বেনাপোলে মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় পাষন্ড স্বামীর নির্যাতনে চোখ হারাতে বসেছে স্ত্রী

0
503

ইয়ানূর রহমান : বেনাপোলে মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় নায়েব আলী নামে এক পাষন্ড স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে স্ত্রী রোকেয়া বেগম(৪০)। সে বর্তমানে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

আহত রোকেয়া বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামের ওসমান গণির মেয়ে এবং নায়েব আলী নামে ওই পাষন্ড স্বামীর স্ত্রী।

কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছে, সময় মত ভালো চিকিৎসা না পাওয়ায় রোকেয়ার চোখ নষ্ঠ হতে বসেছে।

রবিবার দুপুরে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রোকেয়ার সাথে কথা হলে বেরিয়ে আসে মর্মান্তিক এই লোমহর্ষক কাহিনী।

জানাযায়, প্রায় দুই মাস পূর্বে বেনাপোলের সাদিপুর গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে নায়েব আলীকে ৫০ পিছ ইয়াবা সহ আটক করেন পোর্ট থানা পুলিশের এস আই মনির হোসেন। পরে তাকে মাদক আইনে মামলা দিয়ে যশোর আদালতে পাঠালে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।

প্রায় দুই মাস কারাভোগের পর গত এক সপ্তাহ পূর্বে জামিনে বাড়ি ফেরে নায়েব আলী। ২দিন অতিবাহিত হতে না হতে আবারো সে সর্ব্বনাষী মাদকের ব্যবসা করার চেষ্টা করে। পুজি যোগাঢ় করতে স্ত্রী রোকেয়া খাতুনকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসার কথা বলে। এ সময় রোকেয়া খাতুন মাদক ব্যবসার জন্য বাবার বাড়ি থেকে কোন টাকা আনতে পারবে না এবং মাদকের ব্যবসাও করতে দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাষন্ড স্বামী নায়েব আলী তার স্ত্রীর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে পাশে থাকা ইটের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয় রোকেয়ার শরীরের সকল অঙ্গপ্রতঙ্গ। অনেক চেষ্টা করে জীবন বাঁচানোর তাগিদে চিৎকার দেয় অসহায় গৃহবধু রোকেয়া। পরে প্রতিবেশিরা এসে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় নায়েব আলীর কাছ থেকে রোকেয়াকে উদ্ধার করে স্থানীয় মুজিদ ডাক্তারের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা করায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রবিবার সকালে তাকে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নাভারনে ভর্তি করেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

এদিকে অজ্ঞাত কারণে মাদক ব্যবসায়ীর পক্ষ নিয়ে ঘটনাকে ঢামা চাপা দেওয়ার জন্য গ্রাম্য সালিশের নামে টালবাহানা শুরু করে নায়েব গং সহ সাদীপুর গ্রামের বিশেষ প্রভাবশালী ব্যক্তি। অসহায় রোকেয়ার পিতৃকুল তাদের ভয়ে থানা পুলিশ করারও সাহসও পাচ্ছে না।

রোকেয়ার স্বজনরা জানান, ভয়ে তাকে ভালো চিকিৎসাও করাতে পারেনি। তাই বেনাপোলের হাতুড়ে ডাক্তার আঃ মজিদের স্বরনাপন্ন হই। প্রতিদিন আড়াই হাজার টাকার ঔষধ কিনলেও রোকেয়ার অবস্থা আরো আশঙ্কাজনক হয়ে পড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই লুকিয়ে এনে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তী করিয়েছি।

এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক মুরসালিন শুভ’র কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগেই ভাল চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। বাজে চিকিৎসার জন্য চোখটার সমস্যা হতে পারে। তিনি চোখের বিশেষজ্ঞের কাছে রোগী নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।

এ ব্যাপারে বেনাপোলের হাতুড়ে ডাক্তার আঃ মজিদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চোখের অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে একটি আই ড্রপ দিয়েছিলাম। তিনি অপর একটি প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমার চোখের চিকিৎসার উপরে কোন অভিজ্ঞতা নেই।

এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই মনির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন নায়েব আলী একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। কিছুদিন পূর্বেও সে ৫০ পিছ ইয়াবাসহ আটক হয়। তবে, জেল থেকে ফিরে তার স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা করেছে কি না জানা নেই।

খবর৭১/ইঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here