খবর৭১: রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় এক নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী চিকিৎসকদের শাস্তির দাবি করেছেন ভুক্তভোগী পবিবারটি।
বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এই দাবি জানান। এর আগে গত মঙ্গলবার স্কয়ার হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসেন ভুক্তভোগী পরিবারটির সাথে। এসময় স্বজনদেরকে ডেকে বিল মওকুফের প্রস্তাব দিয়েছিল স্কয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দেখে নেবার হুমকিও দেন তারা বলে জানা গেছে।
প্রসূতি তাসলিমা তারানুম নোভা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘স্কয়ার হাসপাতালের অবহেলার কারণে আমার সন্তান মারা গেছে। তারা নিজেরা বাঁচতে এখন বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালেরই ডাক্তার রাজ বলেছেন, আমার মেয়ের কোনো অসুখ ছিল না। আমরা টাকা নিয়ে কোনো কৃপণতা করিনি। আমি শুধু বলেছিলাম নরমালে হলে করেন না হলে সিজার করেন।
তিনি বলেন, আমি ডা. রেহনুমা জাহান, ডা. রাজিয়া ও ডা. রাফিফার দৃষ্টান্তমূলক সাজা চাই। যাতে বাংলাদেশের আর কোনো মাকে ডাক্তারদের এমন নিষ্ঠুরতার শিকার হতে না হয়।’
মৃত নবজাতকের বাবা শাহবুদ্দিন টিপু বলেন, ডা. রেহনুমা জাহান বলছেন আমাদের সিদ্ধান্ত দিতে দেরি হবার কারণে আমার স্ত্রীর সিজার করতে দেরি হয়েছে। কিন্তু ডাক্তার বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে কখনও ফোনে বা তাদের হাসপাতালের মাইকেও ডাকেনি। তারা নিজেদের বাঁচাতে এখন মিথ্যা কথা রটাচ্ছে। আমার সাথে আসা স্কয়ার হাসপাতালে আমারই কলিগের স্ত্রী বাচ্চা প্রসব করে বাড়ি নিয়ে চলে গেলেও আমি বাচ্চা নিয়ে কবর দিয়ে এসেছি। এর চেয়ে কষ্টের আর কি হতে পারে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব তিনি যেন বিষয়টি দেখেন।
শাহবুদ্দিন টিপু বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত তিন ডাক্তারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিলে আমরা আইনের সহায়তা নিব। গতকাল স্কয়ারের সাথে বসে আমরা মিডিয়ার সামনে তাদের দোষ স্বীকার করে দোষী তিন ডাক্তারকে হাসপাতালের সকল কাজ থেকে অব্যাহতি দিতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের কোন কথা শোনেনি। যখন সোমবার সকালে শুনেছি আমার মেয়েটি মারা গেছে তখন ওকে শেষ বারের জন্য দেখাতে আইসিইউ থেকে ওর মায়ের কাছে নিতে চেয়েছি। কিন্তু তারা তাতেও রাজি হয়নি। জানানো হয় সকল বিল পরিশোধ করে তারপর বাচ্চা আইসিইউ থেকে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি অ্যাকাউন্টসে গিয়ে বলি আমাকে ক্লিয়ারেন্স দেন আমার স্ত্রী তো আপনাদের এখানে আছে। আমি আমার মৃত বাচ্চাকে দাফন করে আসি। কিন্তু তারা রাজি হয়নি। কিন্তু হঠাৎ গতকাল ওহি নাজিল হয় হাসপাতালে। সন্ধ্যায় হাসপাতাল ছাড়ার সময় মার্কেটিং হেড ডা. ফয়সাল বলেন, আপনাদের যে আড়াই লাখ টাকা বিল হয়েছে তা লাগবে না। এ সময় আমার এক কলিগ ঘটনার ভিডিও ধারণ করছিলেন। তখন ডা. ফয়সাল বলেন, ভিডিও বন্ধ করতে বলেন, নইলে আমি দেখে নিবো। তার কথার জবাবে আমি বলি মৃত মেয়েকে যখন হাসপাতাল থেকে কবর দিয়ে এসেছি তখনই দুটো কবরের জায়গা প্রস্তুত রেখেছি। আমার দুইজনই মরতে প্রস্তুত তবে আপনাদের খারাপ কাজের প্রতিবাদ কখনও বন্ধ করব না।
খবর৭১/এস: