ভেনিজুয়েলায় গৃহযুদ্ধের হুঁশিয়ারি মাদুরোর

0
598

খবর ৭১ঃ ইউরোপিয় ইউনিয়নের বেঁধে দেয়া আলটিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তিনি বলেছেন, চাপের ভয়ে তিনি গর্তে পালাবেন না। পাশাপাশি তিনি একটি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেন নি। বলেছেন, তার ওপর যেভাবে পদত্যাগের জন্য চাপ আসছে তাতে একটি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা রয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে হুঁশিয়ার করে দেন। বলেন, যদি তিনি ভেনিজুয়েলা সঙ্কটে হস্তক্ষেপ করেন তাহলে তাকে রক্তের দাগ নিয়ে হোয়াইট হাউস ছাড়তে হবে। রোববার নিকোলাস মাদুরো স্প্যানিস টেলিভিশন সেক্সটা এবং সালভাদোস’কে সাক্ষাতকার দেন। এতে তাকে প্রশ্ন করা হয়, ভেনিজুয়েলা সঙ্কটের ফলে কি একটি গৃহযুদ্ধ হতে পারে? জবাবে মাদুরো বলেন, এখন কেউই নিশ্চিত করে এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন না।

উত্তরাঞ্চলের সা¤্রাজ্যবাদ ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের পাগলামো ও আগ্রাসী মনোভাবের মাত্রার ওপর নির্ভর করছে সবকিছু। আমরা চাই না কেউই আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাক। আমাদের দেশকে প্রতিরক্ষা দিতে আমরা প্রস্তুত।

ওদিকে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন সিবিএস’কে বলেছেন, এখনো ভেনিজুয়েলায় সামরিক শক্তি ব্যবহার তাদের ‘অপশনের’ মধ্যে রয়েছে। এক্ষেত্রে ট্রাম্পকে সতর্ক করেছেন মাদুরো। তিনি তাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন ভিয়েতনাম যুদ্ধের কথা। বলেছেন, যদি ট্রাম্প ভেনিজুয়েলায় হস্তক্ষেপ করেন তাহলে আবার একটি ‘ভিয়েতনাম যুদ্ধের’ মধ্যে পড়বেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে আরো সতর্ক করে দিয়ে মাদুরো বলেন, স্টপ। স্টপ। ডনাল্ড ট্রাম্প। আপনি ভুল করছেন। এর ফলে আপনার হাত রক্তে রঞ্জিত হবে। আর সেই রক্তের দাগ নিয়ে আপনাকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে বিদায় নিতে হবে। তাই আসুন একজন আরেকজনকে সম্মান করি। নাকি আপনি লাতিন আমেরিকায় আরেকটি ভিয়েতনাম সৃষ্টিকেই বেছে নেবেন?

গত সপ্তাহে মাদুরোকে তার দেশে আগাম নির্বাচন দেয়ার জন্য আট দিনের সময় বেঁধে দেয় ইউরোপিয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ। এর শেষদিন ছিল রোববার। বলা হয়, ওই সময়সীমার মধ্যে যদি তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ আগাম নির্বাচন ঘোষণা না করেন তাহলে তারা স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হুয়ান গাইডোকে স্বীকৃতি দেবে। এ বিষয়ে রোববার ওই চ্যানেলটি মাদুরোর মুখোমুখি হয়। এ সময় তিনি বলেন, যারা তাকে বিদায় নিতে বলছেন তাদের চাপে তিনি গর্তে লুকাবেন না। তার ভাষায়, দেশে একটি চরম সংঘাতময় অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে তারা জোর করে আলটিমেটাম দিয়ে আমাদেরকে একপেশে করার চেষ্টা করছে।

ওদিকে ভেনিজুয়েলা সঙ্কটে বিশ্ব পুরোপুরি দুই ভাগে ভাগ হয়ে আছে। হুয়ান গাইডোকে সমর্থন করছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, লাতিন আমেরিকার কতগুলো দেশ ও বাইরের আরো কমপক্ষে ২০টি দেশ। আর মাদুরোকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ইরান সহ আরো কিছু দেশ। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলায় সামরিক অভিযান চালানোর সম্ভাব্যতার কথা বলেছে। তবে তাদেরকে হুঁশিয়ার করেছে রাশিয়া। তারা বলেছে, এমন অভিযান চালালে তাতে করুণ পরিণতি ডেকে আনবে। এমন অবস্থায় ক্ষমতা নিয়ে টানাটানি করছেন নিকোলাস মাদুরো ও হুয়ান গাইডো। রোববার গাইডো বলেছেন, ভেনিজুয়েলায় অর্থনৈতিক সঙ্কটে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সেখানে মারাত্মকভাবে প্রয়োজন মানবিক সহায়তা। এ জন্য তিনি ইউরোপিয় ইউনিয়নের কাছে তদ্বির করবেন। তিনি টুইটারে আরো বলেছেন, আমরা সঙ্কট মোকাবিলায় আমাদের শক্তি ব্যবহার করছি। গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতা অর্জনের জন্য চেষ্টা করছি। তার ভাষায়, ভেনিজুয়েলায় তিন লাখ মানুষ মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাদের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।

ওদিকে রোববারই গাইডোর সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এ সময় তিনি তাকে সাহস ও নেতৃত্ব প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। একটি নতুন নির্বাচনের গুরুত্বের কথাও বলেছেন তিনি।
একই দিন দেশের উত্তর-পূর্ব উপকূলে সেনাবাহিনীর এক কুচকাওয়াজে বক্তব্য রাখেন নিকোলাস মাদুরো। এ সময় তিনি বলেন, বিরোধীরা দেশকে বিদেশী সা¤্রাজ্য বানাতে চায়।
খবর ৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here