ভোট কেন্দ্রগুলো ছিল ভোটার শূন্য অলস সময় কাটান ভোট গ্রহনে নিয়োজিত সংশ্লিষ্টরা

0
461

মিজানুর রহমান মিলন সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
রবিবার (১০ মার্চ) প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভোট কেন্দ্রগুলো ছিল একেবাওে ভোটার শূন্য। ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে একেবারে কম। ভোট প্রদানে ভোটারদের এমন অনাগ্রহ দেখে স্বয়ং প্রার্থী এবং তাদের কর্মী, সমর্থকরাই অনেকটা হতাশ পড়ে পড়েন। আর এ অবস্থায় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইন-শৃংখলার কাজে নিয়োজিত পুলিশ, আনসার সদস্যরা অলস সময় পার করেন। গতকাল সকাল থেকে বিকেলে পর্যন্ত নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার অনেকগুলো ভোট কেন্দ্র সরেজমিনে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সৈয়দপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কিছু সময় পর পর ১/২জন করে ভোটার এসে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। এ ভোট কেন্দ্রে পশ্চিম অংশে সৈয়দপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট গ্রহন করা হয়। এ কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা দুই হাজার ৬৫৫জন। দুপুর সোয়া ১২ টা পর্যন্ত কেন্দ্রের ৬ টি বুথে একটি করে ব্যালট পেপারের বই চলছিল। কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি কলেজের প্রভাষক মো. এরশাদ হোসেন মন্ডল জানান প্রতিটি বুথে ১৫/২০ টি পর্যন্ত ভোট পড়েছে। ওই কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বেড়িয়ে আসছিলেন সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ লায়ন মো. রেয়াজুল আলম রাজু। তিনি জানান, আগে ভোট কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে সময় লাগতো। আর আজ পাঁচ মিনিটেই ভোট দিয়ে বের হলাম।
এ সময় এ কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন নীলফামারী – ৪ (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) আসনের সংসদ আলহাজ্ব মো. আদেলুর রহমান আদেল। এ সময় তিনি ওই কেন্দ্রের নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে সার্বিক খোঁজখবর নেন। সৈয়দপুর পৌরসভার কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে বেলা পৌণে ১টায় গেলে মাত্র ১৫ পার্সেন্ট ভোট পড়েছে বলে জানান প্রিজাইডিং অফিসার বদরুল করিম।
বেলা সোয়া ১টায় উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের বাঙ্গালীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় প্রিসাইডিং অফিসার মো. জাকিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান ,ওই সময় পর্যন্ত কেন্দ্রের ৯ টি বুথে পাঁচশতের ওপরে ভোট পড়েছে। যদিও ওই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা তিন হাজার ৫১৯। এ কেন্দ্রে রিকশাভ্যানে করে ভোট দিতে এসেছেন এলাকার বৃদ্ধ মজিবুর রহমান (৬৫)। ছেলে আবু সাঈদের সহযোগিতায় তাকে ভোট দিতে দেখা যায়।
বেলা ১টা ২৫ মিনিটে একই ইউনিয়নের চৌমুহনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। আর এরই ফাঁকে নির্বাচনে পোলিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা অনেকেই দুুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। ভোটার নেই তাই কেন্দ্রের আইন-শৃংখলার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার ভিডিপি সদস্যরাও অনেকটাই অলস সময় পার করছিলেন। এ সময় এক আনসার সদস্যকে বেঞ্চের ওপর পা তুলে বসে মাথায় হাত দিয়ে ঝিমিচ্ছিলেন।
বিকেলে শহরের গোলাহাট রেলওয়ে কলোনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে কথা হয় সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. আজমল হোসেনের সঙ্গে। তিনি তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ভোট কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের তুলনামূলক কম উপস্থিতি দেখে চরম হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, ভোটারদের উপস্থিতি দেখে আর কেন্দ্রে ভেতরে ঢোকার ইচ্ছেই হচ্ছে না। কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আইন-শৃংখলার দায়িত্বে নিয়োজিত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য জানান, এমন কম ভোটার উপস্থিতি হবে ধারণাও করেনি। তবে উপস্থিতি যাক হোক আমরা অন্ততঃ শান্তিতে দায়িত্ব পালন করছি। কেননা কেন্দ্রে নেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন কিংবা কোন হুঁড়োহুড়ি।
প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে সৈয়দপুর উপজেলায় মোট ৭৮টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন করা হয়। এর মধ্যে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৪৩ ছিল টি এবং পৌর এলাকায় ছিল ৩৫টি ভোট কেন্দ্র। এবারে এ নির্বাচনে উপজেলায় চেয়ারম্যান , পুরুষ ভাইস্ চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস্ চেয়ারম্যান পদে মোট ১০জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, পুরুষ ভাইস্ চেয়ারম্যান পদে ৪জন এবং নারী ভাইস্ চেয়ারম্যান ৩ জন প্রার্থী ছিল। চেয়ারম্যান পদেও প্রার্থীরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের মো. মোখছেদুল মোমিন, জাপা(এ) আলহাজ্ব মো. জয়নাল আবেদীন ও ওয়ার্কার্স পার্টিও মো. রুহুল আলম মাষ্টার। পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মো. আজমল হোসেন, মো.সুরত আলী বাবু,মো. মনোয়ার হোসেন মন্টু ও মো. জাহাঙ্গীর সরকার। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন মোছা. সানজিদা বেগম লাকী, রওনক জাহান রিনু ও মোছা. হাসিনা বেগম।
খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here