ব্যারিস্টার মইনুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ

0
283

খবর ৭১: রংপুরে করা মানহানির এক মামলায় সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন।

আজ বেলা একটার দিকে মইনুল হোসেনকে আদালতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে শুনানি হয়।

শুনানিতে মইনুল হোসেনের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনসহ অন্যরা বলেন, যে অভিযোগে মামলাটি হয়েছে, সেটি জামিনযোগ্য। আইন ও উচ্চ আদালতের বিধান অনুযায়ী, জামিনযোগ্য ধারার কোনো মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে আনা হলে, তিনি জামিন পেতে পারেন। তিনি জামিনের হকদার। তাঁরা আদালতে জামিনের জোর আবেদন জানান।

মইনুল হোসেনের জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য রাখেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান সরকারি কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু।

শুনানিতে আবদুল্লাহ আবু বলেন, মইনুল হোসেন এক নারী সাংবাদিককে অপমান করেছেন। তাঁকে চরিত্রহীন বলেছেন। এটা গর্হিত অপরাধ। যে ধারায় মামলা হয়েছে, তা জামিনযোগ্য হলেও জামিন দেওয়া না-দেওয়া আদালতের এখতিয়ার।

জামিনের তীব্র বিরোধিতা করে বাদীপক্ষের আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু বলেন, মইনুল হোসেন নারী সমাজকে অপমান করেছেন। দেশে তাঁর বিরুদ্ধে সেন্টিমেন্ট তৈরি হয়েছে।

শুনানি নিয়ে আদালত আদেশ দেন।

রংপুরে করা মানহানির এক মামলায় গতকাল সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর মইনুল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
টক শোতে নারীর প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে গতকাল রংপুর মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মিলি মায়া বেগম নামের এক নারী মানহানির মামলা করেন। ওই মামলায় বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন।

১৬ অক্টোবর মধ্যরাতে বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনের টক শোতে আলোচকদের একজন ছিলেন মাসুদা ভাট্টি। একপর্যায়ে লাইভে যুক্ত হন আইনজীবী মইনুল হোসেন। এ সময় মইনুলের কাছে মাসুদা ভাট্টির প্রশ্ন ছিল, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আলোচনা চলছে, আপনি সদ্য গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে এসে জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব করছেন কি না?’ মইনুল হোসেন এ প্রশ্নের জবাব দেওয়ার একপর্যায়ে মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন।

এমন মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এই বক্তব্য প্রত্যাহার করে মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্য ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তৃতা-বিবৃতি দেয় বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। গতকাল বিকেল ৪টায় গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মইনুল হোসেনের বক্তব্যের সমালোচনা করেন, তাঁর সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।

এরই মধ্যে গতকাল মাসুদা ভাট্টিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সভায় জামায়াতের প্রতিনিধি হিসেবে মইনুল হোসেন অংশ নেন—কোন তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি এ কথা বলেছেন, তার তথ্য-প্রমাণ জাতির সামনে তুলে ধরতে ওই নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম জুলফিকার আলী, যিনি বিএনপি সমর্থক আইনজীবী হিসেবে পরিচিত।

সারা দেশে এ পর্যন্ত মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে সাতটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ২১ অক্টোবর ঢাকায় মাসুদা ভাট্টি নিজে মানহানির একটি মামলা করেন। একই দিন জামালপুর, কুমিল্লা ও কুড়িগ্রামে আরও তিনটি মানহানির মামলা হয়। এ ছাড়া সোমবার ভোলা, রংপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনটি মামলা হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here