর তিনি মসজিদে ঢুকে পড়েন এবং সামনে যাকে পেয়েছেন, তাকেই গুলি করে হত্যা করেছেন। প্রথমে গুলি খাওয়ার পর এক ব্যক্তি হামাগুড়ি দিয়ে মসজিদ থেকে বের হতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু ফের ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।

মসজিদটিতে তিন শতাধিক মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন। শুক্রবার উপলক্ষে জুমার নামাজ পড়তে এদিন দুই শতাধিক উপস্থিত হয়েছিলেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে।

বন্দুক হামলাকারী মুসল্লিদের ভিড় লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করেন। কখনও কখনেও টার্গেট ধরে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

এ হত্যাকাণ্ডের পূর্বাভাস দিয়ে ৭৩ পাতার ইশতেহারে তিনি লিখেছেন- তিনি মুসলমান ও ধর্মত্যাগীদের ঘৃণা করেন। ধর্মত্যাগকারীদের তিনি রক্তের সঙ্গে প্রতারণাকারী হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, আমি ২০১১ সালে নরওয়ের অসলোতে ৭৭ জনকে হত্যাকারী অ্যান্ডারস ব্রেভিকসহ অন্যান্য বন্দুক হামলাকারীর কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছি।

‘ডায়লান রুফসহ আরও অনেকের লেখা আমি পড়েছি। তবে সত্যিকার অর্থে তিনি নাইট জাস্টিসিয়ার ব্রেভিকের কাছ থেকেই হামলার উৎসাহ পেয়েছেন।’

গণহত্যার বিস্তারিত পরিকল্পনায় তিনি বলেন, অধিকাংশই দেখেন যে আমাদের ভূখণ্ডকে কখনই অনুপ্রবেশকারীদের ভূখণ্ড হবে না। আমাদের মাতৃভূমি আমাদের এবং যতক্ষণ পর্যন্ত শেতাঙ্গরা জীবিত থাকবে, ততদিন তারা আমাদের ভূখণ্ড বিজয় করতে পারবে না। তারা কখনই আমাদের লোকদের জায়গা দখল করতে পারবেন না।

তিনি বলেন, সংজ্ঞায়িত করলে এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। কিন্তু দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে এটি একটি পক্ষপাতমূলক হামলা বলেই আমি মনে করি।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here