বড় দুর্নীতিবাজদেরও ধরছে দুদক: চেয়ারম্যান

0
299

খবর৭১: দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডে মামলার মধ্যে বড় দুর্নীতিবাজদেরকে ছাড় না দেয়ার কথা বলেছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। কোনো দল বা গোষ্ঠীর চাপে কোনো মামলা করা বা প্রত্যাহার হয়নি বলেও জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মিশনের (আইএমএফ) সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘কমিশন শুধু ছোট দুর্নীতিবাজদের ধরছে না, বরং বড় দুর্নীতিবাজদেরও ধরা হয়েছে। একইভাবে দুদক আরও বড় দুর্নীতিবাজদের ধরার চেষ্টাও চালাচ্ছে।’

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি। আরও একটি মামলার শুনানি শেষ । আরও তিনটি মামলা অভিযোগ গঠন পরযায়ে আছে।

বিএনপি অভিযোগ করে আসছে, সরকারি মদদেই এসব মামলা করা হয়েছে। তবে কোনো ধরনের চাপের কথা অস্বীকার করেছেন দুদক দেয়ারম্যান।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘কোনো দল কিংবা গোষ্ঠীর চাপে কমিশন এখনও পর্যন্ত কোন মামলা প্রত্যাহারও করেনি এবং ভবিষতেও কোনো মামলা প্রত্যাহার করা হবে না।’

ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতি রোধে দোষীদের বিরুদ্ধে কমিশন মামলা করেছে এবং বিগত দুই বছরে বেশ কিছু ব্যাংক কর্মকর্তাকে আইনের আওতায়ও এনেছে বলেও আইএমএফ প্রতিনিধি দলকে জানান দুদক চেয়ারম্যান।

অধিকাংশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন হয়েছে জানি ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে মনে হচ্ছে, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন শুরু হয়েছে।’

বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিয়ে দুদক চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। জবাবে ইকাবল মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমানে বিদ্যমান বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনে কর্মকর্তাদের পার্ফরমেন্স মূল্যায়নের কোনো সুযোগ নেই। তাই প্রতিটি কর্মকর্তার পার্ফরমেন্স মূল্যায়নের জন্য বার্ষিক কর্মসম্পাদন মূল্যায়ন পদ্ধতি কার্যকর করা সমীচীন।’

দেশের সরকারি ও বেসরকারি পর্যয়ের দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে দুদক পদ্ধতিগত সংস্কারের পরিকল্পনা করছে জানিয়ে সেটা সফল করতে দেশের সব নাগরিকের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে বলেও জানান দুদক চেয়ারম্যান।

এসময় আইএমএফ প্রতিনিধি দলের প্রধান দাইসাকু কিহারার সঙ্গে দুর্নীতি, সুশাসন ও আর্থিক খাতের বিভিন্ন সংস্কারমূলক কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হয় দুদক প্রধানের।

পদ্ধতিগত সংস্কার ছাড়া কোনো অবস্থাতেই সুশাসন নিশ্চিত করা যাবে না জানিয়ে দুদক প্রধান বলেন, ‘আমাদের সকলের মানসিকতার পরিবর্তন না হলে পদ্ধতিগত সংস্কার সম্ভব নয়। সুশাসন নিশ্চিত করা না গেলে দুর্নীতিও বন্ধ করা যাবে না।’

সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে কমিশন কখনও গড্ডালিক প্রবাহে গা ভাসাবে না বলে জানান দুদক চেয়ারম্যান।

বৈঠকে দেশের মানি লন্ডারিংয়ের বিরুদ্ধে দুদকের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ প্রতিনিধি দল। জবাবে দুদক চেয়ারম্যান জানান, ২০১৭ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা আটটি মানিলন্ডারিং মামলা বিচারিক আদালতে রায় হয়েছে। যেখানে প্রতিটি মামলায়ই আসামিদের সাজা হয়েছে।

তবে ২০১৫ সালে মানিলন্ডারিং আইনটি সংশোধনের ফলে বেসরকারি ব্যক্তিদের বিষয়ে দুদক কিছুটা প্রতিবন্ধকতায় রয়েছে বলে জানান দুদক প্রধান। বলেন, ‘ওই আইনের পরিবর্তনের ফলে দুদক শুধুমাত্র সরকারি কর্মকর্তাদের মানিলন্ডারিং বিষয়ে অনুসন্ধান বা তদন্ত করতে পারে।’

তবে বেসরকারি অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধের চেষ্টা করে যাচ্ছে বলেও জানান দুদক চেয়ারম্যান।
খবর৭১/জি:

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here