বেগম জিয়ার জামিন এই মুহূর্তে ‘জরুরি’ দেখছি না: হাইকোর্ট

0
322

খবর৭১ঃ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খালাস চেয়ে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ‘জরুরি অবস্থা না থাকায় এই মুহূর্তে বেগম জিয়ার জামিন দেয়া হবে না।’

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) এ মামলার শুনানিকালে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানিকালে আদালত এসব মন্তব্য করেন।

এ সময় আদালত আরও বলেছেন, ‘সাত বছরের সাজার মামলায় আমরা জামিন দিই না, তা না। যেহেতু অন্য একটি মামলায় (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায়) হাইকোর্ট সাজা বাড়িয়ে দিয়েছে। ওই মামলায় জামিন না হলে তিনি মুক্তি পাবেন না। ফলে বিষয়টি এই মুহূর্তে জরুরি দেখছি না।’

শুনানিতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল বলেন, ‘মাই লর্ড, আবেদনটি একটু শোনেন, না শুনলে আমরা হতাশ হব।’

তখন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘না, শুনতে পারব না। শুনলে আদেশ দিতে হবে। আগে নথি আসুক, তখন জামিনের আবেদনটি দেখব। এ মামলায় রেকর্ড না দেখে বেইল দিচ্ছি না।’

এ সময় জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘মাই লর্ড, উনি এ দেশের সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ। উনি খুবই অসুস্থ। শারীরিক সমস্যার কারণে চলাফেরা করতে পারছেন না।’

এ সময় খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন আদালতকে বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত জামিন শুনানি করেন।’

উত্তরে আদালত বলেন, ‘আমরা নথি না দেখে শুনানি করতে পারব না। আগে নথি আসুক।’

জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আপনি একটি সময় নির্ধারণ করে দেন। তা না হলে সরকারপক্ষ এখানে ইন্টারফেয়ার করবে।’

খোকন আরও বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন একটি স্বাধীন কমিশন। এখানে সরকারপক্ষ কোনো পক্ষপাতিত্ব করবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অ্যাটর্নি জেনারেল সাহেব এসে এখানে বসে আছেন।’

এ সময় আদালতে হৈচৈ শুরু হয়ে যায়।

এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে সকল মামলায় হাজির হই; এতে দোষের কিছু না। তা ছাড়া আমরা এ মামলার অংশীদার।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘আপনারা এভাবে বলবেন না। অ্যাটর্নি জেনারেল আসতেই পারে।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘এ মামলার নথি আসুক, তারপর জামিনের বিষয়টি দেখব। আমরা তিন মাস সময় দিয়ে দিচ্ছি। নথি পাঠানোর জন্য।’

জবাবে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘দুই সপ্তাহ সময় দেন। এর মধ্যে জামিনের শুনানির ব্যবস্থা করেন। অন্যথায় আমরা অন্য কোর্টে যাব।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘আমি আবেদনটি ফেরত দিয়ে দিচ্ছি।’

তখন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘বিজ্ঞ আদালত, আপনার প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে।’

তখন আদালত এ মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। এ ছাড়া এ মামলায় নিম্ন আদালতের দেয়া অর্থদণ্ডও স্থগিত করার আদেশ দেন। একই সঙ্গে নিম্ন আদালত থেকে এ মামলার নথি তলব করা হয়েছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে হাইকোর্টে মামলার নথি দাখিল করতে হবে।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন আবেদন করে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এ সময় আদালতে খালেদার পক্ষে আরো ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরোদ্দোজা বাদল, আমিনুল ইসলাম, কায়সার কামাল ও এ কে এম এহসানুর রহমান। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here