খবর ৭১ঃ আগামী মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মধ্য রাত থেকে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসির যুগ্ম-সচিব এসএম আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
পরিপত্র-৭ এ উল্লেখ করা হয়েছে, কোন ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজ ব্যাসার্ধের মধ্যে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষের কাউকে ক্যাম্প স্থাপন করতে দেয়া যাবে না। তবে এ নিষেধাজ্ঞা স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা অনুযায়ী রিটার্নিং কর্মকর্তার এখতিয়ার ক্ষুণ্ণ করবে না। এছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/নির্বাচনী এজেন্ট কর্তৃক যানবাহন ব্যবহার, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত কোন কর্মকর্তার নিরপেক্ষতা সম্পর্কে প্রার্থী কর্তৃক সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপিত হলে এবং তা সত্য হলে তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, রবিবার রাত ১২টা থেকে অ্যাম্বুলেন্স, ডাক বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশেনের ময়লাবাহী গাড়িগুলো ছাড়া অন্য সব যানবহন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর পণ্যবাহী ট্রাক বিশেষ করে শিপমেন্ট ২৫ তারিখ মধ্যরাত থেকে ২৬ তারিখ মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনার লঙ্ঘন হলে ৬ মাস থেকে ৭ বৎসর পর্যন্ত কারাদন্ডের বিধান রয়েছে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ভোট সুষ্ঠু করতে এই সিটির ৫৭টি ওয়ার্ডের জন্য ৩৪ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এক্সিকিটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ৫৭ জন, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ১৯ জন, প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া পুলিশ, র্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতেয়েন থাকবে। যাতে করে কোনো ধরনের বাজে পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়। আমাদের কমিশনের পক্ষ থেকে ৫৭ জন নির্বাচন পর্যাবেক্ষকসহ দেশি-বিদেশি আরও পর্যবেক্ষক থাকবে। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে আগামী ২৬ জুন। গত সোমবার (১৮ জুন) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার-প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন প্রার্থীরা।
গত ১৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণের কথা ছিল। হাইকোর্টের আদেশে প্রথমে ভোট আটকে যাওয়া। পরে আপিল বিভাগ সেটি প্রত্যাহার করে নেন। ভোটের নতুন তারিখ নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ছয়টি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন এবং ৫৭টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন, ১৯টি সংরক্ষিত আসনে ৮৪ জন নারী কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এতে ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬।
গাজীপুর নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারে ব্যয় করতে পারবেন ৩০ লাখ ও কাউন্সিলররা এলাকা ও ভোটারের পার্থক্য অনুসারে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করতে পারবেন। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মোট আয়তন ৩২৯ দশমিক ৫৩ বর্গ কিলোমিটার। ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড ও ১৯টি সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন ও নারী ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪২৫। ভোটকক্ষ ২ হাজার ৭৬১টি।