বেনাপোলে অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকদের চেক বিতরণ করলেন স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান তপন কান্তি চক্রবর্তী

0
328

শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল প্রতিনিধি : বেনাপোল স্থলবন্দরের জায়গা সঙ্কুলনের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ভারতীয় আইসিপি সংলগ্ন ২৪.৯৮ একর জমি অধিগ্রহনের মালিকদের চেক প্রদান করা হয়।

শনিবার বিকাল ৪ টার সময় বেনাপোল স্থল বন্দরের চেকপোষ্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ভবনে স্থলবন্দরের অডিটরিয়ামে এক আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে এ চেক হস্তান্তর করেন বাংলাদেশ স্থলবন্দরের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তী।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক(ট্রাফিক) প্রাদুস কান্তির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত অনুষ্ঠানে অধিগ্রহণকৃত ২৪.৯৮ একর জমির মূল্য বাবদ ২৮ জন মালিকের মধ্যে ১৫ জনকে ১০ কোটি টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের ল্যান্ডপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান(অতিরিক্ত সচিব) অনিল কুমার বাম্বা, যশোর জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল, বেনাপোল কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার জাকির হোসেন, শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুলক কমার মন্ডল, বেনাপোল বন্দরের খন্ডকালীন সদস্য সৈয়দ জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ স্থল বন্দরের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তী বলেন, দুই দেশের ব্যবসা বানিজ্য সম্প্রসারনের জন্য বেনাপোল বন্দরে প্রয়োজনের তুলনায় জায়গা অনেক কম। এখানে মাত্র ৩৮ হাজার মেট্রিক টন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন ওয়্যারহাউস রয়েছে। অথচ, এখানে প্রতিদিন ১ লক্ষ মেট্রিক টন পন্য উঠানামা হয়। পর্যায়ক্রমে আরো জমি অধিগ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।

ভারতের ল্যান্ডপোর্ট অথরিটির চেয়ারম্যান অনিল কুমার বাম্বা বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বন্ধুত্ব সম্পর্ক অনেক আগে থেকেই রয়েছে। যার কারনে আজ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা বানিজ্যও অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে। আমরা সব সময় এক দেশ অন্য দেশের সুযোগ সুবিধা দেখব এবং নৈতিকতার মধ্যে দিয়ে ব্যবসা বানিজ্যে এগিয়ে যাব বলে মতামত প্রকাশ করেন তিনি।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক প্রাদুস কান্তি বলেন বেনাপোল বন্দর থেকে সরকার প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে থাকে। স্থান সঙ্কুলান থাকায় এখানে প্রতিনিয়ত যানযট ও পণ্যজট লেগে থাকে। তাই এ বন্দরকে আরো গতিশীল করে গড়ে তোলার জন্য জায়গা সম্প্রসারিত করতে হবে। এজন্য, ইতিমধ্যে আমরা আরো প্রায় ২’শ একর জমি অধিগ্রহনের কাজ হাতে নিয়েছি। অতিদ্রুত তা অধিগ্রহন করে বেনাপোল বন্দরের যানজট ও পন্যজটের সমস্যার সমাধান করা হবে।
যশোর জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল বলেন, আমরা অত্যান্ত সততার সাথে বেনাপোল স্থল বন্দরের জমি অধিগ্রহন করেছি। এখানে স্বচ্ছতার জন্য কোন প্রকার মধ্যসত্ত্বভোগীদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। তাই আমরা যাদের জমি অধিগ্রহণ করেছি তাদের হাতেই সরাসরি অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে চেক বিতরন করতে পেরে আনন্দিত।

উল্লেখ্য, বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৩ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে প্রথম থেকেই ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল বন্দরে জায়গা সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে। বর্তমানে বেনাপোল বন্দরের ধারণ ক্ষমতা ৩৮ হাজার মে. টন। কিন্তু এখানে সব সময় আমদানি, রপ্তানি পণ্য থাকে প্রায় দেড় লাখ মে. টন। বন্দরে জায়গা সংকটে যেমন ব্যাহত হচ্ছিল বাণিজ্য তেমনি পণ্যজটের কারণে যানজটে প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়তে হয় পথচারীদের। ইতিমধ্যে অবকাঠামগত উন্নয়ন সমস্যায় এ বন্দর ছেড়েছেন অনেক ব্যবসায়ীরা। ফলে গত অর্থ বছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ১’শ ৮৩ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ে ঘাটতি হয়েছে। নতুন করে এ জায়গা অধিগ্রহণে এসব সমস্যার অনেকাংশে সমাধান হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খবর৭১/এসঃ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here